নাদনঘাটের ভাঙা সেতু। নিজস্ব চিত্র।
নাদনঘাট সেতুতে দীর্ঘদিন ধরে বাস ও ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ। ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন বহু মানুষ। নবদ্বীপ-বর্ধমান রোডে খড়ি নদীর উপরে প্রায় ২০০ মিটার লম্বা এই সেতুটি ১৯৮০-এর পরে তৈরি হয়। স্থানীয়দের দাবি, ভারী যান চললে সেতু কাঁপত। মাস তিনেক আগে সেতুর উপরের একাংশে ঢালাই উঠে লোহার খাঁচা বেরিয়ে পড়ে। পূর্ত দফতরের প্রতিনিধিরা পরিদর্শনের পরে সেতুটি দুর্বল ঘোষণা করে সাইনবোর্ড ঝোলান। প্রথমে যে অংশের ঢালাই উঠে লোহার খাঁচা বেরিয়েছিল, সেই অংশ গার্ড রেল দিয়ে ঘেরা হয়। তার পাশ দিয়ে যাতায়াত করে টোটো, অটোর মতো ছোট যান। মেরামতির কাজ শুরু করে পূর্ত দফতর। তখন ফ্লেক্স টাঙিয়ে জানানো হয়েছিল, ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ১০ টনের বেশি বাস-সহ পণ্যবাহী গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকবে।
সেই সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও এখনও সেতুতে ভারী যানবাহন চলাচলা শুরু হয়নি। এই সেতু দিয়ে নবদ্বীপ-বর্ধমান, কৃষ্ণনগর-বর্ধমান, কালনা-নাদনঘাট এবং আরও কিছু রুটের বাস যাতায়াত করে। বাস চলাচল বন্ধ থাকায় কয়েক হাজার মানুষ সমস্যায় পড়েছেন। সেতুর এক দিকে এক কিলোমিটার দূরে রয়েছে নওপাড়া মোড়। অন্য দিকে এক কিলোমিটার দূরে নাদনঘাট বাসস্ট্যান্ড। বাস চলাচল বন্ধ হওয়ায় বাধ্য হয়ে সেতু পার করতে অটো-টোটোর উপরে নির্ভর করতে হচ্ছে যাত্রীদের। এতে খরচ বাড়ছে। অনেকের দাবি, নওপাড়া মোড় থেকে মাঝেমধ্যেই বাস মেলে না। যেতে হয় আরও দূরে নাদনঘাট মোড়ে।
শ্যামল মণ্ডল নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘পূর্ত দফতর জানিয়েছিল ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ভারী যানবাহন চলাচল করবে না। ভেবেছিলাম তার পরে চালু হবে বাস পরিষেবা। এখনও সেতুতে ভারী যানবাহন চলাচলের অনুমতি মেলেনি। জানি না আর কত দিন ভোগান্তি পোহাতে হবে।’’
মহকুমা প্রশাসন সূত্রের খবর, আজ, সোমবার সেতু নিয়ে বৈঠক হবে কালনার মহকুমাশাসকের কার্যালয়ে। পূর্ত দফতরের কয়েক জন কর্তা ভার্চুয়াল মাধ্যমে তাতে হাজির থাকবেন। মহকুমাশাসক শুভম আগরওয়াল বলেন, ‘‘সেতু নিয়ে বৈঠকে আলোচনার পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’ পূর্বস্থলী ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দিলীপ মল্লিক বলেন, ‘‘সেতু দিয়ে এখন টোটো-অটোর মতো যান চলাচল করছে। সেতুর নীচের অবস্থা ভাল নেই বলেই হয়তো এখনও ভারী যান চলাচলের অনুমতি মেলেনি। সমস্যা কোথায় তা বৈঠকে জানা যাবে।’’