Nabanna

প্রকল্প রূপায়ণে ফাঁক সমন্বয়ে, দ্রুত বোজাতে বার্তা নবান্নের

দীর্ঘ প্রায় এক বছর ধরে অতি জরুরি বিভিন্ন প্রকল্পে কেন্দ্রীয় বরাদ্দ বন্ধ রয়েছে। রাজ্যের সঙ্কটজনক আর্থিক পরিস্থিতিতে সেটা প্রশাসনের উপরে বাড়তি আর্থিক চাপ তৈরি করছিল।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০২২ ১১:৪৩
নবান্ন।

নবান্ন। ফাইল চিত্র।

রাজ্যের তরফে ‘ভুল’ যে ছিল, তা কবুল করে শোধরানোর প্রমাণ দেওয়া হয়েছে। টাকা আটকে রাখার জন্য কেন্দ্রের দিকে আঙুল তোলার পাশাপাশি নবান্নের প্রশাসনিক সূত্রের খবর, টাকা সদ্ব্যবহারের ক্ষেত্রে রাজ্য স্তরেও সমন্বয়ে ফাঁকফোকরের অভাব ছিল না। দিল্লি থেকে টাকা আদায়ের জন্য বিস্তর কাঠখড় পোড়ানো হয়েছে। ভুল সংশোধন-সহ যাবতীয় পদক্ষেপ করা হয়েছে কেন্দ্রীয় সুপারিশ মেনে। অবশেষে দীর্ঘ কাল ধরে বরাদ্দ বন্ধ থাকা প্রকল্পে টাকা ছাড়ার কেন্দ্রীয় বার্তা পেয়ে প্রশাসনিক সমন্বয়ে আর কোনও ত্রুটি রাখতে চাইছে না নবান্ন।

সরকারি সূত্রের খবর, আগামী দিনে জেলাশাসক এবং বিভিন্ন দফতরের সমন্বয়ের উপরে জোর দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রশাসনের শীর্ষ মহল স্পষ্ট করে দিয়েছে, শুধু জেলাশাসকদের উপরে ‘দায়দায়িত্ব’ ছেড়ে দিলেই চলবে না, প্রকল্প বাস্তবায়নের দিকে পুরোপুরি খেয়াল রাখতে হবে দফতরের কর্তাদেরও।

Advertisement

দীর্ঘ প্রায় এক বছর ধরে অতি জরুরি বিভিন্ন প্রকল্পে কেন্দ্রীয় বরাদ্দ বন্ধ রয়েছে। রাজ্যের সঙ্কটজনক আর্থিক পরিস্থিতিতে সেটা প্রশাসনের উপরে বাড়তি আর্থিক চাপ তৈরি করছিল। রাজনৈতিক দড়ি টানাটানি যা-ই থাকুক, বরাদ্দ পেতে প্রশাসনিক স্তরে কেন্দ্রের সঙ্গে আলোচনার রাস্তা খোলাই রেখেছিল নবান্ন। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন দফতরের বার্তা এসেছে, শীঘ্রই একশো দিনের কাজ, প্রধানমন্ত্রী আবাস, সড়ক যোজনার টাকা ছাড়া শুরু হবে। পর্যবেক্ষকদের মতে, প্রশাসনিক স্তরে তাই দৃষ্টিভঙ্গি এবং মনোভাব সংশোধনেরও পথে হাঁটতে চাইছে প্রশাসনের শীর্ষ মহল।

কয়েক দিন আগে স্বচ্ছ ভারত মিশন নিয়ে জেলাশাসক এবং সংশ্লিষ্ট একাধিক দফতরের সঙ্গে বৈঠক করেন রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারা। নবান্ন সূত্রের খবর, সেই বৈঠকে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে, কোনও অবস্থাতেই প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজে গাফিলতি চলবে না। জেলাশাসকেরা সব দফতরের হয়ে সব প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্বে থাকেন। এই অবস্থায় কোথাও কোনও ত্রুটি-গাফিলতি থাকলে শুধু জেলাশাসকদের ঘাড়ে সেই দায় না-চাপিয়ে দায়িত্ব নিতে হবে দফতরের সচিবদেরও। আধিকারিক মহলের অনেকে মনে করছেন, দফতরের সঙ্গে জেলা স্তরের অফিসারদের সমন্বয়ে ফাঁক থাকলে প্রকল্প রূপায়ণে সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই দফতরের কর্তাদের দায়িত্ব হল, সেই সমন্বয় জোরদার করা এবং ত্রুটি মেরামতে জেলাশাসকদের সহযোগিতা করা।

প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের অনেকে জানাচ্ছেন, বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পে বরাদ্দ পেতে হলে এখন অনেক নিয়মবিধি মানতে হচ্ছে। সাধারণত সেই বিষয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে বার্তালাপ হয় বিভিন্ন দফতরের। সেই সব আলোচনার নির্যাস জেলা স্তরে পৌঁছে দেওয়া জরুরি। ফলে নিয়মিত নজরদারি এবং প্রকল্প বাস্তবায়নের সামনে কোনও বাধা থাকলে তা দূর করার ক্ষেত্রে বিভাগীয় কর্তাদের ভূমিকা অনেক। সেটাই এখন নিশ্চিত করতে চাইছে নবান্নের শীর্ষ মহল।

মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী আগেই কেন্দ্রকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছিলেন, কেন্দ্রীয় প্রকল্পের নাম বদলের ভুল শুধরে নেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে তার বিচ্যুতি হবে না। রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রীও একই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন কেন্দ্রকে। তার পরেই টাকা ছাড়ার কেন্দ্রীয় বার্তায় স্বস্তি ফিরেছে রাজ্য প্রশাসনে। তাই এত প্রস্তুতি।

আরও পড়ুন
Advertisement