পরেশ রাওয়ালের মন্তব্যের বিরুদ্ধে মহম্মদ সেলিমের এফআইআর খারিজ করে দিলেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। ফাইল চিত্র।
আদালতের রায়ে স্বস্তি পেলেন অভিনেতা পরেশ রাওয়াল। বাঙালির মাছ খাওয়া নিয়ে মন্তব্যের জেরে পরেশের বিরুদ্ধে করা এফআইআর সোমবার খারিজ করে দিল কলকাতা হাই কোর্ট। এই মামলায় বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার পর্যবেক্ষণ, পরেশ রাওয়াল গুজরাতি ভাষায় ওই মন্তব্য করেছিলেন। পরে এ নিয়ে তিনি ক্ষমাও চান।
বিচারপতি বলেন, “অভিযোগকারী সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের কাছে বিষয়টি কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকতে পারে।” আগেই সেলিমের আইনজীবীরা আদালতের উপরই বিষয়টি ছেড়ে দিয়েছিলেন। এর পরই বিচারপতি মান্থা মামলাটি খারিজ করে দেন। ফলে এখন পরেশের বিরুদ্ধে কোনও তদন্ত করতে পারবে না কলকাতা পুলিশ।
গুজরাতে বিধানসভা ভোটের আগে বিজেপির একটি প্রচারসভায় পরেশ বলেছিলেন, ‘‘মুদ্রাস্ফীতি সহ্য করতে পারবেন গুজরাতের মানুষ। কিন্তু পাশের বাড়িতে যদি রোহিঙ্গা উদ্বাস্তু কিংবা বাংলাদেশিরা এসে ওঠেন, তখন গ্যাস সিলিন্ডার নিয়ে কী করবেন? বাঙালিদের জন্য মাছ ভাজবেন?’’ এর পর পরেশের ওই মন্তব্য নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক। প্রশ্ন ওঠে, রোহিঙ্গা বা বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের আক্রমণ করতে গিয়ে পরেশ কি খেই হারিয়ে গোটা বাঙালি জাতিকেই অপমান করলেন?
পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে বিজেপিও ওই মন্তব্য থেকে নিঃশব্দে দূরত্ব তৈরি করে। বিপাকে পড়ে প্রাক্তন সাংসদ ক্ষমাও চান। কিন্তু তারই মধ্যেই পরেশের বিরুদ্ধে একাধিক থানায় অভিযোগ জমা পড়ে। সেই গুচ্ছ অভিযোগের একটি করেছিলেন সেলিম। সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পরেশকে কলকাতায় তলব করেছিল পুলিশ।
গত বৃহস্পতিবারই এই মামলায় বিচারপতি মান্থা তাঁর নির্দেশে জানিয়েছিলেন, এখনই পরেশকে গ্রেফতার করা যাবে না। শুনানি-পর্বে তিনি বলেন, ‘‘পুলিশ তদন্ত জারি রাখবে। তবে পরেশকে গ্রেফতার করতে পারবে না। জিজ্ঞাসাবাদে ভিডিয়ো কনফারেন্সে তিনি উপস্থিত থাকতে পারবেন।’’ প্রসঙ্গত, ‘মেছো মন্তব্যের’ জেরে তালতলা থানায় সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের দায়ের করা এফআইআরের ভিত্তিতে পরেশকে তলব করেছিল কলকাতা পুলিশ। এর বিরুদ্ধে ডিসেম্বরের গোড়ায় হাই কোর্টে মামলা করেছিলেন অভিনেতা।