Recruitment Case

নিয়োগ মামলা: ‘সুপারিশকারী’ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের এ বার জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন, আদালতে জানাল সিবিআই

বিকাশ ভবনের অয়‍্যারহাউস থেকে পাওয়া ৩২১ জনের প্রার্থিতালিকা পার্থ এবং মানিকের মধ‍্যে বিনিময় হয়েছিল বলে দাবি। প্রার্থীদের ইতিমধ্যেই জেরা শুরু হয়েছে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০২৫ ১৫:৫৮
CBI wants to interrogate some allegedly influential political persons on recruitment case

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের মধ্যে যে তালিকা বিনিময় হয়েছিল, তাতে অনেক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের নাম রয়েছে বলে আদালতে জানিয়েছে সিবিআই। বিকাশ ভবনের অয়‍্যারহাউস থেকে পাওয়া ৩২১ জনের প্রার্থিতালিকা পার্থ এবং মানিকের মধ‍্যে বিনিময় হয়েছিল বলে দাবি। প্রার্থীদের ইতিমধ্যেই জেরা শুরু হয়েছে। কিন্তু ওই তালিকায় থাকা রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন বলে জানিয়েছে তদন্তকারী সংস্থাটি।

Advertisement

বুধবার সিবিআইয়ের আইনজীবী আদালতে দাবি করেছেন, পার্থের নেতৃত্বেই নিয়োগ দুর্নীতি হয়েছে। তিনিই ছিলেন মূল মাথা। তাঁর জামিনের বিরোধিতা করে এমনই দাবি করেছে সিবিআই। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, পার্থের তৎকালীন ওএসডি গোপন জবানবন্দি দিয়েছেন। দুর্নীতি হয়েছে পার্থের তত্ত্বাবধানেই। তাই এখন জামিন দেওয়া হলে তদন্ত ব্যাহত হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে তারা।

অন্য দিকে, পার্থের জামিনের আবেদন করে তাঁর আইনজীবী বিপ্লব গোস্বামী বলেন, ‘‘মোট ২ বছর ৮ মাস ধরে জেলে রয়েছেন পার্থ। প্রথমে ইডি, তার পর গত বছর পার্থকে গ্রেফতার করে সিবিআই। এর মধ‍্যে সিবিআই এক বার জেরা করেছে। অসহযোগিতার অভিযোগও করছেন না তদন্তকারীরা। পরবর্তী কালে জেলে গিয়ে জেরার আবেদনও করেনি সিবিআই।’’ পার্থের ৭৩ বছর বয়স। বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত। এ দিকটা বিবেচনা করেই পার্থকে জামিন দেওয়া উচিত বলে আদালতে জানিয়েছেন তাঁর আইনজীবী। বাকি অভিযুক্তের জামিন হলেও পার্থকে কেন জামিন দেওয়া হচ্ছে না, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তাঁর আইনজীবী। উল্লেখ্য, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিবিআইয়ের চার্জশিটে অভিযুক্তের সংখ‍্যা ১১ জন। ৮ জন ইতিমধ্যেই জামিন পেয়ে গিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, গত বছর জুন মাসে বিকাশ ভবনে তল্লাশি চালিয়েছিলেন সিবিআইয়ের গোয়েন্দারা। সেখান থেকে বেশ কিছু নথি তাঁরা উদ্ধার করেন। সিবিআই সূত্রের খবর, তার মধ্যে একটি নথিতে ৩২১ জন চাকরিপ্রার্থীর নাম এবং রোল নম্বর মিলেছে। তদন্তকারীদের অনুমান, বিভিন্ন ‘প্রভাবশালী’ ব্যক্তিই তাঁদের নাম সুপারিশ করেছিলেন। অনুমানের কারণ, নথিতে সেই সব ‘প্রভাবশালী’র নাম-পরিচয়ের উল্লেখ রয়েছে। সেই সূত্র ধরেই এ বার ওই তালিকায় থাকা রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে চাইছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটি। তাঁদের মধ্যে যেমন রয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর ভাই প্রাক্তন সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী, বিজেপি নেত্রী তথা প্রাক্তন আইপিএস অফিসার ভারতী ঘোষ, তেমনই রয়েছেন তৃণমূলের সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর এবং তৃণমূল বিধায়ক শওকত মোল্লাও। বিকাশ ভবনে তল্লাশি অভিযানে সিবিআই যে নথি উদ্ধার করেছিল, সেই নথিতে তাঁদের নাম-পরিচয়ের উল্লেখ রয়েছে (সেই নথি আনন্দবাজার অনলাইনের হেফাজতে রয়েছে)।

সিবিআই সূত্রের খবর, নথি খতিয়ে দেখেই তদন্তকারীদের একাংশের অনুমান, দিব্যেন্দু, ভারতী, মমতাবালা এবং শওকতেরা অনেক চাকরিপ্রার্থীর নামই সুপারিশ করেছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে। সেই সব চাকরিপ্রার্থীরও নাম রয়েছে সিবিআইয়ের নথিতে। তাঁদের মধ্যেই বেশ কয়েক জন চাকরি পেয়েছেন বলে ওই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে জানিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ।

Advertisement
আরও পড়ুন