Ranaghat Oil and Gas Reserves

রানাঘাটের মাটির তলায় জ্বালানির ভান্ডার, নিয়ম মেনে খনন শুরু করতে আগ্রহী কেন্দ্র

রানাঘাটে খনিজ জ্বালানির অস্তিত্বের কথা জানা গিয়েছিল চলতি বছরের এপ্রিল মাসে। তার পর থেকে আট মাসে এই সংক্রান্ত কাজ কতটা এগিয়েছে, লোকসভায় মন্ত্রীর কাছে তা জানতে চেয়েছিলেন বিজেপি সাংসদ।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০২৪ ২২:০০
রানাঘাটে খনিজ জ্বালানির অস্তিত্ব আবিষ্কার হয়েছে চলতি বছরের এপ্রিল মাসে।

রানাঘাটে খনিজ জ্বালানির অস্তিত্ব আবিষ্কার হয়েছে চলতি বছরের এপ্রিল মাসে। —ফাইল চিত্র।

রানাঘাটের মাটির নীচে জ্বালানির ভান্ডার রয়েছে। খনিজ তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাস কর্পোরেশন (ওএনজিসি) আগেই তা আবিষ্কার করেছে। রানাঘাটে সেই সংক্রান্ত অনুসন্ধানের কাজ শুরু করতে আগ্রহী কেন্দ্রীয় সরকার। এর জন্য পাইপলাইন বসানো থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় একাধিক পদক্ষেপ করা হচ্ছে। সংসদে রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকারের প্রশ্নের জবাবে বৃহস্পতিবার এমনটাই জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়ামমন্ত্রী হরদীপ সিংহ পুরী। তিনি জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত অনুসন্ধানের কাজ যতটা এগিয়েছে, তার উপর ভিত্তি করে উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রস্তুত করে ফেলেছে কেন্দ্র। পরিবেশগত এবং অন্যান্য ছাড়পত্র সংগ্রহের কাজ চলছে।

Advertisement

রানাঘাটে খনিজ জ্বালানির অস্তিত্বের কথা জানা গিয়েছিল চলতি বছরের এপ্রিল মাসে। তার পর থেকে আট মাসে এই সংক্রান্ত কাজ কতটা এগিয়েছে, কেন্দ্র কী কী পদক্ষেপ করেছে, লোকসভায় মন্ত্রীর কাছে তা জানতে চেয়েছিলেন বিজেপি সাংসদ। তিনি মোট চারটি প্রশ্ন করেছিলেন—

  • রানাঘাটে খনিজ জ্বালানির পরিমাণ কতটা? পশ্চিমবঙ্গের সার্বিক শক্তি উৎপাদনকে তা কতটা প্রভাবিত করতে পারে?
  • খনিজ জ্বালানির অনুসন্ধান এবং সেই সংক্রান্ত উন্নয়নের কাজ কতটা এগিয়েছে? বর্তমানে কী অবস্থা? কত দিনে রানাঘাটের ভান্ডার থেকে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করা সম্ভব?
  • বিধি মেনে রানাঘাটের উন্নয়ন নিশ্চিত করতে কী কী পদক্ষেপ করেছে কেন্দ্র?
  • রানাঘাট থেকে খনিজ উত্তোলনের জন্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো তৈরির কাজ (পাইপলাইন তৈরি, প্রক্রিয়াকরণগত সুবিধা) কতটা এগিয়েছে? কত দিনে সেই কাজ শেষ করা যাবে?

সাংসদের প্রশ্নের জবাবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জানিয়েছেন, ১৫ এপ্রিল রানাঘাটে খনিজ জ্বালানির অস্তিত্বের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। একে ‘আবিষ্কার’ হিসাবে উল্লেখ করা হয় ওই সময়েই। কিন্তু কতটা হাইড্রোকার্বন রানাঘাটের মাটির তলায় রয়েছে, তা এখনও পরিমাপ করা যায়নি। মূল্যায়নের জন্য ২০২৭ সালের ৯ মে পর্যন্ত সময় রয়েছে। জমির মূল্যায়ন পর্যায়ের পর সেখানে হাইড্রোকার্বনের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা হবে। এখনও পর্যন্ত অনুসন্ধান যত দূর এগিয়েছে, তার উপর ভিত্তি করে একটি উন্নয়ন পরিকল্পনা (ফিল্ড ডেভেলপমেন্ট প্ল্যান বা এফডিপি) প্রস্তুত করা হয়েছে। পাইপলাইন বসানো থেকে শুরু করে খনিজ উত্তোলনের জন্য পরিকাঠামোগত যা যা প্রয়োজন, তার বন্দোবস্ত করা হচ্ছে।

খনিজ তেল এবং গ্যাস সংক্রান্ত অনুসন্ধানের জন্য পরিবেশগত ছাড়পত্র প্রয়োজন। সেগুলি জোগাড় করার কাজ শুরু হয়েছে রানাঘাটের ক্ষেত্রেও, জানিয়েছেন মন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য, রানাঘাটে খনিজের উত্তোলন শুরু হলে পরিবেশের উপর তার কতটা প্রভাব পড়বে, সে বিষয়ে একটি সমীক্ষা হবে। এলাকার বাসিন্দাদের মতামতও নেওয়া হবে। প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র এবং সম্মতি পাওয়ার পরেই বিভিন্ন সংস্থা রানাঘাটে খনিজের অনুসন্ধানের কাজ শুরু করতে পারবে।

উল্লেখ্য, এর আগে জগন্নাথের প্রশ্নের উত্তরেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জানিয়েছিলেন, পশ্চিমবঙ্গের প্রায় ১০০ বর্গকিলোমিটার জমিতে খননের অনুমতি চেয়ে রাজ্য সরকারকে চিঠি দিয়েছে কেন্দ্র। উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগর ছাড়াও একাধিক জায়গায় খনিজ তেলের সন্ধান মিলেছে। কিন্তু রাজ্যের অনুমতি না-মেলায় খনন শুরু করা যায়নি। এ বার রানাঘাটে খনিজ জ্বালানির ভান্ডার আবিষ্কার এবং তার অগ্রগতির বিষয়েও তথ্য জানাল কেন্দ্র।

Advertisement
আরও পড়ুন