বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন শুরুর আগের দিন, মঙ্গলবার নিউ টাউনের লেকসাইডে বিদেশি প্রতিনিধি এবং বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: ফেসবুক থেকে।
কলকাতার নিউ টাউনের বিশ্ববাংলা কনভেনশন সেন্টারে বুধবার থেকে শুরু হচ্ছে বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন (বিজিবিএস)। চলবে দু’দিন। ৪০টি দেশের ২০০ জন প্রতিনিধি-সহ ৫,০০০ বিশিষ্ট অংশ নেবেন এই সম্মেলনে। ৪০টির মধ্যে ২০টি দেশ ‘পার্টনার’ বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০টি দেশের রাষ্ট্রদূত এবং হাই কমিশনার সম্মেলনে যোগ দেওয়ার জন্য ইতিমধ্যেই কলকাতায় পৌঁছে গিয়েছেন। আগামী বছর রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে এই সম্মেলন মুখ্যমন্ত্রীর কাছে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। সম্মেলনে কত বিনিয়োগ এল, সে দিকে নজর থাকবে রাজ্যবাসী থেকে বিরোধী, সকলের। সম্মেলনের আগের দিন, মঙ্গলবার নিউ টাউনে চা-চক্রে বসেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে সম্মেলন নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
এ বারের সম্মেলনের অন্যতম প্রধান অতিথি ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং টোবগে। যদিও তাঁর আসা নিয়ে মঙ্গলবার সংশয় প্রকাশ করেছেন মমতা। নবান্নের বাইরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘ভুটানের প্রধানমন্ত্রী তো আমাকে গত অক্টোবর মাসে কনফার্ম (নিশ্চিত) করেছিলেন তিনি আসবেন। এখন জানি না দিল্লির সঙ্গে কী আছে!’’ মমতা আরও বলেন, ‘‘আমি এখনও পর্যন্ত জানি উনি আসবেন।’’ মুখ্যমন্ত্রীকে এ-ও প্রশ্ন করা হয়, দিল্লি ভুটানের রাজাকে বাংলায় আসার ক্ষেত্রে বাধা দিতে পারে বলে কি তিনি মনে করছেন? জবাবে মমতা বলেন, ‘‘সেটা আমি বলছি না।’’
বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে যোগদানের কথা ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের। নবান্নের আমলাদের একাংশ মনে করছেন, হেমন্তকে আমন্ত্রণ জানানোর নেপথ্যে ‘রাজনৈতিক চাল’ রয়েছে। যে হেতু হেমন্ত এমন একজন মুখ্যমন্ত্রী, যিনি সদ্য বিজেপিকে হারিয়ে ক্ষমতায় এসেছেন, সেই জয়ের ‘স্বীকৃতি’ হিসাবেই ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীকে এই শিল্প সম্মেলনের মঞ্চে হাজির করাতে চান মমতা। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, সম্মেলনে যোগ দেওয়ার কথা শিল্পপতি মুকেশ অম্বানী, সজ্জন জিন্দলের।
তৃতীয় বার ক্ষমতায় আসার পরেই মমতা স্পষ্ট করেছিলেন, এ বার তাঁর লক্ষ্য বাংলায় আরও বিনিয়োগ টেনে আনা। নিউ টাউনে সিলিকন ভ্যালিও তৈরি করেছে রাজ্য সরকার। যদিও বিরোধীদের বক্তব্য, প্রতি বার বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের নামে অর্থের ‘অপচয়’ হয়। তাদের অভিযোগ, এত দিনে যত ‘মউ’ স্বাক্ষরিত হয়েছে, তার ১০ শতাংশ বিনিয়োগ হলে বাংলায় কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পেত। পাল্টা সরকারের বক্তব্য, জমিনীতি ‘সুদৃঢ়’ করেই রাজ্য সরকার শিল্পায়নের পথে এগোচ্ছে। কারও থেকে জোর করে জমি অধিগ্রহণের পক্ষে নয় রাজ্য সরকার।