SFI

চিরকুটে চাকরি বাম আমলে নয়, ছাত্র-মঞ্চে সরব বিমান

দৃশ্যতই ভিড়ে ঠাসা সমাবেশ দেখে এসএফআইয়ের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক এবং অধুনা বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমানবাবু ছাত্রদের লড়াই করে এগিয়ে যাওয়ার বার্তা দিয়েছেন।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৬:৩২
কলেজ স্ট্রিটে এসএফআইয়ের ছাত্র সমাবেশের মঞ্চে বিমান বসু। শুক্রবার।

কলেজ স্ট্রিটে এসএফআইয়ের ছাত্র সমাবেশের মঞ্চে বিমান বসু। শুক্রবার। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী।

উত্তর-পূর্ব এবং পূর্বাঞ্চলের দুই জাঠার শেষে শহরে চোখে পড়ার মতো ছাত্র সমাবেশ করল এসএফআই। ভিড়ে ঠাসা সেই সমাবেশের মঞ্চ থেকে নিয়োগ-দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব হলেন বর্ষীয়ান বাম নেতা বিমান বসু। আর উদ্দীপ্ত ছাত্র নেতৃত্বের ঘোষণা, রাস্তার দখল এ ভাবেই রাখতে পারলে এক দিন নবান্নেও তাঁরা পৌঁছবেন!

‘শিক্ষা বাঁচাও, দেশ বাঁচাও, সংবিধান বাঁচাও’-এর ডাক দিয়ে কোচবিহার এবং পূর্ব মেদিনীপুর জেলা দিয়ে বাংলায় ঢুকেছিল সিপিএমের ছাত্র সংগঠনের সর্বভারতীয় কর্মসূচির অঙ্গ দু’টি জাঠা। মোট ২২টি জেলা হয়ে দুই জাঠা কলকাতায় পৌঁছনোর পরে শুক্রবার কলেজ স্ট্রিটে ছিল ছাত্র সমাবেশ। তার আগে হাওড়া ও শিয়ালদহ স্টেশন, হেদুয়া, রাজা সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার থেকে একাধিক মিছিল এসেছিল কলেজ স্ট্রিটের দিকে। এক সময়ে উত্তর ও মধ্য কলকাতার বড় অংশ চলে যায় বাম ছাত্রদের দখলে

Advertisement

দৃশ্যতই ভিড়ে ঠাসা সমাবেশ দেখে এসএফআইয়ের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক এবং অধুনা বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমানবাবু ছাত্রদের লড়াই করে এগিয়ে যাওয়ার বার্তা দিয়েছেন। ওই মঞ্চ থেকেই দুর্নীতির প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, ‘‘আমি তো এখন বয়সের ভারে ন্যুব্জ! কিন্তু এত টাকার পাহাড় কখনও দেখিনি! এগুলো তো বানানো নয়! এই ঘটনা ঘটল কী করে? দিনের পর দিন লোয়ার প্রাইমারি, আপার প্রাইমারি, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে নিয়োগ পরীক্ষায় যাঁরা কৃতকার্য হয়েছেন, মেধা তালিকা-ভুক্ত হয়েছিলেন, চাকরি পাননি। তাঁরা রোদে পুড়ছেন, জলে ভিজছেন। এই অবস্থা হবে কেন?’’

বাম আমলে মেধার ভিত্তিতে যথাসম্ভব নিয়োগ হত বলে দাবি করে বিমানবাবুর মন্তব্য, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, চিরকুটে লিখে নাকি চাকরি হত। হ্যাঁ, হত! তবে তার জন্য ইতিহাস-ভূগোল জানতে হবে। বাম আমলে চিরকুটে চাকরি হয়নি। ঘটনা ঘটেছিল ১৯৭৩ সালে। তখন সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায় মুখ্যমন্ত্রী। সিগারেটের প্যাকেটে লিখে নাম পাঠিয়ে দেওয়া হত মহাকরণে। তাঁদের ঢোকাতে (চাকরিতে) হত।’’ তবে পরে বিমানবাবু এ-ও বলেছেন, অতীতে কংগ্রেস বা বামফ্রন্ট, কোনও জমানাতেই দুর্নীতির এমন ছবি দেখা যায়নি, যা এখন দেখা যাচ্ছে। বিমানবাবুর কথায়, ‘‘নীতি, নৈতিকতা, সভ্যতা, সুস্থ সমাজ ব্যবস্থা, সুস্থ সংস্কৃতি সব জলাঞ্জলি গিয়েছে! রাজ্যে ২০১১ সালের পরে একের পর এক যে ভাবে নিয়োগ হচ্ছে, তা দেখাই যাচ্ছে।’’

ছাত্র সমাবেশে এসএফআইয়ের সর্বভারতীয় নেত্রী দীপ্সিতা ধর বলেন, বিজেপিকে চালায় আরএসএস। তৃণমূলও আরএসএস-কে সন্তুষ্ট রখে চলে। বিজেপি ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়ছে বামেরাই। তাঁর বক্তব্য, ‘‘যদি রাস্তাগুলো এ ভাবে আমাদের থাকে, আগামী দিনে লোকসভা, বিধানসভা, নবান্নও আমাদের হবে।’’ প্রতিষ্ঠানকে প্রশ্ন করে যাওয়ার ‘স্পর্ধা’র কথা বলেন সংগঠনের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ময়ূখ বিশ্বাস। কয়েক দিন আগে তৃণমূলের ছাত্র সমাবেশ থেকে বাকিদের চ্যালেঞ্জ করা হয়েছিল, বাম ছাত্র-ছাত্রীরাই এ দিন তার জবাব দিয়েছেন বলে দাবি করেন এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য, রাজ্য সভাপতি প্রতীক-উর রহমান। এসএফআইয়ের ‘বিকল্প শিক্ষা নীতি’ক খসড়াও প্রকাশিত হয়েছে সমাবেশে।

আরও পড়ুন
Advertisement