(বাঁ দিকে) শুভেন্দু অধিকারী। চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
কেন্দ্রীয় বঞ্চনার আলোচনায় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী গিরিরাজ সিংহের লেখা চিঠি নিয়ে উত্তপ্ত হল পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা। মঙ্গলবার বিধানসভায় বাংলার প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের ‘বঞ্চনা’ নিয়ে আলোচনায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রীর একটি চিঠি দেখিয়ে দাবি করেন, রাজ্যের গ্রামোন্নয়ন ক্ষেত্রে কেন্দ্রের পাঠানোর অর্থের অপব্যবহার হয়েছে। যেখানে শাসকদলের তরফে ব্যাপক হারে দুর্নীতি হয়েছে। তেমনি স্বজনপোষণের মাধ্যমে সরকারি অর্থ খরচে বেনিয়ম হয়েছে। তাঁর আরও দাবি, দফতরভিত্তিক যে ১৭টি অভিযোগ কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রীর কাছে জানিয়েছিলেন, মন্ত্রীর পাঠানো চিঠিতে তাঁকে জানানো হয়েছে, দু’টি অভিযোগ ছাড়া তাঁর তোলা অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হয়েছে। এই বিষয়ে অধিবেশন কক্ষেই জোর তরজা হয় শুভেন্দু-চন্দ্রিমার।
পরে জবাবি ভাষণে অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা বলেন, “কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী আমাদের সংসদীয় দল যখন দেখা করতে গেল তাঁদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন না। আর পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতাকে চিঠি লিখে জানিয়েছেন যে বাংলার অর্থ আটকে দেওয়া হবে না। এ ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারের বঞ্চনার ভাব স্পষ্ট হয়েছে।” যদিও বিজেপি পরিষদীয় দলের দাবি, কী কী কারণে রাজ্যকে কেন্দ্রীয় গ্রাম উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ দেওয়া হচ্ছে না, তা বিস্তারিত ভাবে আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন সচিব শরীরেশ কুমার চিঠি লিখে রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীকে গত ফেব্রুয়ারি মাসেই সে বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়ে দিয়েছিলেন। সে ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার সেই চিঠির প্রাপ্তিস্বীকার করে তা জনসমক্ষে জানাচ্ছেন না কেন?
প্রসঙ্গত, চলতি বছর বাজেট অধিবেশনের সময় তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূলের ২৫ জন সাংসদ দিল্লির কৃষি ভবনে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যান। কিন্তু গিরিরাজের সঙ্গে দেখা হয়নি তৃণমূল সাংসদদের। আর তার পরেই বিরোধী দলনেতাকে লেখা গিরিরাজের চিঠিটি প্রকাশ্যে আসতেই পাল্টা আক্রমণ শানিয়েছে শাসকদল। তবে দমতে নারাজ বিজেপি। তাঁদের যুক্তি, বিভিন্ন প্রকল্পে খরচ করা অর্থের টাকা সঠিক হিসাব ও অডিট রিপোর্ট জমা দিলেই আটকে থাকা বকেয়া দিয়ে দেওয়া হবে বলে ইতিমধ্যেই রাজ্যকে জানিয়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু কেন্দ্রীয় টাকা নিয়ে দুর্নীতির ঘটনা ঘটায় কেন্দ্রের যাবতীয় প্রশ্নের উত্তর দিতে পারছে না রাজ্য। তাই আটকে রয়েছে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়নের অর্থ।