শুভেন্দু অধিকারী। —ফাইল চিত্র।
স্বচ্ছতার শর্তে কেন্দ্রীয় প্রকল্পে রাজ্যের প্রাপ্য আদায়ে ‘সহযোগিতা’র আশ্বাস দিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। প্রয়োজনে এই ব্যাপারে রাজ্যের সঙ্গে যৌথ ভাবে কাজেও রাজি তিনি। সরকার পক্ষ অবশ্য তাঁর এই অবস্থানকে ‘দ্বিচারিতা’ বলে চিহ্নিত করছে।
কেন্দ্রীয় বঞ্চনার পুরনো অভিযোগ ঘিরে শুক্রবার ফের তরজায় জড়িয়েছে শাসক তৃণমূল কংগ্রেস ও বিরোধী বিজেপি। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অভিযোগ তুলে ন্যায্য পাওনা আটকে দেওয়ার অভিযোগ করে এ দিন এই সংক্রান্ত প্রস্তাব এনেছিলেন সরকারি মুখ্য সচেতক নির্মল ঘোষ। বক্তৃতায় রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ‘অস্বচ্ছতা ও অনিয়মে’র একাধিক অভিযোগ তুলেছেন শুভন্দু। বিরোধী দলনেতার দাবি, ইউপিএ আমলের তুলনায় রাজ্যের জন্য অনেক বেশি অর্থ বরাদ্দ করেছে কেন্দ্রের এনডিএ সরকার। অথচ তার সদ্ব্যবহার করতে পারেনি তৃণমূল সরকার। শুভেন্দু বলেন, ‘‘বরাদ্দ অর্থ ব্যবহার করার উপযুক্ত শংসাপত্রও কেন্দ্রের কাছে জমা দিতে পারেনি রাজ্য সরকার। টাকা পেয়েও খরচ করতে পারেনি। আবাসের স্বচ্ছ তালিকা প্রকাশ করুন। এ সব অস্বচ্ছতা কাটিয়ে এগোতে পারলে আমিও সহযোগিতা করব।’’
প্রসঙ্গত, গত দু’তিন বছর ধরেই বঞ্চনার অভিযোগ তুলে ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’র কথা বলে আসছে তৃণমূল। বিরোধী দলনেতার অভিযোগ অস্বীকার করে এ দিন রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার বলেছেন, ‘‘সব শংসাপত্রের প্রাপ্তি স্বীকার করেছে। তার পরে আটকে থাকা প্রকল্প রূপায়ণে টাকা দেওয়ার কথাও বলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু তা হয়নি।’’ তাঁর দাবি, ‘‘২০২১ সালের আগের চার বছর কাজের জন্য একাধিক বিভাগে রাজ্যকে পুরষ্কৃত করেছে কেন্দ্র। কিন্তু ওই সময়ে ভোটে হেরে যাওয়ার পর থেকেই নানা প্রশ্ন তোলা হচ্ছে।’’ এই সূত্রে আবাস, ১০০ দিনের কাজের মতো নানা প্রকল্পের কথাও আলোচনায় এসেছে।
বিধানসভার আলোচনায় সত্যেন্দ্রনাথ রায়, অম্বিকা রায়ের মতো বিধায়কেরা পঞ্চায়েত স্তরে নানা দুর্নীতির অভিযোগ করেছেন। সেই সঙ্গে কেন্দ্রের দেওয়া টাকা থেকে রাজ্যবাসীকে বঞ্চিত করার পাল্টা অভিযোগ তুলেছেন তাঁরা। তৃণমূলের শ্যামল মণ্ডল, কল্লোল খাঁ, যোগরঞ্জন হালদারের মতো বিধায়কেরা পাল্টা আঙুল তুলেছেন বিজেপির দিকেই। তাঁদের অভিযোগ, তৃণমূলকে হারাতে টাকা আটকে দিয়ে এই ‘বঞ্চনা’ করেছেন এ রাজ্যের বিজেপি নেতৃত্বই। যোগরঞ্জনের কথায়, ‘‘ভোটে হেরে এখন সদিচ্ছা দেখানোর ভান করছে বিজেপি!’’