কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে ঘিরে বিক্ষোভ তৃণমূল ছাত্র পরিষদের। — নিজস্ব চিত্র।
বৃহস্পতিবার সারারাত বিক্ষোভ দেখানোর পর শুক্রবার সকালেও চলছে কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র বিক্ষোভ। বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে কার্যত আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখান তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্যরা। এর পর রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ পুলিশ তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর থেকে বার করে নিয়ে যায়। তবে আন্দোলন থামাননি ছাত্রছাত্রীরা। শুক্রবার কলেজের অধ্যাপকরাও আন্দোলনে শামিল হবেন বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতা অভিনব মুখোপাধ্যায়।
গন্ডগোলের সূত্রপাত বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দাবি, বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্জ়িকিউটিভ কাউন্সিলের বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু রাজ্য সরকার সেই বৈঠক করতে বারণ করেছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও গোপন ভাবে সেই বৈঠক করা হয়েছে বলে অভিযোগ ছাত্রছাত্রীদের একাংশের। অনুমতি না থাকা সত্ত্বেও বৈঠক কেন? প্রশ্ন তুলে সরব হয় তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। একই সঙ্গে উপাচার্যের ঘর থেকে ‘উদ্ধার হওয়া’ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ছবি লাগানো একটি বইকে কেন্দ্র করেও বিক্ষোভ দেখান তৃণমূলের ছাত্র পরিষদের সদস্যরা। যদিও ওই বই তাঁর কক্ষে কোথা থেকে এল, তা তিনি জানেন না বলেই দাবি করেছেন উপাচার্য দেবাশিস।
এই নিয়ে উপাচার্যের সঙ্গে দফায় দফায় বচসা চলে প্রায় সারাদিন। এর পর উপাচার্যকে তাঁর অফিসে আটকে রেখে বিক্ষোভ চালাতে থাকেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্যরা। যদিও উপাচার্যের দাবি, যা করা হয়েছে তা আইন মেনেই করা হয়েছে এবং আচার্য তথা রাজ্যের রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের কথা মতো করা হয়েছে। তাঁর অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে যাঁরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন, তাঁদের অনেকেই বহিরাগত। রাজনৈতিক কারণেই এই আন্দোলন বলেও দাবি করেন দেবাশিস।
অন্য দিকে, এই প্রসঙ্গে, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতা অভিনব মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের অনুমোদন ছাড়া উপাচার্য এগ্জ়িকিউটিভ কাউন্সিলের বৈঠক করছেন। নিয়ম না মেনে এই বৈঠক করার জন্য আমরা উপাচার্যকে আটকে রেখে বিক্ষোভ করেছি। ওই বৈঠক বাতিল না করা হলে আন্দোলন চলবে। আমাদের মধ্যে কোনও বহিরাগত নেই।’’ এ রকম চলতে থাকলে আগামী দিনে আরও বৃহত্তর আন্দোলন করা হবে বলেও জানিয়েছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ।
এর পর রাত সাড়ে ১০ টা নাগাদ উপাচার্য পুলিশের সহযোগিতায় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাড়ি যান। তবে বিক্ষোভ থামাননি তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্যরা। শুক্রবারও আন্দোলন চলবে বলেই তাঁরা জানিয়েছেন।