রবিবার রাজ্যের সব জেলার সভাপতিদের নাম ঘোষণা করেছেন সুকান্ত মজুমদার। — ফাইল চিত্র।
প্রার্থী যে-ই হোন, আগামী লোকসভা নির্বাচনে কাদের নেতৃত্বে ৪২ আসনে বিজেপির লড়াই হবে সেই দল ঘোষণা করলেন দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। আসন ৪২টা হলেও বিজেপির এখন জেলার সংখ্যা দাঁড়াল ৪৩। মুর্শিদাবাদ জেলায় তৈরি হল নতুন জেলা। অন্য কিছু জেলাতেও এলাকা বদল হয়েছে। আর বিজেপি আগে থেকেই দার্জিলিংকে দুই জেলায় ভাগ করে। দার্জিলিং ও শিলিগুড়ি। কলকাতা দক্ষিণ থেকে কিছুটা অংশ বার হয়ে তৈরি হয়েছে যাদবপুর লোকসভা আসনের আলাদা জেলা। সব মিলিয়ে নতুন করে ৪৩ জেলা সভাপতির নাম রবিবার ঘোষণা করলেন সুকান্ত। সেখানে সবচেয়ে বড় চমক, দলের দু’বারের বিধায়ক তথা এখন বিধানসভায় মুখ্য সচেতক মনোজ টিগ্গা আলিপুরদুয়ারের জেলা সভাপতি হলেন। মনোজ ছাড়াও আরও পাঁচ জন বিধায়ক জেলা সভাপতি হলেন। কলকাতা উত্তরের সভাপতি পদে তমোঘ্ন ঘোষ থাকলেও দক্ষিণের সঙ্ঘমিত্রা চৌধুরীকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই জায়গায় এসেছেন অনুপম ভট্টাচার্য। দায়িত্বে বহাল রইলেন ৩০ জন পুরনো জেলা সভাপতি।
বিধায়কদের মধ্যে মনোজ ছাড়াও জেলা সভাপতি হওয়াদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য বিমান ঘোষ। রাজ্য বিজেপির সম্পাদক পদে থাকা বিমানকে আরামবাগ জেলার সভাপতি করা হয়েছে। রানাঘাট উত্তর পশ্চিমের বিধায়ক পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায় বিজেপির সাংগঠনিক দক্ষিণ নদিয়া জেলার সভাপতি ছিলেন। তাঁকেই রাখা হয়েছে। ওন্দার বিধায়ক অমরাথ শাখা হয়েছেন বিষ্ণুপুর লোকসভা এলাকার সভাপতি। প্রশাসনিক পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় দুই লোকসভা আসনে দুই সাংগঠনিক জেলা। দু’টিতেই দুই বিধায়ককে জেলা সভাপতি করা হয়েছে। কাঁথির দায়িত্ব পেলেন কাঁথি দক্ষিণের বিধায়ক অরূপকুমার দাস। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ঘনিষ্ঠ প্রাক্তন শিক্ষক অরূপকুমার গত বিধানসভা নির্বাচনের আগেই বিজেপিতে যোগ দেন। তমলুক জেলার সভাপতি হয়েছেন হলদিয়ার বিধায়ক তাপসী মণ্ডল। তিনিও শুভেন্দুর হাত ধরেই সিপিএম থেকে বিজেপিতে আসেন।
লোকসভা নির্বাচনের আগে রাজ্য বিজেপি সংগঠনকে নতুন করে সাজাতে শুরু করল। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার জেলা সভাপতিদের তালিকা ঘোষণার পরে প্রতিটি জেলাতেই নতুন কমিটি তৈরি হবে। তার নীচে মণ্ডল কমিটিতেও হবে রদবদল। নতুন সাংগঠনিক কাঠামোয় দলের ‘আদি’ এবং ‘নব্য’ দুই শিবিরের নেতারাই যে প্রাধান্য পাবেন তার ইঙ্গিত রয়েছে রবিবার প্রকাশিত তালিকায়।
আনন্দবাজার অনলাইন আগেই জানিয়েছিল, গেরুয়া শিবিরের সাংগঠনিক মানচিত্রেও বেশ কিছু বদল আসবে। কিছু জেলার এলাকা পুনর্বিন্যাস হবে। সেটাও হয়েছে। বিজেপি বরাবরই ছোট ছোট সাংগঠনিক এলাকার পক্ষপাতী। সেই কারণে প্রশাসনিক জেলার উপরে নির্ভর না করে প্রতিটি লোকসভা এলাকা অনুযায়ী সাংগঠনিক জেলা বানায়। কয়েকটি আসনে সেটা ছিল না। এ বার তা সম্পূর্ণ করা হল। কলকাতা দক্ষিণের মধ্যেই ঢুকে ছিল যাদবপুর লোকসভা এলাকার দু’টি বিধানসভা যাদবপুর ও টালিগঞ্জ বিধানসভা। এই লোকসভা এলাকার বাকি পাঁচটি বিধানসভা ছিল দক্ষিণ ২৪ পরগনা (পূর্ব) জেলার মধ্যে। এ বার নতুন যাদবপুর জেলা তৈরি হল। এত দিন মুর্শিদাবাদে বিজেপির উত্তর ও দক্ষিণ ভাগ করে দু’টি সাংগঠনিক জেলা ছিল রাজ্য বিজেপির। এ বার তিনটি লোকসভা আসনের জন্য বহরমপুর, জঙ্গিপুর ও মুর্শিদাবাদ নামে নতুন জেলা তৈরি করল গেরুয়া শিবির।