Mahua Moitra

এ বার কৃষ্ণনগরে মহুয়া মৈত্রের দফতরে সিবিআই হানা! বাড়ি ঘিরে রয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী

স্থানীয় সূত্রে খবর, কৃষ্ণনগরের সিদ্ধেশ্বরীতলায় যেখানে মহুয়ার সাংসদ কার্যালয় রয়েছে, সেখানে গিয়েছেন সিবিআইয়ের পাঁচ সদস্যের একটি দল। বাড়ি ঘিরে রেখেছেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০২৪ ১৬:৩৬
CBI raids at TMC office in Krishnanagar belongs to suspended TMC MP Mahua Moitra

মহুয়া মৈত্র। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

এ বার নদিয়ার কৃষ্ণনগরে মহুয়া মৈত্রের দফতরে হানা দিল সিবিআই। স্থানীয় সূত্রে খবর, কৃষ্ণনগরের সিদ্ধেশ্বরীতলায় যেখানে মহুয়ার সাংসদ কার্যালয় রয়েছে, সেখানে গিয়েছেন সিবিআইয়ের পাঁচ সদস্যের একটি দল। বাড়ি ঘিরে রেখেছেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর ১০ জন জওয়ান। তল্লাশি চলছে গোটা বাড়িতে।

Advertisement

সূত্রের খবর, ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের সময় সিদ্ধেশ্বরীতলার এই বাড়ি থেকে প্রচার সংক্রান্ত সমস্ত কাজ করেছিলেন মহুয়া। শনিবার সেই বাড়িতেই হানা দিল সিবিআই। তবে এই বাড়িতে মহুয়া খুব একটা থাকেন না বলে জানা গিয়েছে। অধিকাংশ সময় তিনি থাকেন করিমপুরের বাড়িতে। সিদ্ধেশ্বরীতলার পর সিবিআই করিমপুরের বাড়িতে যাবে কি না, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। যদিও সিবিআইয়ের তরফে এখনও পর্যন্ত এ বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি।

কৃষ্ণনগরের ২২ নম্বর ওয়ার্ডে জনি মোদক নামের এক ব্যক্তির বাড়ি ভাড়া নিয়ে সাংসদ কার্যালয় তৈরি করেন মহুয়া। সাংসদ হওয়ার পর সেখান থেকেই প্রশাসনিক কাজকর্ম পরিচালনা করতেন। শনিবার সিবিআই আধিকারিকেরা যখন ওই বাড়িতে যান, তখন বাড়ির মালিক জনিই দরজা খুলে দেন। কৃষ্ণনগরে মহুয়ার সাংসদ কার্যালয়ে সিবিআই হানা প্রসঙ্গে কৃষ্ণনগর পুরসভার ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর সৌগতকৃষ্ণ দেব বলেন, “ভোটের আগে বিরোধীদের হেনস্থা করার জন্যই বিজেপি এ সব করাচ্ছে। কিন্তু এই সব করে মহুয়া মৈত্রকে রোখা যাবে না।”

স্থানীয় সূত্রে যায়, শনিবার সকালেই সিবিআইয়ের একটি দল আলিপুরে ‘রত্নাবলী’ নামের একটি আবাসনে গিয়েছেন। আরও জানা যাচ্ছে, সেখানে ন’তলার একটি ফ্ল্যাটে থাকেন মহুয়ার বাবা দীপেন্দ্রলাল মৈত্র।

‘টাকার বিনিময়ে প্রশ্ন’কাণ্ডে মহুয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে গত ১৯ মার্চ সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন লোকপাল। বরখাস্ত হওয়া তৃণমূল সাংসদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগকে ‘গুরুতর’ বলে বর্ণনা করা হয় লোকপালের নির্দেশিকায়। এর পর সিবিআইয়ের তরফে মহুয়ার বিরুদ্ধে একটি এফআইআর দায়ের হয়।

মহুয়ার বিরুদ্ধে প্রথম ওই অভিযোগ তুলেছিলেন বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। তিনি দাবি করেন, দুবাইয়ের শিল্পপতি দর্শন হীরানন্দানির কাছ থেকে টাকা নিয়ে সংসদে প্রশ্ন করেছেন মহুয়া। পরিকল্পনামাফিক সংসদে ‘নিশানা’ করেন শিল্পপতি গৌতম আদানিকে। অভিযোগ, সবটাই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে অস্বস্তিতে ফেলার জন্য। এই অভিযোগ জানিয়ে লোকসভার স্পিকারকে চিঠি দিয়ে মহুয়াকে সাংসদ পদ থেকে বরখাস্ত করার দাবি তোলেন বিজেপি সাংসদ। তার আগে মহুয়ার প্রাক্তন বান্ধব জয় অনন্ত দেহাদ্রাই-এর বিভিন্ন অভিযোগে সিবিআই তদন্তের দাবি জানানো হয়েছিল।

অন্য দিকে, মহুয়া প্রথম থেকেই এই অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছেন। যদিও শিল্পপতি হীরানন্দানি নিজে একটি হলফনামা দিয়ে জানান, মহুয়ার সংসদের লগ ইন আইডি জেনে তাতে প্রশ্ন টাইপ করতেন তিনি। কিন্তু ঘুষের অভিযোগ মানেননি। নিজের লগ ইন আইডি দেওয়ার কথা স্বীকার করলেও ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ স্রেফ উড়িয়ে দেন মহুয়াও। তিনি অভিযোগ করেন, তাঁর বক্তব্য না শুনেই লোকসভার এথিক্স কমিটি তাঁকে একতরফা ভাবে বহিষ্কারের সুপারিশ করেছে।

গত বছরের ৮ ডিসেম্বর সেই সিদ্ধান্ত লোকসভায় পাশ হয়ে যায়। এর পর তাঁর সাংসদ পদ খারিজের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন মহুয়া। সম্প্রতি সেই মামলায় শীর্ষ আদালতের এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে লোকসভার সচিবালয়। সুপ্রিম কোর্টের নোটিসের উত্তরে গত ১২ মার্চ লোকসভার সচিবালয় জানিয়েছে, সংবিধানের ১২২ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আইনসভার অভ্যন্তরীণ কর্মপদ্ধতিতে বিচার বিভাগ হস্তক্ষেপ করতে পারে না।

আরও পড়ুন
Advertisement