Custodial death in Bogtui Case

নবান্নের ‘হাত’ রয়েছে লালন-পরিবারের দায়ের করা এফআইআরে, কোর্টে অভিযোগ সিবিআইয়ের

লালন-মৃত্যুতে পুলিশের তরফে ৭ সিবিআই আধিকারিকের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়েছে। সেখানে এমন দুই সিবিআই অফিসারের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, যাঁরা গরু পাচার মামলায় তদন্ত করছেন।

Advertisement
শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০২২ ১৭:৫০
সিবিআই আধিকারিকদের ‘শাস্তি’ দাবি করে রামপুরহাটে বিক্ষোভ লালনের স্ত্রী-সহ বগটুইয়ের গ্রামবাসীদের।

সিবিআই আধিকারিকদের ‘শাস্তি’ দাবি করে রামপুরহাটে বিক্ষোভ লালনের স্ত্রী-সহ বগটুইয়ের গ্রামবাসীদের। —নিজস্ব চিত্র।

বগটুইকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত লালন শেখের মৃত্যুতে তাদের ৭ আধিকারিকের বিরুদ্ধে এফআইআরের ঘটনায় রাজ্যের হাত দেখছে সিবিআই। বুধবার কলকাতা হাই কোর্টে এই অভিযোগ আনল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।

সোমবার বীরভূমের রামপুরহাটে সিবিআইয়ের অস্থায়ী শিবিরে থাকাকালীন লালনের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। সিবিআই একে আত্মহত্যা বলে দাবি করলেও লালনের পরিবার খুনের অভিযোগ এনেছেন। লালনের স্ত্রী রেশমা বিবি এফআইআরে কয়েক জন সিবিআই আধিকারিকের নাম করেছেন। অন্য দিকে, এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে রাজ্য সিআইডি। বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের এজলাসে সিবিআই দাবি করে তাদের ৭ আধিকারিকের বিরুদ্ধে এফআইআরের ঘটনায় ‘রাজ্যের মদত’ রয়েছে। সিবিআইয়ের দাবি, রাজ্য চাইছে না যে তারা এখানকার বিভিন্ন মামলার তদন্ত করুক। এর পর সিবিআই বলে, ‘‘কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় তদন্ত চলছে। গরু পাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এখন ওই (গরু পাচার) মামলায় তদন্তকারী অফিসার সুশান্ত ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়েছে। এটা থেকে তো ইঙ্গিত স্পষ্ট।’’

Advertisement

উল্লেখ্য, লালন-মৃত্যুতে পুলিশের তরফে ৭ সিবিআই আধিকারিকের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়েছে। সেখানে সুশান্ত ভট্টাচার্য এবং স্বরূপ ভট্টাচার্য নামে দুই সিবিআই অফিসারের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। ঘটনাচক্রে দুই আধিকারিকই গরু পাচার মামলায় তদন্ত করছেন। এর মধ্যে সুশান্ত বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেফতার করেন। এখানে সিবিআইয়ের অভিযোগ, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে তাদের আধিকারিকদের নামে মামলা করা হচ্ছে।

এই প্রেক্ষিতে বিচারপতি জানান, অন্য মামলার সঙ্গে যুক্ত ঘটনা উল্লেখ করার এখানে দরকার নেই। কিন্তু সিবিআইয়ের আইনজীবীর পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘কী ভাবে এই ঘটনায় সিআইডি তদন্ত হয়?’’ জবাবে বিচারপতির যুক্তি, হয়তো স্থানীয় থানার পুলিশের উপর ভরসা নেই। তাই সিআইডিকে তদন্তভার দেওয়া হয়ে থাকতে পারে। সিবিআই এর পর অভিযোগ করে বলে, ‘‘রাজ্য পুলিশের তদন্ত একেবারেই স্বচ্ছ নয়।’’ এর পর শুরু হয় বাদানুবাদ।

রাজ্যের কৌঁসুলি অনির্বাণ রায় সওয়াল করেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে কোনও অভিযোগ পাওয়ার পর এফআইআর দায়ের করতে বাধা কোথায়? মৃতের স্ত্রীর অভিযোগ জানানোর কি কোনও অধিকার নেই?’’ তাঁর সংযুক্তি, ‘‘রাজ্যের বিরুদ্ধে শুধু শুধু অভিযোগ করে যাচ্ছে সিবিআই। মৃতের স্ত্রীর বক্তব্য না শুনে এই মামলার শুনানি সম্পূর্ণ হবে না।’’

এই প্রেক্ষিতে লালনের স্ত্রীকে মামলার পক্ষ করার নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। পাশাপাশি দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের প্রস্তাবও স্থগিতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি সেনগুপ্ত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement