Attack on ED in West Bengal

সন্দেশখালিতে ইডির উপর হামলা: পুলিশের এফআইআরে থাকলেও, খুনের চেষ্টার ধারা দিল না সিবিআই

গত ৫ জানুয়ারি সন্দেশখালি এবং বনগাঁয় তল্লাশি অভিযানে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের হাতে আক্রান্ত হয়েছিলেন ইডি আধিকারিকেরা। এর মধ্যে সন্দেশখালির ঘটনায় তিন জন ইডি আধিকারিককে হাসপাতালেও ভর্তি করাতে হয়।

Advertisement
সারমিন বেগম
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০২৪ ১৫:৫০

গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।

সন্দেশখালিতে ইডির উপর হামলার ঘটনায় রাজ্য পুলিশ খুনের চেষ্টার মামলা করলেও শাহজাহান বা অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সিবিআই ওই অভিযোগ আনল না। যা দেখে কিছুটা বিস্মিতই হয়েছে ইডি।

Advertisement

সন্দেশখালি এবং বনগাঁয় ইডির উপর হামলার ঘটনার মঙ্গলবার থেকে তদন্ত শুরু করেছে সিবিআই। এই দু’টি ঘটনায় মোট তিনটি এফআইআর দায়ের করেছে তারা। তবে সেই এফআইআরে কোথাও এ-কথা বলা নেই যে, সন্দেশখালিতে ইডির উপর প্রাণঘাতী হামলা হয়েছিল। যদিও রাজ্য পুলিশের অভিযোগ বলছে, ইডির অফিসারদের উপর শাহজাহান শেখের গ্রাম সরবেড়িয়ায় প্রাণঘাতী হামলাই হয়েছিল। এই মর্মে ন্যাজাট থানার পুলিশ তাদের এফআইআরেও পরে ৩০৭ ধারাটি যুক্ত করেছিল।

সিবিআইয়ের এফআইআরের ৩০৭ নেই শুনে তাই কিছুটা বিস্মিত ইডির এক কর্তা বুধবার এই খবর প্রকাশের পর আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘সিবিআইয়ের এফআইআরে ৩০৭ নেই!’’ এর পরেই তিনি বলেন, ‘‘সে দিন যা হয়েছিল, তাতে আমরা চেয়েছিলাম ওই হামলার ঘটনায় ৩০৭ ধারা যুক্ত করা হোক। কারণ, হামলা করা হয়েছিল ইডি কর্তাদের উপর এবং তাঁরা জখমও হয়েছিলেন।’’ সরাসরি কোনও মন্তব্য না করে ইডির ওই অফিসার বলেন, ‘‘আমরা এফআইআরটি দেখব। কী ধারা দেওয়া হয়েছে। তা-ও জানব।’’

প্রসঙ্গত, গত ৫ জানুয়ারি সন্দেশখালি এবং বনগাঁয় তল্লাশি অভিযানে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের হাতে আক্রান্ত হয়েছিলেন ইডি আধিকারিকেরা। এর মধ্যে সন্দেশখালির ঘটনায় তিন জন ইডি আধিকারিককে হাসপাতালেও ভর্তি করাতে হয়। মঙ্গলবার ওই ঘটনার দু’মাস পর এফআইআর দায়ের করল সিবিআই। সিবিআই সূত্রে খবর, এই তিনটি এফআইআরের একটি করা হয়েছে ইডিরই ডেপুটি ডিরেক্টর গৌরব ভারিলের আনা অভিযোগের ভিত্তিতে। এ ছাড়া একটি রাজ্য পুলিশের করা অভিযোগের ভিত্তিতে এবং একটি রেশন দুর্নীতি মামলার দায়িত্বপ্রাপ্ত তদন্তকারী অফিসারের অভিযোগের ভিত্তিতে। সন্দেশখালিতে শাহজাহানের গ্রাম সরবেড়িয়ায় যে ভাবে লাঠি, ইট, পাথর নিয়ে হামলা চালানো হয়েছিল ইডির উপর, তাতে গৌরব এবং ইডির আধিকারিকেরাও প্রশ্ন তুলেছিলেন, কেন এই ঘটনায় ৩০৭ ধারা যুক্ত করা হবে না? ইডির ওই অভিযোগের পর ন্যাজাট থানার পুলিশের অভিযোগে প্রথমে ৩০৭ ধারা বা হত্যার চেষ্টার ধারা যোগ না করা হলেও পরে তা যুক্ত করা হয়। অথচ মঙ্গলবার এ নিয়ে জারি করা সিবিআইয়ের এফআইআরে তা যোগ করা হয়নি।

সিবিআইয়ের ওই অভিযোগপত্রে দাঙ্গা, মারণাস্ত্র নিয়ে সশস্ত্র হামলা, সরকারে কাজে বাধা, সরকারি আধিকারিকদের উপর চড়াও হওয়া, সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করা, বেআইনি ভাবে জমায়েত-সহ ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৮৬, ৩৫৩, ৩২৩, ৪২৭, ৩৭৯, ৫০৬ এবং অন্যান্য ধারায় অভিযোগ করা হয়েছে। সন্দেশখালির ঘটনায় দু’টি এফআইআরে এই অভিযোগ দায়ের হয়েছে শাহজাহান এবং অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে। বনগাঁর ঘটনায় একটিই এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। সেখানেও মামলা করা হয়েছে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধেই।

ঘটনাচক্রে সন্দেশখালির ঘটনার ঠিক দু’মাস পর এই মামলায় যখন এফআইআর দায়ের করল কেন্দ্রীয় সংস্থা সিবিআই, ঠিক সেই দিনই রাজ্যে এসেছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বুধবার ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো উদ্বোধন এবং বারাসতের সভা করার জন্য মঙ্গলবার রাতে শহরে এসে পৌঁছন তিনি। মঙ্গলবারই সিবিআইও সন্দেশখালি এবং বনগাঁর ঘটনায় এফআইআর দায়ের করে।

আরও পড়ুন
Advertisement