রানিগঞ্জ জুটমিল। নিজস্ব চিত্র।
তেরো বছর পরে মঙ্গলপুর শিল্পতালুকে বেসরকারি সংস্থা পরিচালিত জুটমিল চালু হতে চলেছে। আসানসোল শ্রম দফতরের এক আধিকারিক জানান, ১৩ নভেম্বর শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটককে মিল কর্তৃপক্ষ চিঠি দিয়ে কারখানা চালুর কথা জানিয়েছেন।
শ্রম দফতর সূত্রের খবর, জুটমিল কর্তৃপক্ষের তরফে রাঘবেন্দ্র গুপ্ত চিঠি লিখে জানিয়েছেন, ১ ডিসেম্বর থেকে রক্ষণাবেক্ষণের কাজ শুরু হবে। সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত একটি পালিতে কাজ হবে। এর মধ্যে এক ঘণ্টা বরাদ্দ থাকবে টিফিনের জন্য। বাকি ১০ ঘণ্টা কাজ হবে। যার মধ্যে দু’ঘণ্টা কাজের জন্য অতিরিক্ত মজুরি (ওভারটাইম) দেওয়া হবে। ধাপে ধাপে কর্মী নিয়োগ করা হবে। তবে, ‘সাসপেনশন অব ওয়ার্ক’ চলাকালীন মজুরি দেওয়া হবে না।
আজ, শনিবার জুটমিল পরিদর্শনে আসার কথা একটি ‘টেকনিক্যাল টিমের’। কারখানার যন্ত্রপাতি ও পরিকাঠামো কী অবস্থায় আছে তা দেখবেন প্রতিনিধিরা। স্থানীয় প্রশাসনকে সে ব্যাপারে অবহিত করার জন্য জুটমিল কর্তৃপক্ষের তরফে আর্জি জানানো হয়েছে। মিল পরিচালনায় প্রশাসনের সাহায্যও চেয়েছেন কর্তৃপক্ষ। জুটমিল খোলার বিষয়ে ১৩ নভেম্বরই শ্রমমন্ত্রীর দফতরে তাঁর সঙ্গে কারখানা কর্তৃপক্ষের বৈঠক হয়েছিল। তার ভিত্তিতেই জুটমিল খোলার বিষয়ে মন্ত্রীকে চিঠি দেন কর্তৃপক্ষ।
২০০৩-২০০৪ সালে মঙ্গলপুরে জুটমিলটি চালু হয়েছিল। ২০১১-র জুনে কারখানা বন্ধ হয়ে যায়। সেই সময় ১,৫০০ স্থায়ী ও প্রায় ৪০০ ঠিকাকর্মী ছিলেন। রাজ্য সরকার ১,৩০৯ জনকে মাসিক দেড় হাজার টাকা করে ভাতা দেওয়া শুরু করে। এই অনুদান ৫৮ বছর হয়ে গেলে আর পাওয়া যায় না। সেই অনুযায়ী বর্তমানে ১,১০০ জন ভাতা পাচ্ছেন।
সিটু অনুমোদিত মঙ্গলপুর জুট মিল ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সম্পাদক উমাপদ গোপের দাবি, এটা তাঁদের দীর্ঘ আন্দোলনের ফল। কয়েক বছর আগে কর্তৃপক্ষ কারখানার সমস্ত যন্ত্রপাতি খুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। তাঁরা কোনও যন্ত্র খুলে নিয়ে যেতে দেননি। এর পরে সম্প্রতি শ্রমমন্ত্রীর পৌরহিত্যে সিটু ও আইএনটিটিইউসি নেতৃত্বকে নিয়ে বৈঠক হয়। সেখানে সিটু নেতা বংশগোপাল চৌধুরী এবং আইএনটিটিইউসি নেতা অভিজিৎ ঘটক মিল চালুর আবেদন জানান। মিল কর্তৃপক্ষ ১৩ নভেম্বর শ্রমমন্ত্রীকে চিঠি লিখে কারখানা চালুর কথা জানিয়েছেন।
এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন উমাপদ। তবে তাঁর দাবি, “যাঁরা চাকরি করতেন, তাঁদেরই অগ্রাধিকার দিতে হবে। এ ছাড়া কর্মীদের যাতে সমস্ত সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের আওতায় আনা হয়, সে ব্যবস্থা কর্তৃপক্ষকে করতে হবে।” অভিজিৎ জানিয়েছেন, শ্রমমন্ত্রীর দীর্ঘ দিনের প্রচেষ্টায় এই মিলের কর্মীদের পাশাপাশি এলাকাবাসীর মুখেহাসি ফুটবে।