শুভেন্দু অধিকারী। —ফাইল চিত্র।
একেবারে শেষ মুহূর্তে সিদ্ধান্ত বদল। সোমবার বিধানসভার একদিনের বিশেষ অধিবেশনে অংশগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিল বিজেপি। রবিবার দুপুরে বিধাননগরে বিজেপির পার্টি অফিসের বাইরে অধিবেশন সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে নন্দীগ্রামের বিধায়ক বলেন, ‘‘আমারা ১১টায় সকলকে ডেকেছি, আমরা ভিতরে ঢুকব। বিরোধিতা করব, জোরালো ভাবে এর বিরোধিতা করব।’’
শুক্রবার আচমকাই জানানো হয়, ১৬ অক্টোবর সোমবার বিধানসভায় একদিনের বিশেষ অধিবেশন বসবে। এ কথা জানার পরেই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু জানিয়ে দেন, অধিবেশন সংক্রান্ত বিষয়ে বিস্তারিত জানার পরেই তারা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। বিধানসভার সচিবালয় থেকে বিজেপি পরিষদীয় দল জানতে পারে, মন্ত্রীদের বেতন বৃদ্ধি করতে ‘দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল স্যালারিজ় অ্যান্ড অ্যালায়েন্স অ্যাক্ট ১৯৫২’ এবং বিধায়কদের বেতন বৃদ্ধি করতে ‘বেঙ্গল লেজিসলেটিভ অ্যাসেম্বলি (মেম্বার অ্যামিউজ়মেন্টস) অ্যাক্ট ১৯৩৭’ সংশোধন করা হবে। তারপরেই শুভেন্দু বলেন, ‘‘আমরা ওই দিন থাকব না। বিধায়কেরা সকলেই পুজোয় ব্যস্ত থাকবেন। আমাদের এই বিল নিয়ে কোনও আগ্রহ নেই। ওরা আনছে, ওরা ওদের মতোই পাশ করাবে।’’
বিধানসভা সূত্রে খবর, বিজেপি পরিষদীয় দলের একাংশ বেতন বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়ে নিজেদের প্রতিবাদ বিধানসভায় লিপিবদ্ধ করার পক্ষপাতী। সেই বিষয়টি বিবেচনা করেই বিরোধী দলনেতা একেবারে শেষ মুহূর্তে বিশেষ অধিবেশনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এক বিজেপি বিধায়কের কথায়, ‘‘বিজেপি যে দলগত ভাবে মন্ত্রী ও বিধায়কদের বেতন বৃদ্ধির বিরুদ্ধে, জনমানসে এই বার্তা দিতেই আমরা সরকারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বক্তৃতা করব।’’
শারীরিক অসুস্থতার কারণে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই অধিবেশনে উপস্থিত থাকবেন না, তা আগেই ঠিক হয়ে গিয়েছিল। তারপর বিরোধী দল অনুপস্থিত হওয়ার কথা ঘোষণা করে দেওয়ায় অধিবেশন নিয়ে রাজনৈতিক উত্তাপ কমছিলই। কিন্তু রবিবার আচমকাই অধিবেশনে যোগদানের কথা ঘোষণা করে দেন শুভেন্দু। ফলে দুই বিলে আলোচনার সময় অধিবেশন উত্তপ্ত হতেই পারে।
গত ৭ সেপ্টেম্বর বিধানসভায় নিজের বক্তব্য শেষে বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, মন্ত্রী থেকে বিধায়ক— সব স্তরেই ৪০ হাজার টাকা করে বেতন বৃদ্ধি করছে সরকার। সরকারের বেতন কাঠামো অনুযায়ী, বিধায়কদের বেতন প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা থেকে বেড়ে হল ৫০ হাজার টাকা। রাজ্যের প্রতিমন্ত্রীরা এত দিন মাসে ১০ হাজার ৯০০ টাকা করে পেতেন। এখন থেকে তাঁরা পাবেন ৫০ হাজার ৯০০ টাকা। এ ছাড়া, রাজ্যের পূর্ণমন্ত্রীদের বেতন ছিল ১১ হাজার টাকা। তাঁরা বেতন বাবদ এ বার থেকে ৫১ হাজার টাকা পাবেন। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা এবং প্রতিমন্ত্রী, পূর্ণমন্ত্রীরা এত দিন ভাতা ইত্যাদি মিলিয়ে এক লক্ষ ১০ হাজার টাকা পেতেন। এ বার থেকে তাঁরা পাবেন প্রায় দেড় লক্ষ টাকা। কিন্তু ওই সিদ্ধান্তকে সমর্থন না করার কথা জানিয়েছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু। তিনি বলেছিলেন, ‘‘বিধায়কের ভাতা বৃদ্ধির সিদ্ধান্তকে সমর্থন করি না।’’ এ বার সেই প্রতিবাদ বক্তব্যের মাধ্যমে বিধানসভার খাতায় লিপিবদ্ধ করবেন বিজেপি বিধায়করা।