জেলবন্দি এসপি সিন্হার বাড়িতে সিবিআই তল্লাশি, মিলল দেড় কেজি সোনা! ফাইল চিত্র।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তে স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)-এর প্রাক্তন উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ ওরফে এসপি সিন্হার বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে নগদ ৫০ লক্ষ টাকা, দেড় কিলোগ্রাম সোনা এবং নিয়োগ সংক্রান্ত অজস্র নথি উদ্ধার করল সিবিআই।
সিবিআই সূত্রের খবর, তল্লাশি চালিয়ে যে সমস্ত নথি পাওয়া গিয়েছে, তার একটিতে ১৫০০ চাকরিপ্রার্থীর নাম পাওয়া গিয়েছে। আর একটি নথিতে সম্পত্তি সংক্রান্ত একটি নথি পাওয়া গিয়েছে। তাতে শান্তিপ্রসাদ এবং তাঁর স্ত্রীর নাম পাওয়া গিয়েছে। যদিও সিবিআইয়ের তরফে সরাসরি শান্তিপ্রসাদের নাম করা হয়নি। শুধু বলা হয়েছে, এসএসসির প্রাক্তন এক উপদেষ্টার বাড়ি থেকে সোনা, নগদ টাকা এবং নথি উদ্ধার হয়েছে। তবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা নামোল্লেখ না করলেও নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত, অধুনা জেলবন্দি শান্তিপ্রসাদের কথাই যে এখানে বলা হচ্ছে, তা স্পষ্ট।
সিবিআইয়ের তরফে বিবৃতি প্রকাশ করে জানানো হয়েছে, কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগ মামলার তদন্ত চলছিল, তার সূত্র ধরেই এই তল্লাশি চালানো হয়। গত ১০ অগস্ট এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে এসএসসির প্রাক্তন দুই উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ এবং অশোক সাহাকে গ্রেফতার করে সিবিআই। এই সংক্রান্ত মামলায় সিবিআই যে এফআইআর দায়ের করেছিল তাতে প্রথম নামই ছিল শান্তিপ্রসাদের। অশোকের নাম ছিল চতুর্থ স্থানে। সিবিআই সূত্রে জানা যায়, জিজ্ঞাসাবাদে অসঙ্গতি মেলার পরই তাঁদের দু’জনকে গ্রেফতার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তাঁদের নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন সিবিআইয়ের গোয়েন্দারা। হাই কোর্ট নিযুক্ত বাগ কমিটির রিপোর্টেও এসএসসির প্রাক্তন আহ্বায়ক শান্তিপ্রসাদ এবং এসএসসির প্রাক্তন সচিব অশোকের নাম ছিল। সিবিআই সূত্রে খবর, এই দু’জন তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছিলেন। তথ্য গোপন করেছিলেন। সেই কারণেই শান্তিপ্রসাদ ও অশোককে গ্রেফতার করা হয়।
এসএসসি নিয়োগ নিয়ে যে সময় দুর্নীতির অভিযোগ, সেই সময় তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় একটি উপদেষ্টা কমিটি গড়ে দিয়েছিলেন। সেই কমিটির প্রধান ছিলেন শান্তিপ্রসাদ। সিবিআই সূত্রে দাবি, এই উপদেষ্টা কমিটির মাধ্যমেই ভুয়ো নিয়োগের সুপারিশ করা হত। এই কারণেই সিবিআইয়ের দায়ের করা এফআইআরে প্রথম নামটিই শান্তিপ্রসাদের। গ্রেফতারির পর যে বিবৃতি জারি করে তদন্তকারী সংস্থা, তাতেও এ কথাই বলা হয়। উপদেষ্টা কমিটির মেয়াদ শেষের পর অবৈধ ভাবে গ্রুপ-সি পদে নিয়োগ হয়েছিল বলেও সিবিআই বিবৃতিতে দাবি করে।