Vegetable Price Hike

খেতে জমে জল, ফের আনাজের দাম বাড়ার সম্ভাবনা

জেলার মধ্যে সব থেকে বেশি আনাজ উৎপাদন হয় পূর্বস্থলীর দু’টি ব্লকে। পাইকারি বাজারে চাষিরা ফসল বিক্রি করেন। আড়তদারদের থেকে তা কিনে রাজ্যের নানা বাজারে পাঠান ফড়েরা।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কালনা শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০২৪ ০৮:২৬
জলের নীচে আনাজ খেত আউশগ্রামে। নিজস্ব চিত্র

জলের নীচে আনাজ খেত আউশগ্রামে। নিজস্ব চিত্র

ক’দিন আগেই তীব্র গরমে জমিত শুকিয়ে যাচ্ছিল আনাজ। বাজারে চড়ছিল দাম। জোগান বাড়ায় পরিস্থিতি একটু শোধরানো শুরু হতেই ফের অতিবৃষ্টিতে ডুবেছে আনাজ খেত। বহু ফসল জমিতেই পচে যাচ্ছে বলে দাবি করেছেন চাষিরা। তাঁদের দাবি, বার বার দুর্যোগে আনাজ চাষে ক্ষতি হলেও বিমার কোনও ব্যবস্থা নেই।

Advertisement

জেলার মধ্যে সব থেকে বেশি আনাজ উৎপাদন হয় পূর্বস্থলীর দু’টি ব্লকে। পাইকারি বাজারে চাষিরা ফসল বিক্রি করেন। আড়তদারদের থেকে তা কিনে রাজ্যের নানা বাজারে পাঠান ফড়েরা। চাষিদের দাবি, বর্তমানে বেশির ভাগ জমিতে জল জমে রয়েছে। নিচু এলাকা থেকে জমা জল বার হতে বেশ কিছু দিন লাগবে। তার উপর আগামী কয়েক দিনও বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। পূর্বস্থলীর সাতপোতা গ্রামের আনাজ চাষি দশরথ সরকার বলেন, ‘‘কয়েক দিন আগে গরমে আনাজের গাছ নষ্ট হয়ে ক্ষতি হল। ফের জল জমে উচ্ছে, পটল, ঝিঙে, করলা গাছ মরতে বসেছে।’’ তাঁর দাবি, প্রতিবছর পুজোর আগে ফুলকপি-সহ বেশ কিছু নতুন আনাজ জমি থেকে তোলা হয়। এ বার তা সম্ভব হবে না। মেঘ, বৃষ্টি শেষ রোদ উঠলেই গাছে রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটবে। পূর্ব সাহাপুরের বাসিন্দা প্রবীর বিশ্বাসও বলেন, ‘‘আগের ধাক্কা কাটিয়ে নতুন উদ্যমে বিঘে চারেক জমিতে ঢ্যাঁড়শ, বরবটি, পুঁইশাক, ঝিঙে, ফুলকপি, ছাঁচি কুমড়োর চাষ করেছিলাম। বৃষ্টির ধাক্কায় কপির চারা নষ্ট হয়ে গিয়েছে। বাকি আনাজের গাছও জলে ডুবে। ঢ্যাঁড়শ ছাড়া কিছু উদ্ধার করা যাবে না।’’ কুলেদা গ্রামের রোহিত মোল্লা বিঘা খানেক জমিতে মুলো, বেগুনের চাষ করেছিলেন। তাঁরও আশঙ্কা, কিছুই পাওয়া যাবে না।

আনাজ চাষিদের দাবি, ধারাবাহিক দুর্যোগে বার বার ফসল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বাড়ছে দেনা। বিমার সুবিধা না থাকায় চাষ ক্রমশ আতঙ্কের হয়ে যাচ্ছে। পূর্বস্থলী ২ ব্লকের এক আড়তদার বলেন, ‘‘যতটুকু আনাজ পাওয়া যায় চাষিরা মরিয়া হয়ে তুলে নিচ্ছেন। কয়েকদিন কিছুটা জোগান থাকবে আনাজের। জোগান কমে গেলেই চড়বে দাম।’’ ইতিমধ্যে খুচরো বাজারে আনাজের দাম কিছুটা বেড়েছে।

রাজ্যের এক উদ্যানপালন বিশেষজ্ঞ পলাশ সাঁতরা বলেন, ‘‘ধান, পাট জমা জলে কিছু দিন থাকলেও তেমন অসুবিধা হয় না। আনাজের জমিতে ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। রোদ উঠলে ছত্রাকজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব হতে পারে। সেই মতো ছত্রাকনাশক বা ব্যাকটিরিয়া নাশক দিতে হতে পারে।’’ ফের চাষের ক্ষেত্রে অল্প সময়ে নোটে শাক, পালং শাক, পুঁইশাক, লাউশাক, কুমড়ো শাকের মতো আনাজের দিকে ঝুঁকলে চাষিরা লাভবান হবেন বলে তাঁর দাবি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement