গাড়ি আটকে বিজেপি বিধায়ক শিখা চট্টোপাধ্যায়ের বিক্ষোভ। — নিজস্ব চিত্র।
বিধানসভা চত্বরে তৃণমূল বিধায়কের গাড়ি তাঁকে ধাক্কা মেরেছে বলে অভিযোগ। গাড়ি দাঁড় করিয়ে রেখে বেশ কিছু ক্ষণ বিক্ষোভ দেখান ডাবগ্রাম ফুলবাড়ির বিজেপি বিধায়ক শিখা চট্টোপাধ্যায়। তাঁর সঙ্গে বিক্ষোভে শামিল হয়েছিলেন বিজেপির বাকি বিধায়কেরাও। বিধায়ক অশোক কীর্তনিয়াও দাবি করেন, তৃণমূল বিধায়কের গাড়িতে তাঁদের ধাক্কা লেগেছে। বেশ কিছু ক্ষণ বিধানসভা চত্বরে এই নিয়ে হট্টগোল চলে। পরে শিলিগুড়ির বিধায়ক তথা বিজেপির পরিষদীয় দলের মুখ্য সচেতক শঙ্কর ঘোষের মধ্যস্থতায় ঝামেলা মিটেছে।
শুক্রবার রাজ্য বিধানসভায় মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বিজেপির তরফে নরহরি মাহাতো মূল্যবৃদ্ধির সমস্যা নিয়ে বক্তৃতা করেন। তৃণমূলের তরফে বলেন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। তাঁর বক্তৃতার সময়ে বারংবার কেন্দ্রীয় সরকারকে আক্রমণের প্রতিবাদে বিধানসভা কক্ষের বাইরে বেরিয়ে বিক্ষোভ দেখান বিরোধী বিধায়কেরা। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে মিছিল করে বিধানসভার কক্ষ থেকে বেরিয়ে যান তাঁরা। প্রধান ফটকের সামনে টেবিল পেতে মূল্যবৃদ্ধির প্রতীকী প্রতিবাদ জানাচ্ছিলেন তাঁরা। সেই সময়েই বিধানসভায় ঢুকছিল জয়নগরের তৃণমূল বিধায়ক বিশ্বনাথ দাসের গাড়ি। তখন থেকেই অশান্তি শুরু হয়।
বিধানসভার বাইরে কিছু ক্ষণ প্রতিবাদ জানিয়ে শুভেন্দুরা কক্ষে ফিরে গিয়েছিলেন। বাকিরা তখনও দাঁড়িয়েছিলেন ফটকের সামনে। শিখার অভিযোগ, বিশ্বনাথের গাড়ি বিধানসভায় প্রবেশের সময়ে তাঁর গায়ে ধাক্কা মেরেছে। একই অভিযোগ করেন বনগাঁ উত্তরের বিধায়ক অশোকও। অভিযোগ, গাড়ি নিয়ে ঢোকার সময়ে হর্নও বাজানো হয়নি। তৃণমূল বিধায়কের গাড়ি ফটকের সামনেই আটকে দেন তাঁরা।
এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের শিখা বলেন, ‘‘আমরা এখানে আন্দোলন করছি। গাড়ি নিয়ে কী করে উনি ঢুকে যাচ্ছেন? একটি হর্নও তো দিলেন না। আমাদের ধাক্কা মেরে গাড়ি নিয়ে ঢুকে যাচ্ছেন। জিনিসপত্র ফেলে দিচ্ছেন। একই রকম ভাবে আগের দিন এক জন সাংবাদিকের পা ভেঙে দেওয়া হয়েছে। আমরা তাঁকে উদ্ধার করি। ওঁদের কোনও মানবিকতা নেই। তাই আমরা এই গাড়িটিকে আটক করেছি। কেন এই জিনিস বার বার হবে? এটা আমরা মেনে নেব না।’’
বেশ কিছু ক্ষণ গাড়ি আটকে থাকার পর শঙ্করের মধ্যস্থতায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। তৃণমূল বিধায়ক বিশ্বনাথ বলেন, ‘‘ধাক্কা মারার কোনও অভিপ্রায় আমার ছিল না। ইচ্ছাকৃত ভাবে কিছু করা হয়নি। এ ভাবে বিধানসভার দরজার সামনে বিক্ষোভ দেখানো হবেই বা কেন? এটা তো হওয়ার কথা নয়।’’
বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘বিষয়টি আমার জানা নেই। যদি কেউ এই ঘটনা আমার গোচরে আনেন, আমি সংশ্লিষ্ট ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখে বিবেচনা করব।’’