—ফাইল চিত্র।
দত্তপুকুরে বিস্ফোরণের ঘটনায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং বিজেপি নেতা রাজর্ষি লাহিড়ির জনস্বার্থ মামলা খারিজ করে দিল কলকাতা হাই কোর্ট। মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, এই ঘটনার তদন্তভার রাজ্য সরকারই চালাবে। এই নিয়ে পর পর দু’দিন হাই কোর্টে ধাক্কা খেলেন শুভেন্দু। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রমৃত্যু নিয়ে হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে জনস্বার্থ মামলা করেছিলেন শুভেন্দু। সোমবার সেই জনস্বার্থ মামলাটি ওঠে শুনানির জন্য। শুনানি চলাকালীন জনস্বার্থ মামলাটির বিষয়বস্তু নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। পরে মামলাটি প্রত্যাহার করে নেন শুভেন্দু।
দত্তপুকুরের ঘটনা নিয়ে সোমবার রাজ্যের বিরোধী দলনেতা এবং বিজেপি নেতা রাজর্ষি লাহিড়ী দু’টি মামলা করেন। এই ঘটনায় সিবিআই এবং এনআইএ তদন্তের আবেদন করেন মামলাকারীরা। বিস্ফোরণের পর থেকেই এই ঘটনা নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধী দলগুলি। শাসক শিবিরের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুও।
মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে শুনানি হয়। হাই কোর্ট জানায়, ইতিমধ্যে ওই ঘটনায় রাজ্য পুলিশ তদন্ত করছে। এই অবস্থায় মামলাকারীর আবেদন উহ্য রাখছে আদালত। পুলিশ তদন্ত সম্পূর্ণ করুক। শুভেন্দুর মামলা খারিজ করে হাই কোর্ট জানায়, এখন এই মামলাটি অপরিণত বলে মনে করছে আদালত। পুলিশ তদন্ত চালিয়ে নিয়ে যাবে। আগামী দিনে মামলাকারীর নতুন কোনও অভিযোগ থাকলে জানাতে পারবেন।
হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ, জনস্বার্থ মামলকারীরা বিস্ফোরণ আইনে মামলা করার আবেদন করেছেন। এফআইআরে বিস্ফোরণ আইনের ধারা যোগ করা হয়নি বলে তাঁদের অভিযোগ। অন্য দিকে, কেন্দ্রের ডেপুটি সলিসিটির জেনারেল জানিয়েছেন, ওই এলাকায় এনআইএ গিয়েছে। এই অবস্থায় আদালত মনে করছে রাজ্য পুলিশ আপাতত তদন্ত চালিয়ে নিয়ে যাবে।
রবিবার সকালে দত্তপুকুরে বিস্ফোরণ ঘটে। এই ঘটনায় ন’জনের মৃত্যু হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে এক জনকে। অভিযুক্ত আইএসএফের এক নেতা পলাতক বলে দাবি করেছে পুলিশ। দত্তপুকুরের আইসি শুভব্রত ঘোষ এবং নীলগঞ্জ ফাঁড়ির ওসি হিমাদ্রি ডোগরাকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। দত্তপুকুরের নতুন আইসি করা হয়েছে সুজিত পতিকে। সোমবার বিস্ফোরণস্থল ঘুরে দেখেন বারাসত পুলিশ জেলার সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় এবং এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সিদ্ধনাথ গুপ্ত। তিনি বলেন, ‘‘পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। বাজি বানানো হচ্ছিল, বাকি তদন্ত চলছে।’’ সোমবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশমন্ত্রী মমতা। সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষোভের মুখে পড়েছেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীও। রবিবার বিস্ফোরণের দিন সন্ধ্যায় রাজ্য পুলিশের ডিজিকে কালীঘাটে নিজের বাড়িতে ডেকে পাঠিয়েছিলেন মমতা। সূত্রের খবর, সেই বৈঠকেই পদক্ষেপ করার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। বিস্ফোরণের পর থেকেই নড়েচড়ে বসেছে পুলিশ মহল।