Bardhaman Medical College

চার মাসে কম রোগী ভর্তি, তবে ভোগান্তি

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, এপ্রিল থেকে জুলাই পর্যন্ত বহির্বিভাগে রোগীর সংখ্যা ছিল সওয়া এক লক্ষ থেকে এক লক্ষ তিরিশ হাজারের মতো।

Advertisement
সুপ্রকাশ চৌধুরী
বর্ধমান শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০২৪ ০৮:৩৪
বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ।

বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ। —ফাইল চিত্র।

আর জি করের ঘটনা ও পরবর্তী আন্দোলনের আবহে গত কয়েক মাসে রোগী ভর্তির সংখ্যা কমেছে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। কমেছে সাধারণ অস্ত্রোপচারের সংখ্যাও। অন্তত পরিসংখ্যান বলছে সে কথা। চিকিৎসকদের দাবি, আন্দোলনের মাঝেও সমস্ত পরিষেবা সচল রেখেছিলেন তাঁরা। কিন্তু অনিশ্চয়তার কারণে মুখ ফেরান বহু রোগী। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, এই সময় পুরোদস্তুর কাজ হয়েছে। বিরল এবং জটিল অস্ত্রোপচারে সাফল্য এসেছে। এগুলিই সদর্থক বার্তা দেবে মানুষকে।

Advertisement

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, এপ্রিল থেকে জুলাই পর্যন্ত বহির্বিভাগে রোগীর সংখ্যা ছিল সওয়া এক লক্ষ থেকে এক লক্ষ তিরিশ হাজারের মতো। অগস্টে সেই সংখ্যা নেমে যায় এক লক্ষ পাঁচ হাজারে। সেপ্টেম্বরে মাসে তা ছিল ১,১২,৫৫২ জন। রোগী ভর্তির সংখ্যাও জুলাইয়ে দশ হাজারের বেশি থেকে সেপ্টেম্বরে নেমে আসে সাড়ে আট হাজারের কাছাকাছি। অগস্টে সংখ্যাটা অবশ্য আরও কমে গিয়েছিল। ৭ হাজার ৫০৬টি ক্ষেত্রে জরুরি ভিত্তিতে রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। বড় অস্ত্রোপচার হয়েছে ১ হাজার ৪৬৩টি। ১ হাজার ৪৭৬ জন শিশুর জন্ম হয়েছে। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার স্পেশালিটি শাখা অনাময়েও ২১২টি অস্ত্রোপচার হয়েছে। বাকি পরিষেবাও দেওয়া হয়েছে প্রয়োজন মতো।

তবে জুনিয়র চিকিৎসকেরা কাজে না থাকায় জরুরি বিভাগে ও বহির্বিভাগে রোগী পরিষেবা স্বাভাবিক থাকলেও অস্ত্রোপচারের ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দিয়েছে বলে হাসপাতালের একাংশের দাবি। বহির্বিভাগে সিনিয়র চিকিৎসকেরা পরিষেবা দিলেও প্রতিদিনই দীর্ঘ লাইন দাঁড়িয়ে থাকতে হয় রোগীদের। এই হাসপাতালে গড়ে মাসে নয় থেকে দশ হাজার রোগী ভর্তি হন।প্রতি মাসে গড়ে দেড় হাজার শিশু জন্মায়। অস্ত্রোপচার হয় প্রায় দু’হাজার। এই সব ক’টি সংখ্যা কমেছে এই কয়েক মাসে। রোগীদের দাবি, অনেক ক্ষেত্রেই জরুরি কারণ ছাড়া সাধারণ অস্ত্রোপচারের জন্যও অপেক্ষা করতে হয়। সেই কারণেই হাসপাতাল থেকে মুখ ফিরিয়ে নার্সিংহোমে গিয়েছেন তাঁরা।

যদিও বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ মৌসুমী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে বহির্বিভাগে সিনিয়র চিকিৎসকরা পরিষেবা স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছেন। কিন্তু, অনেক ক্ষেত্রেই জুনিয়র চিকিৎসকদের প্রয়োজন রয়েছে। বিশেষ করে যে কোনও ধরনের অস্ত্রোপচারের সময় ও অস্ত্রোপচারের পরবর্তীকালে রোগীর চিকিৎসার জন্য জুনিয়র চিকিৎসকদের প্রয়োজন। জরুরি ভিত্তিতে জুনিয়র চিকিৎসকেরা সেই সাহায্য করেছেন। তাই হাসপাতালের বহির্বিভাগ ও জরুরি বিভাগে রোগীর সংখ্যা সে ভাবে কমেনি।’’ তবে নতুন করে অনেকেই ভর্তি হতে চাইছেন না, মেনে নিয়েছেন তিনি। হাসপাতালের সুপার তাপস ঘোষ বলেন, ‘‘কঠিন পরিস্থিতি স্ত্রী ও প্রসূতি বিভাগে বড় অস্ত্রোপচার হয়েছে। একদিকে ন’টি যমজ শিশুর জন্ম হয়েছে এখানে। সবাই ভরসা করেছেন। জুনিয়র সিনিয়র চিকিৎসকেরা মিলিয়ে সেই বিশ্বাসের মর্যাদা রেখেছেন।’’

আরও পড়ুন
Advertisement