জামুড়িয়ার ‘ভ্যাকসিন রথ’। নিজস্ব চিত্র।
ভ্যাকসিন রথ। নামটা শুনেই হয়তো একটু অবাক লাগতে পারে। নামে রথ হলেও আদতে এটি একটি বাস। কিন্তু করোনা আবহে এটি নিছক আর বাস নেই। পশ্চিম বর্ধমানের জামুড়িয়ার প্রত্যন্ত গ্রামগুলির কাছে এটাই এখন ‘সঞ্জীবনী’ হয়ে উঠেছে।
তা হলে ‘ভ্যাকসিন রথ’ বলা হচ্ছে কেন? তিলকা মাঝি আদিবাসী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক দ্বীপনারায়ণ নায়েক বলেন, ‘‘মূলত এই বাসকে টিকাকরণের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। জামুড়িয়ার প্রত্যন্ত গ্রামের মহিলাদের এই বাসে চাপিয়ে নিখরচায় টিকাকরণ কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। টিকা নেওয়ার পর আবার তাঁদের গ্রামে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।’’
জামুড়িয়ার প্রত্যন্ত গ্রামগুলিতে টিকা নিয়ে অধিকাংশ মহিলাদের মধ্যে এখনও একটা ভীতি রয়েছে। টিকা নিলে মৃত্যু হতে পারে বা শারীরিক কোনও ক্ষতি হতে পারে এই আশঙ্কায় বহু গ্রামবাসী টিকাবিমুখ হচ্ছেন। করোনার তৃতীয় ঢেউ চোখ রাঙাচ্ছে। তার আগেই গ্রামবাসীদের কুসংস্কার মুক্ত করে টিকা নেওয়ার ব্যাপারে সচতেন করতে উদ্যোগী হয়েছেন দ্বীপনারায়ণ। এক একটি গ্রাম থেকে লোক নিয়ে এসে তাঁদের টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করছেন তিনি। গ্রামবাসীদের আনতে যে বাসটি ব্যবহার করা হচ্ছে, তার নাম দিয়েছেন ভ্যাকসিন রথ।
মঙ্গলবার জামুড়িয়ার জবা গ্রামের ১০০ আদিবাসীকে প্রথম টিকা দেওয়া হল। তাঁদের ‘ভ্যাকসিন রথ’-এ চাপিয়েই আখলপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। টিকা দেওয়ার পর গ্রামবাসীদের হাতে তুলে দেওয়া হয় গিফট কুপনও। সেই সঙ্গে জবা গ্রামকে ‘নিরাপদ’ বলেও ঘোষণা করা হয়। আর্থিক এবং সামাজিক ভাবে পিছিয়ে পড়া গ্রামবাসীদের ধারাবাহিকভাবে টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে বলে আশ্বাস দেন শিক্ষক দ্বীপনারায়ণ।