Sukanta Majumdar

বিজেপির নবান্ন অভিযান: মিছিলের শুরুতেই পুলিশ আটকে দিলে ‘শঠে শাঠ্যং’ হবে, হুমকি সুকান্তের

এর আগে একাধিক রাজনৈতিক দল ‘নবান্ন অভিযান’ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে। বিজেপিও আগে নবান্ন অভিযান করেছে। কিন্তু কোনও বারই রাজ্য সরকারের সদর দফতরের ধারেকাছে পৌঁছতে পারেনি কোনও অভিযান।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১১:০২
সুকান্ত মজুমদার।

সুকান্ত মজুমদার।

বিজেপির ডাকে আগামী মঙ্গলবার, ১৩ সেপ্টেম্বর নবান্ন অভিযান। আনন্দবাজার অনলাইনের ফেসবুক ও ইউটিউব লাইভ অনুষ্ঠান ‘অ-জানাকথা’য় এসে শুক্রবার সেই কর্মসূচি নিয়ে গেরুয়া শিবিরের পরিকল্পনা খোলসা করলেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। জানিয়ে দিলেন, মিছিলের শুরুতেই যদি বিজেপির মিছিল পুলিশ আটকে দেওয়ার চেষ্টা করে, তা হলে ‘শঠে শাঠ্যং’ হবে।

নবান্ন অভিযানকে ঘিরে রাজ্যে নতুন করে গেরুয়া জোয়ার আনার কথা বলছেন বিজেপি নেতারা। আনন্দবাজার অনলাইন আগেই জানিয়েছিল, মূলত তিনটি মিছিল তিন জায়গা থেকে নবান্নের উদ্দেশে রওনা দেবে। প্রথম মিছিলটি শুরু হবে হাওড়া স্টেশন থেকে। তার নেতৃত্বে থাকবেন সুকান্ত। শিয়ালদহ থেকে মিছিল নিয়ে নবান্নের উদ্দেশে রওনা হবেন দিলীপ ঘোষ। তৃতীয় তথা শেষ মিছিলের নেতৃত্বে থাকবেন শুভেন্দু অধিকারী। মিছিলটি শুরু হবে সাঁতরাগাছি স্টেশন থেকে। ত্রিফলা মিছিল সামাল দিতে তৈরি হচ্ছে রাজ্য ও কলকাতা পুলিশ।

Advertisement

এই পরিস্থিতিতে সাধারণত পুলিশ চায়, একেবারে শুরুতেই মিছিল আটকে দিতে। বাস্তবে তা-ই যদি হয়, তা হলে কী করবে বিজেপি? ‘অ-জানাকথা’য় সেই সম্পর্কে ইঙ্গিত দিলেন সুকান্ত। তিনি বলেন, ‘‘আমরা কর্মীদের বলেছি, শান্ত ও গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে প্রতিবাদ জানাতে। সেখানে গোলমালের জায়গা একটাই, যদি পুলিশ অতিসক্রিয়তা দেখায়। আমরা আগে পুলিশের অতিসক্রিয়তা দেখেছি।… যে ভাবে চুরি হয়েছে এবং একটার পর একটা চোর ধরা পড়ছে, এই সরকারের নৈতিক অধিকার নেই পদে বসে থাকার।’’ কিন্তু পুলিশ আটকে দিলে কী করবে বাংলার বিজেপি? সুকান্তের জবাব, ‘‘আমাদের নবান্নের আগে আটকে দিলে ভাল। কিন্তু যদি শুরুতেই আটকে দেয় তা হলে আমরা প্রতিবাদ জানাব। শঠে শাঠ্যং! শঠের সঙ্গে তো শঠতাই করতে হবে।’’

সুকান্ত যখন নবান্ন এবং লালবাজারকে চাপে রাখতে চাইছেন, তখন রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা রিপোর্ট বলছে, বিজেপির একটা অংশ গোলমালের পরিকল্পনা নিয়েই নবান্ন অভিযানে যাচ্ছে। নবান্নের হাতে যাওয়া এই রিপোর্ট অনুযায়ী, তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগ দেওয়া এক বা একাধিক নেতা এই পরিকল্পনা করেছেন। ছন্নছাড়া সংগঠনকে সক্রিয় করতে এ ছাড়া অন্য পথ নেই বলে এই অংশের মত। রিপোর্ট বলছে, পুলিশকে প্ররোচিত করে গুলি চালাতে পর্যন্ত বাধ্য করার ছক কষা হয়েছে। বড় গোলমাল বাধলে, রাজ্যের নানা প্রান্তে সেই গোলমাল ছড়িয়ে দেওয়া হবে। যদিও রাজ্য বিজেপির অন্য একটি অংশ এ ধরনের পরিকল্পিত হাঙ্গামার একেবারেই পক্ষপাতী নয়।

এর আগে একাধিক রাজনৈতিক দল ‘নবান্ন অভিযান’ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে। বিজেপিও আগে নবান্ন অভিযান করেছে। কিন্তু কোনও বারই রাজ্য সরকারের সদর দফতরের ধারেকাছে পৌঁছতে পারেনি কোনও অভিযান। পুলিশ আগেই আটকে দিয়েছে সব মিছিল। যদিও মিছিল আটকাতে গিয়ে একাধিক জায়গায় পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতেও জড়িয়ে পড়তে দেখা গিয়েছে রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী-সমর্থকদের। পরিস্থিতি আয়ত্বে আনতে পুলিশকে ফাটাতে হয়েছে কাঁদানে গ্যাসের শেল, করতে হয়েছে লাঠিচার্জ। ব্যবহার করতে হয়েছে জলকামানও।

প্রসঙ্গত, বিজেপির নবান্ন অভিযান ঘিরে নেতাদের প্রস্তুতি সভা চলছে রাজ্য জুড়ে। ভাড়া করা হয়েছে কয়েকটি ট্রেন। যে ট্রেনে চড়ে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কলকাতার কর্মসূচিতে অংশ নিতে আসবেন নেতা-কর্মী-সমর্থকেরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement