Fire Incident At Dholahat

চার শিশু-সহ আট জনের মৃত্যু: পাথরপ্রতিমায় বাজি বিস্ফোরণে গ্রেফতার বণিকবাড়ির বড় ছেলে, বুধে হাজির করানো হবে কোর্টে

দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাথরপ্রতিমায় বাজি বিস্ফোরণের ঘটনায় বণিকবাড়ির বড় ছেলে চন্দ্রকান্ত বণিককে গ্রেফতার করল পুলিশ। বুধবারই চন্দ্রকান্তকে কাকদ্বীপ আদালতে হাজির করানো হবে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০২৫ ১১:০৪
চন্দ্রকান্ত বণিক।

চন্দ্রকান্ত বণিক। ছবি: সংগৃহীত।

দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাথরপ্রতিমায় বাজি বিস্ফোরণের ঘটনায় বণিকবাড়ির বড় ছেলে চন্দ্রকান্ত বণিককে গ্রেফতার করল পুলিশ। মঙ্গলবারই তাঁকে আটক করা হয়েছিল। বুধবার চন্দ্রকান্তকে কাকদ্বীপ আদালতে হাজির করানো হবে। তাঁর বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ।

Advertisement

সোমবার রাতে পাথরপ্রতিমার ঢোলাহাট থানা এলাকার দক্ষিণ রায়পুরের তৃতীয় ঘেরিতে চন্দ্রকান্তদের বাড়িতে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হয়। আগুন ধরে যায় বাড়িতে। তাতে চার শিশু-সহ পরিবারের আট সদস্যের মৃত্যু হয়েছে। মৃত চার শিশুর মধ্যে দু’জনের বয়স এক বছরেরও কম। বণিক পরিবারের বাজির ব্যবসা রয়েছে। বাড়িতে মজুত রাখা বাজি থেকেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। মর্মান্তিক ভাবে আট জনের মৃত্যুর পর থমথমে রয়েছে গোটা গ্রাম।

চন্দ্রকান্তদের পরিবারে মোট ১১ জন সদস্য ছিলেন। দুর্ঘটনার সময়ে দুই ভাই এবং তাঁদের মা বাড়িতে ছিলেন না। ওই তিন জন বাদে গোটা পরিবারই শেষ হয়ে গিয়েছে বিস্ফোরণে। মৃত্যু হয়েছে পরিবারের বাকি সকলের। চন্দ্রকান্ত এবং তুষারের বাবা অরবিন্দ বণিক (৬৫), ঠাকুরমা প্রভাবতী বণিক (৮০) , চন্দ্রকান্তের স্ত্রী সান্ত্বনা বণিক (২৮), দুই সন্তান অর্ণব বণিক (৯) ও অস্মিতা বণিক (৮ মাস) এবং তুষারের দুই সন্তান অনুষ্কা বণিক (৬) এবং অঙ্কিত বণিকের (৬ মাস) ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়। তুষারের স্ত্রী রূপা বণিককে আশঙ্কাজনক অবস্থায় কলকাতার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। পরে তাঁরও মৃত্যু হয়।

ঘটনার পরে বণিক পরিবারের দুই ভাই চন্দ্রকান্ত এবং তুষারের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করে ঢোলাহাট থানা। ঘরে বিপজ্জনক বস্তু মজুত রাখা, অনিচ্ছাকৃত খুনের ধারা-সহ মোট ছ’টি ধারায় মামলা রুজু করা হয়। বুধবার সকালে ঢোলাহাট থানার পুলিশই চন্দ্রকান্তকে গ্রেফতার করে।

স্থানীয় সূত্রে খবর, বড় ভাই চন্দ্রকান্তই মূলত ব্যবসার বেশির ভাগ কাজকর্মের দেখভাল করতেন। তাঁকে সাহায্য করতেন তুষার। প্রশাসন সূত্রে খবর, বণিক পরিবারের বাজি তৈরির অনুমোদনপত্র (লাইসেন্স) রয়েছে। পাথরপ্রতিমার বিধায়ক সমীর জানাও সে কথাই জানিয়েছেন। তবে গ্রামবাসীদের একাংশের অভিযোগ, অনুমোদনপত্র থাকলেও সেখানে অবৈধ বাজিও তৈরি হত।

গ্রামবাসীদের একাংশের অনুমান, ওই বাড়িতে বাজি প্যাকেটে ভরার সময়েই কোনও ভাবে বিস্ফোরণ ঘটে থাকতে পারে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অনুমান, বাসন্তীপুজোর সময়ে বিক্রির জন্য বাজি মজুত করা হচ্ছিল। মঙ্গলবার সকালে বাড়ির পাশে একটি ঘর থেকে বাজি তৈরির মশলা এবং অন্য সরঞ্জাম উদ্ধার হয়। বাড়ির কাছে একটি মাঠেও বাজির মশলা পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে। যদিও কী ভাবে এই দুর্ঘটনা ঘটল, তা নিয়ে পুলিশের তরফে এখনও পর্যন্ত কিছু জানানো হয়নি। ঘটনার তদন্ত চালাচ্ছেন ঢোলাহাট থানার পুলিশকর্মীরা। মঙ্গলবার ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরাও ঘটনাস্থলে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করেন।

Advertisement
আরও পড়ুন