এমনই অবস্থা পুকুরের। নিজস্ব চিত্র ।
সংস্কারের অভাবে মজে যেতে বসেছে কাঁকসার আড়া শিবতলার পিছনের ঐতিহ্যবাহী পুরনো পুকুর। এলাকাবাসী জানিয়েছেন, এই পুকুরের সঙ্গে মানুষের ধর্মীয় ভাবাবেগ জড়িয়ে রয়েছে। সেখানে দিন দিন ফেলা হচ্ছে আবর্জনা। অবিলম্বে পুকুরের সৌন্দর্যায়নের ব্যবস্থা করা হোক। কাঁকসা পঞ্চায়েত সমিতির তরফে বিষয়টি দেখার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মলানদিঘি পঞ্চায়েতের আড়া রাঢ়েশ্বর শিব মন্দির ভারতের সর্বেক্ষণ দফতরে অধীনে রয়েছে। এই মন্দিরের অদূরেই রয়েছে বহু পুরনো পুকুর। কথিত আছে, সেন বংশের রাজা বল্লাল সেন আড়া এলাকায় শিব মন্দির তৈরির আগে স্বপ্নাদেশ পান যে মন্দিরের অদূরে একটি পুকুরে শিবলিঙ্গ রয়েছে। সেই পুকুর থেকে শিবলিঙ্গ তুলে আড়া শিব মন্দির প্রতিষ্ঠা করা হয়। এলাকাবাসী জানান, শিব মন্দিরে আসা লোকজনের প্রায় প্রত্যেকেই পুকুর দর্শন করেন। অনেকে পুকুরের জল বাড়ি নিয়ে যান। এলাকায় ধর্মীয় অনুষ্ঠানে এই পুকুরের জল ব্যবহার করা হয়। হয় প্রতিমা বিসর্জন। স্থানীয় বাসিন্দা রঘুনাথ মণ্ডল বলেন, “এলাকায় ধর্মরাজের পুজোয় পুকুরের জল ব্যবহার করা হয়। অথচ, বেশ কয়েক বছর পুকুরটি অযত্নে পড়ে রয়েছে।”
এ দিকে, দীর্ঘ দিন পুকুর সংস্কার না হওয়ায় আগাছায় ভরে গিয়েছে। দূর থেকে পুকুরের জল বোঝা যায় না। প্রায় পাঁচ বিঘা আয়তনের এই পুকুর আর পুকুর নেই। জঙ্গলে পরিণত হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা তথা সমাজকর্মী বরুণ ঘোষাল বলেন, “পুকুরটি এলাকার ঐতিহ্যবাহী স্থান। সেই পুকুর অযত্নে নষ্ট হোক আমরা চাই না।” স্থানীয়দের একাংশের অভিযোগ, পুকুরের চারপাশে বহু মানুষ শৌচকর্ম করেন। এতে পরিবেশ নষ্টের পাশাপাশি পুকুরের ঐতিহ্য নষ্ট হচ্ছে। অনেক সময় দিনে দুপুরে পুকুরের পাড়ে মদ্যপান করেন অনেকে। পুকুরের ঘাটে থাকা একটি সৌরবাতিও ভেঙে ফেলেছে দুষ্কৃতীরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েক জন বাসিন্দার অভিযোগ, “কয়েক মাস আগে পুকুরটি ঘিরে ফেলার তোড়জোড় শুরু হয়েছিল। প্রশাসনের নজর পড়ায় সেই কাজ বন্ধ হয়েছে। এখন প্রশাসন কী ব্যবস্থা নেয় সেটাই দেখার।”
মলানদিঘি পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের দাবি, পুকুরের পাড়ে আশপাশের বহুতলের আবাসনের অনেক বাসিন্দা আবর্জনা ফেলে যাচ্ছেন। অনেক জনকে সতর্ক করা হয়েছে। পুকুরের পাড় পরিষ্কার রাখতেও নজর দেওয়া হচ্ছে। উপপ্রধান বিশ্বরূপ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “পুকুর সংস্কারের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে। পুকুরে নজরদারি চালানো হবে।”