সাইকেলে চেপে প্রচার চালাচ্ছেন কংগ্রেস কর্মী প্রভাত দাস। — নিজস্ব চিত্র।
পঞ্চায়েত ভোটে বিরোধীরা বার বার কারচুপির অভিযোগ তুলেছে। ক্ষোভও উগরে দিয়েছে তারা। পূর্ব বর্ধমানের কালনার কংগ্রেস কর্মী প্রভাত দাস সেখানেই থেমে থাকতে চান না। তিনি মানুষের ঘরে ঘরে ঘুরে জানাতে চান, ‘‘ভোট লুট করে পঞ্চায়েত ভোটে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে।’’
৭২ বছর বয়সে ভাঙা পায়ে সাইকেল চালিয়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরে চলেছেন পঞ্চায়েত ভোটে হেরে যাওয়া কংগ্রেস প্রার্থী প্রভাত। যদিও প্রভাতের এই পদক্ষেপকে গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল। শাসকদল জানিয়েছে, ‘জনহিতকর’ প্রকল্পের জন্যই কালনাবাসী তাদের ভোট দিয়েছে।
নিজের সাইকেলের সামনে একটি পোস্টার ঝুলিয়েছেন প্রভাত। তাতে লিখেছেন, ‘‘দিকে দিকে গণতন্ত্রকে হত্যা করে পঞ্চায়েত ভোট হল। আমিও তার শিকার। হারার পরেও মানুষের পাশে থেকে কাজ করতে চাই।’’ সেই সাইকেল নিয়ে এখন এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে ঘুরে চলেছে প্রভাত। তাঁর কথায়, ‘‘যত ক্ষণ প্রাণ রয়েছে, এই কথা প্রচার করেই যাব।’’
প্রভাতের বাড়ি পূর্ব বর্ধমানের কালনা-১ ব্লকের সিমলন গ্রামে। তাঁদের সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবার। বিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক প্রভাতের বাবা তারাপদ দাস কংগ্রেস করতেন। প্রভাত জানান, বাবার হাত ধরে স্কুলজীবন থেকে তিনি কংগ্রেস পার্টির মিটিং-মিছিলে যেতেন। সেই থেকেই কংগ্রেস পার্টির প্রতি তাঁর শ্রদ্ধা ও ভালবাসা তৈরি হয়। তাঁর অভিযোগ, সিপিএমের লোকজন মেরে তাঁর ডান পা ভেঙে দিয়েছিলেন। তবুও কংগ্রেস ছাড়েননি। এ বারের পঞ্চায়েত ভোটে কংগ্রেসের প্রার্থী হয়ে প্রভাত কালনা এক নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির ১৯ নম্বর আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। প্রভাতবাবুর অভিযোগ, “শুধু ভোটের দিনেই নয়, গণনার দিনেও রাজ্যের অন্য জায়গার মতো কালনাতে ভোট লুট হয়েছে। সেই ভোট লুটের শিকার আমিও।’’
কংগ্রেস নেতা গৌরব সমাদ্দার বলেন, ‘‘প্রভাত দাস কংগ্রেস দলের সম্পদ।’’
যদিও ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি শান্তি চাল বলেন, ‘‘ওঁর কর্মকাণ্ডকে গুরুত্ব দেওয়ার কিছু দেখছি না। কালনাবাসী জানেন, তৃণমূল সরকারের রাজত্বে কালনার কতটা উন্নয়ন হয়েছে, কালনার কত মানুষ জনহিতকর প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছে। সেই কারণে কালনাবাসীর ভোটে তৃণমূলের প্রার্থীদের জয় হয়েছে।’’