বাঁ দিক থেকে লতা বন্দ্যোপাধ্যায়, বিচারপতি অমৃতা সিংহ, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। — ফাইল চিত্র।
লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডস মামলায় এ বার তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মা লতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পত্তির হিসাব চাইল কলকাতা হাই কোর্ট। সংস্থা নিয়ে গত আট মাস ধরে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) যে তদন্ত করেছে, তা নিয়ে সোমবার অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বিচারপতি অমৃতা সিংহ। তিনি জানিয়েছেন, এই তদন্তের নিট ফল শূন্য। সংস্থা এবং সংস্থার সিইও অভিষেকের বিষয়ে ইডি বিশদে তথ্য দিতে পারেনি। তাই এই সংক্রান্ত আরও কিছু তথ্য জমা করার নির্দেশ দেন বিচারপতি সিংহ। তালিকায় রয়েছে অভিষেকের মা লতার সম্পত্তির খতিয়ান, যিনি ওই সংস্থার ডিরেক্টর ছিলেন। ২৯ সেপ্টেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি। তার মধ্যে এই তথ্য দিতে হবে।
লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডস সংস্থার সিইও (চিফ এগ্জিকিউটিভ অফিসার) এবং ডিরেক্টরদের সম্পত্তির বিবরণ ইডিকে জমা দিতে বলেছিল হাই কোর্ট। সেই মতো ইডি আদালতে তা জমা দেয়। ওই বিবরণ নিয়ে সোমবার ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিচারপতি সিংহ। তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি ইডির উদ্দেশে বলেন, ‘‘কচ্ছপের গতিতে এ ভাবে আর কত দিন তদন্ত চলবে। টানেলের শেষে কবে পৌঁছবে? সমস্ত নথি তথ্য প্রমাণ নষ্ট হওয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন।’’
এর পরেই বেশ কিছু তথ্য ইডি-কে বিশদে দিতে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি সিংহ। লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডস সংস্থার ছ’জন ডিরেক্টরের নাম, তাঁদের সম্পত্তির পরিমাণ, সংস্থার লেনদেন, তার মূল্য, এই সংস্থায় কারা ক্লায়েন্ট, তাঁদের নাম, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, সংস্থার রোজের কাজ কে দেখতেন, সিইও অভিষেকের সম্পত্তির বিস্তারিত বিবরণ, তাঁর মা লতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পত্তির বিস্তারিত বিবরণ, সংস্থার সব কর্মীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, কারা, কবে সংস্থায় যোগ দিয়েছেন, কেন সংস্থার ঠিকানা পরিবর্তন এবং কার কাছে তদন্ত নিয়ে ইডি সাহায্য চায়, তা জানাতে হবে হাই কোর্টে। বিচারপতি এ-ও জানিয়েছেন, আদালত ফল আশা করে।
লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডস সংস্থার এক ডিরেক্টর সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে ‘কালীঘাটের কাকু’-কে গ্রেফতার করা হয়েছে। ছয় ডিরেক্টরের মধ্যে বাকি পাঁচ জনের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, সোমবার সেই প্রশ্নও তুলেছেন বিচারপতি সিংহ। তিনি বলেন, ‘‘এক ডিরেক্টরকে গ্রেফতার করেছেন। অন্য ডিরেক্টরদের বিরুদ্ধে কী অনুসন্ধান করেছেন? তাঁরা অনুসন্ধান থেকে ছাড় পাচ্ছেন কেন?’’ প্রসঙ্গত, সংস্থার এক ডিরেক্টর ছিলেন লতাও। তাঁর বিরুদ্ধে কী অনুসন্ধান চালানো হচ্ছে, সেই প্রশ্নই তুলেছে হাই কোর্ট। ২৯ সেপ্টেম্বর, পরবর্তী শুনানির মধ্যে এর জবাব দিতে হবে ইডিকে।