দাড়িভিটকাণ্ডে মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিবের বিরুদ্ধে রুল জারি করল হাই কোর্ট। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
দাড়িভিটে গুলিতে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় এ বার আদালত অবমাননার রুল জারি করল কলকাতা হাই কোর্ট। ১০ মাস কেটে গেলেও কেন হাই কোর্টের দেওয়া জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)-কে দিয়ে তদন্তের নির্দেশ কার্যকর করা হল না, প্রশ্ন তুলে শুক্রবার রাজ্যের মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব এবং এডিজি সিআইডির বিরুদ্ধে রুল জারি করলেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা।
২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে শিক্ষক নিয়োগকে কেন্দ্র করে অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরের দাড়িভিট হাই স্কুল। অবরোধ, লাঠিচার্জ, ইট-পাথর ছোড়া থেকে শুরু করে বোমা-গুলিও চলে বলে অভিযোগ। ওই সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় রাজেশ সরকার এবং তাপস বর্মণ নামে দুই প্রাক্তন ছাত্রের। এই ঘটনায় উত্তাল হয়ে ওঠে রাজ্য রাজনীতি। ছাত্রমৃত্যুর ঘটনার সিবিআই তদন্তের দাবিতে তাঁদের পরিবার এবং এলাকাবাসীর একাংশের আন্দোলনে প্রায় দু’মাস ধরে বন্ধ থাকে দাড়িভিট স্কুল।
পুলিশের বিরুদ্ধে গুলি চালানোর অভিযোগ করেন স্থানীয়রা। যদিও পুলিশ ওই অভিযোগ অস্বীকার করে। কলকাতা হাই কোর্ট প্রথমে এই ঘটনায় সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দেয়। তবে গত বছর ১০ মে সেই মামলাতেই বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা এনআইএ তদন্ত নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে আর্থিক সাহায্য দিতেও বলেছিলেন বিচারপতি।
অভিযোগ, ১০ মাস কেটে গেলেও হাই কোর্টের নির্দেশ কার্যকর হয়নি। সেই অভিযোগ তুলেই আবারও হাই কোর্টের দ্বারস্থ হলেন নীলকমল সরকার। শুক্রবার মামলাকারীর পক্ষের আইনজীবী পার্থ ঘোষ বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার এখনও কোনও ক্ষতিপূরণ দেয়নি। কোনও সাহায্য পাওয়া যায়নি। এমনকি, এনআইএ-এর হাতে তদন্তের নথিও তুলে দেয়নি সিআইডি।’’
শুক্রবার দাড়িভিট ছাত্রমৃত্যুর মামলায় বিচারপতি মান্থা ক্ষোভপ্রকাশ করেন। কেন এখনও তদন্তের নথি এনআইএ-এর হাতে দেওয়া হল না, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি। আদালতের নির্দেশ, আগামী ৫ এপ্রিল রাজ্যের মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব এবং এডিজি সিআইডিকে আদালতে হাজিরা দিয়ে জানাতে হবে কেন আদালতের নির্দেশ কার্যকর করা হয়নি।