মুখ্যমন্ত্রী সোমবার বিধানসভায় জানান, ত্রিপুরা ও উত্তর প্রদেশ ডিএ দেয় না। ফাইল চিত্র।
মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) নিয়ে রাজ্য রাজনীতি উত্তপ্ত। কেন্দ্রীয় সরকারের হারে ডিএ-র দাবিতে চলছে অবস্থান বিক্ষোভ। সেই বিক্ষোভ মঞ্চে গিয়ে সোমবার সমর্থন জানিয়ে এসেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। আর তার পরেই বিধানসভায় এ নিয়ে মুখ খুললেন মমতা। টেনে আনলেন কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে রাজ্যের ছুটির ফারাকের প্রসঙ্গ। বললেন দুই সরকারের কর্মচারীদের বেতন কাঠামোর ফারাকের কথাও। একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘৯৯ শতাংশ ও ৬ শতাংশ মিলিয়ে রাজ্যে ১০৫ শতাংশ ডিএ দেওয়া হচ্ছে।’’
সোমবার বিধানসভায় প্রথমে ডিএ নিয়ে কথা বলেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘‘ডিএ নিয়ে অনেক কথা বলা হয়। তা নিয়ে কটাক্ষ করা হয়। মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে ঘোষণা হয়েছিল ডিএ। প্রস্তাব হয়নি। পঞ্চম পে কমিশনে যা বকেয়া রেখে গিয়েছিল তাও দিয়েছি। কোনও রাজ্যে পেনশন দেওয়া হয় না। আমাদের রাজ্যে দেওয়া হবে। সেটা কি বন্ধ করে দেওয়া হবে? এটাই কি চাইছেন বিরোধীরা?’’ এর পরে চন্দ্রিমা এমন দাবিও করেন যে, পেনশন না দিলে রাজ্যের ২০ হাজার কোটি টাকা বাঁচত।
প্রসঙ্গত, রাজ্য বাজেট পেশের দিন বক্তৃতা শেষের পরে মমতার চিরকুট হাতে পান চন্দ্রিমা। এর পরেই মার্চ মাসের বেতন থেকে ৩ শতাংশ হারে বর্ধিত ডিএ ঘোষণা করেন চন্দ্রিমা। সোমবারও মুখ্যমন্ত্রীর চিরকুট মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস চন্দ্রিমাকে দেওয়ার পরে তিনি ডিএ নিয়ে কথা বলেন। পরে মুখ্যমন্ত্রীও নিজের বক্তব্য জানান। তিনি বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের বেতন কাঠামো আলাদা রাজ্যের থেকে। আর কেন্দ্রের সরকার কত দিন ছুটি দেয়? আমরা দুর্গাপুজোয় দশ দিন ছুটি দিই। ছট পুজোয় ছুটি দিই।’’ মুখ্যমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে বাম আমলের প্রসঙ্গও টেনেছেন। বলেন, ‘‘সিপিএম আমলের ডিএ বাকি ছিল। ৩৪ বছরে পুরো ডিএ দেয়নি। ৯৯ শতাংশ ও ৬ শতাংশ মিলিয়ে আমরা ১০৫ শতাংশ ডিএ দিয়েছি।’’
মুখ্যমন্ত্রী সোমবার বিধানসভায় জানান, ত্রিপুরা ও উত্তর প্রদেশ ডিএ দেয় না। একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘টাকা আকাশ থেকে পড়বে না।’’ রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা আর কী কী সুবিধা পান তা উল্লেখ করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘দশ বছরে একবার সরকারি কর্মচারীদের শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, তাইল্যান্ড যাওয়ার সুযোগ দিয়েছি।’’
রাজ্যের আর্থিক অসুবিধার কথা জানাতে গিয়ে মমতা বলেন, ‘‘টাকা নেই। আবাসন, রাস্তা, ১০০ দিনের কাজের টাকা দিচ্ছে না। মুসলিম ছেলেমেয়েদের টাকা বন্ধ করে দিয়েছে।’’