Dilip Ghosh

বাংলা নয়, দিলীপকে ভিন্‌রাজ্যের দায়িত্ব নেতৃত্বের, ১৪ মাস পরে সাংগঠনিক কাজে ঘোষকে গুরুত্ব পদ্মের

২০২৩ সালের জুলাই মাস থেকেই বিজেপিতে পদহীন দিলীপ ঘোষ। তখন সাংসদ থাকলেও এখন তা-ও নন। সেই হিসাবে ১৪ মাস পরে বিজেপির সাংগঠনিক দায়িত্ব পেলেন। তবে বাংলায় নয়।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৮:০৬
BJP leader Dilip Ghosh got responsibility of party membership drive of Tripura

দিলীপ ঘোষ। —ফাইল ছবি।

এখন বিজেপির কোনও দায়িত্বেই নেই দিলীপ ঘোষ। প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপকে সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি করেছিল বিজেপি নেতৃত্ব। কিন্তু ২০২৩ সালের ২৯ জুলাই সেই দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় তাঁকে। তখনই তিনি শুধু সাংসদ হয়ে গিয়েছিলেন। গত লোকসভা নির্বাচনে পরাজয়ের পরে তাঁর আর কোনও পদ নেই। সবই ‘প্রাক্তন’। তবে রাজ্য বিজেপির কোর কমিটিতে এখনও রয়েছেন দিলীপ। যদিও সে ভাবে তাঁর কোনও সাংগঠনিক দায়িত্ব নেই বাংলায় বা জাতীয় স্তরে।

Advertisement

সেই দিলীপ ‘প্রাক্তন’ সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি হওয়ার দৌলতে পেলেন বিশেষ দায়িত্ব। গত ২ সেপ্টেম্বর বিজেপির সদস্য সংগ্রহ অভিযান শুরু হয়েছে। সেই অভিযানে ত্রিপুরায় পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তাঁকে। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী সপ্তাহেই তাঁকে উত্তর-পূর্বের ওই বিজেপি শাসিত রাজ্যে চলে যেতে হবে ওই অভিযানে যোগ দিতে।

লোকসভা নির্বাচনের আগে আগেই বিজেপির সর্বভারতীয় কমিটিতে রদবদল হয়েছিল। তখনই দিলীপকে বাদ দেওয়া হয়। সেই সময় বিজেপির তরফে বলা হয়েছিল, যাঁরা লোকসভা নির্বাচনে লড়াই করবেন, তাঁদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এর পরে নিজের মেদিনীপুর আসনেও লড়তে পারেননি দিলীপ। তাঁকে লড়তে হয় বর্ধমান-দুর্গাপুর আসন থেকে। বড় ব্যবধানে হারের পরে দিলীপ প্রত্যক্ষ রাজনীতি থেকে কিছু দিন দূরেই ছিলেন। তবে সম্প্রতি দলের কাজে তাঁকে নিয়মিত দেখা যাচ্ছে। আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে দলের লাগাতার ধর্না কর্মসূচিতে মাঝেমাঝেই আসছেন তিনি। শুক্রবারে হুগলির আরামবাগে একটি প্রতিবাদ মিছিলেও যোগ দিয়েছেন। তবে তাঁর উপরে কোনও সাংগঠনিক দায়িত্ব দেয়নি রাজ্য বিজেপি।

এর মধ্যেই বৃহস্পতিবার দিলীপকে ত্রিপুরায় সদস্য সংগ্রহ অভিযানের দায়িত্বের কথা জানানো হয়। এ নিয়ে প্রশ্ন করায় দিলীপ বলেন, ‘‘আমি তো কাজের মধ্যেই থাকতে ভালবাসি। রাজ্যে যেখানে যেখানে প্রতিবাদ কর্মসূচিতে আমায় যেতে বলা হয়েছে গিয়েছি। স্বাস্থ্য ভবন অভিযানের দিনেও শেষ পর্যন্ত ছিলাম। এ বার ত্রিপুরার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সেটাও করব। এটা আমার কাছে নতুন কিছু নয়।’’ দিলীপ এমন বললেও তাঁর ঘনিষ্ঠ অনুগামীরা এর মধ্যে আশার আলো দেখছেন। দল কোনও দায়িত্ব না দিলে রাজনীতিকে ‘টা টা বাই বাই’ করে দেবেন বলে দিলীপ ঘোষণা করার পরে অনেকেই চিন্তায় ছিলেন। এখন তাঁদের আশা, কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ত্রিপুরায় সদস্য সংগ্রহ অভিযানের পর্যবেক্ষক করার অর্থ আবার দিলীপকে রাজ্যে বা দেশের কোনও না কোনও দায়িত্ব দেওয়া হবে। এটা তাঁরই প্রাথমিক ইঙ্গিত।

প্রসঙ্গত, বিজেপির দলীয় সংগঠন অনুযায়ী দলকে প্রতি ছ’বছর অন্তর সব নেতা-কর্মীকেই নতুন করে সদস্য হতে হয়। গত ২ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে সদস্য করেন সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা। এর পরে রাজ্যে রাজ্যে শুরু হয়েছে অভিযান। বাংলায় দায়িত্ব পেয়েছেন রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য। ইতিমধ্য়েই উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় গিয়ে অভিযানের প্রস্তুতি বৈঠক করে এসেছেন শমীক। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, বাংলায় কেমন কাজ হচ্ছে তা দেখার মূল দায়িত্বে রয়েছেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক দুষ্মন্ত গৌতম। সেই সঙ্গে উত্তরবঙ্গের অভিযান পরিচালনার জন্য আরও এক জন পর্যবেক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে। দলের সর্বভারতীয় সম্পাদক অনিলকুমার অ্যান্টনি মেঘালয় ও নাগাল্যান্ডের পর্যবেক্ষকের পাশাপাশি উত্তরবঙ্গও দেখবেন।

বাংলায় যেমন শমীক, তেমন ত্রিপুরায় সদস্য সংগ্রহ অভিযানের প্রধান দায়িত্বে ওই রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক ভগবান দাস। তিনিই গোটা রাজ্যের অভিযান পরিচালনা করছেন। দিলীপের দায়িত্ব হবে জেলায় জেলায় গিয়ে নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করার পাশাপাশি সদস্যসংখ্যা যাতে বাড়ানো যায় তার জন্য প্রচার করা। ত্রিপুরা বিজেপির প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক তথা বিধায়ক কিশোর বর্মন বলেন, ‘‘দিলীপদা অনেক অভিজ্ঞ নেতা। এর আগেও উত্তর-পূর্বে সাংগঠনিক কাজে এসেছেন। আমরা তাঁকে যে পাচ্ছি সেটা খুবই আনন্দের বিষয়। আর আমরা এ বার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছি তাতে সদস্যসংখ্যা অতীতের তুলনায় অনেক বেশি বাড়বে।’’

আরও পড়ুন
Advertisement