Recruitment Scam

তাপস সাহার আলমারি খুলল সিবিআই, নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে তৃণমূল বিধায়কের বাড়িতে অভিযান

কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের নিয়ে তাপসের বাড়িতে গিয়েছেন ১২ জন তদন্তকারী। তাপসের বাড়ির সমস্ত দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বাড়ি লাগোয়া কার্যালয়েও গিয়েছে সিবিআই দল। 

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
তেহট্ট শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২৩ ১৫:৫২
photo of Tapas Saha

বাড়িতে সিবিআই আধিকারিকদের সঙ্গে তাপস সাহা। নিজস্ব চিত্র।

নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে তৃণমূল বিধায়ক তাপস সাহার বাড়িতে হানা দিল সিবিআই। শুক্রবার বিকেলে নদিয়ার তেহট্টে তাপসের বাড়িতে পৌঁছন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকেরা। শুরু হয়েছে তাপসকে জিজ্ঞাসাবাদ। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গত ১৮ এপ্রিল তাপসের বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাই কোর্ট। এই নির্দেশের ৩ দিনের মধ্যেই তাঁর বাড়িতে হানা দিল সিবিআই।

গত শুক্রবারই নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে আরও এক তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার বাড়িতে হানা দিয়েছিল সিবিআই। এক সপ্তাহ পর সেই শুক্রবারই এ বার তাপসের বাড়িতে গেল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। গত সোমবার নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে মুর্শিদাবাদের বড়ঞার বিধায়ক জীবনকৃষ্ণকে।

Advertisement

শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩টে নাগাদ তাপসের বাড়িতে যায় সিবিআইয়ের দল। মোট ৫টি গাড়িতে করে আসেন তদন্তকারীরা। কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের নিয়ে তাপসের বাড়িতে গিয়েছেন ১২ জন তদন্তকারী। তাঁদের হাতে বেশ কিছু নথি রয়েছে। সিবিআইয়ের অভিযানের সময় বাড়ি লাগোয়া কার্যালয়ে ছিলেন তাপস। তৃণমূল বিধায়কের বাড়িতে ঢুকেই সদর দরজা তালাবন্ধ করে দেন তদন্তকারীরা। তালাবন্ধ করে দেওয়া হয় বিধায়কের কার্যালয়ও। তল্লাশিতে রয়েছেন ডিএসপি পদমর্যাদার এক আধিকারিক। তাপসের ২টি আলমারি খোলা হয়েছে। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে তাঁর ফোন। তাপসের বাড়ির সামনে ভিড় জমিয়েছেন কর্মী, সমর্থক এবং স্থানীয় বাসিন্দারা।

তদন্ত চলাকালীন তাপস সাহা বলেছেন, ‘‘আমার কাছে যা জানতে চাইবে আমি সব বলব। তদন্ত চলছে চলুক, তাতে আমার কোনও আপত্তি নেই। সব রকম সহযোগিতা করছি এবং করব।’’ তল্লাশি অভিযানে তাপসের সঙ্গে রয়েছেন তাঁর গাড়িচালক এবং নিরাপত্তারক্ষীও। তাঁর নিরাপত্তারক্ষী শ্রীকান্ত বিশ্বাসকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।

চাকরি দেওয়ার নাম করে তাপস প্রায় ১৬ কোটি টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এই নিয়ে তাপসের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে তিনটি চিঠিও পাঠিয়েছিলেন অভিযোগকারীরা। এর মধ্যে একটি চিঠি দেওয়া হয় পলাশিপাড়া বিধানসভা এলাকা থেকে। অন্য দু’টি যথাক্রমে পাঠানো হয় তেহট্ট এবং করিমপুর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে। সেই খবর প্রথম প্রকাশিত হয় আনন্দবাজার অনলাইনে।

সিবিআই তদন্তের নির্দেশের পর তাপস দাবি করেছিলেন, তিনি রাজনীতির শিকার। তাপস বলেছিলেন, ‘‘স্বাভাবিক এবং প্রত্যাশিত! আমাদের একটাই অপরাধ যে, আমরা তৃণমূল করি।’’ তাঁর আরও অভিযোগ, ‘‘আমার দলের দু’এক জন বিজেপির সঙ্গে যৌথ ভাবে চক্রান্ত করে এটা করেছে। আমি তদন্তে সব রকম সহযোগিতা করব। বিজেপির সঙ্গে স্থানীয় ২ নেতানেত্রী যুক্ত হয়ে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে এই নোংরামো করেছে।’’ তাপসের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন আইনের ৭ এবং ৭এ ধারায় মামলা রুজু করেছে সিবিআই। দায়ের করা হয়েছে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের অভিযোগও।

তাপসের গাড়িচালক মানব মণ্ডলকেও শুক্রবার জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন সিবিআই আধিকারিকরা। গাড়ি নিয়ে কোথায় কোথায় যেতেন, গাড়িতে করে কেউ আসতেন কি না, গাড়িতে করে কোনও কাগজপত্র নিয়ে আসা হয়েছে কি না, এই নিয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাপসের বাড়ির পরিচারিকা এবং রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করা এক কর্মীকেও ডেকে পাঠিয়েছেন তদন্তকারীরা।

আরও পড়ুন
Advertisement