—প্রতীকী চিত্র।
দুর্গাপুর-বাঁকুড়া যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম হল দুর্গাপুর থেকে ওড়িশার নয়াগ্রাম সীমানাগামী ৯ নম্বর রাজ্য সড়ক। তাই, এই পথে সরাসরি রেল যোগাযোগ গড়ে তোলার দাবি দীর্ঘ দিনের। রেলমন্ত্রকের তরফে এই রুটে সমীক্ষা কাজ শুরু হয়েছে বলে দাবি ন বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁয়ের।
বাঁকুড়া থেকে মশাগ্রাম পথে রয়েছে বেলিয়াতোড় স্টেশন। বেলিয়াতোড় থেকে দুর্গাপুরের দূরত্ব প্রায় ২৮ কিলোমিটার। বণিক সংগঠনগুলির সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, এই রেলপথ তৈরি হলে দুর্গাপুর ও বাঁকুড়ার মধ্যে যোগাযোগের সরাসরি ও বিকল্প ব্যবস্থা গড়ে উঠবে। দামোদরের দক্ষিণের জেলাগুলির সঙ্গে দুর্গাপুরের সরাসরি যোগাযোগ তৈরি হবে। ওই সব জেলা থেকে দুর্গাপুরে কৃষিজ পণ্য সহজে আসবে। এতে দুর্গাপুরবাসীর সুবিধা হবে। বড়জোড়া শিল্পতালুক ও খনি অঞ্চলের সঙ্গে দুর্গাপুরের যোগাযোগ বাড়বে। ফলে শিল্পেরও প্রসার হবে।
দুর্গাপুরে রয়েছে বহু বেসরকারি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল, ইংরেজি মাধ্যম স্কুল, কলেজ। প্রতিদিন বহু ছাত্রছাত্রী দুর্গাপুরে যাতায়াত করেন। কর্মসূত্রে দুর্গাপুরের বহু মানুষ যেমন প্রতিদিন বাঁকুড়ায় যান, তেমন উল্টোটাও ঘটে। বিশেষ করে দুর্গাপুরের বহু বেসরকারি কারখানায় বাঁকুড়ার অনেকে ঠিকা শ্রমিকের কাজ করেন। তাঁরা প্রতিদিন আসা-যাওয়া করেন। বাঁকুড়া, পুরুলিয়া প্রভৃতি জেলায় বহু পর্যটনকেন্দ্র রয়েছে। দুর্গাপুরের অনেকে ঘুরতে যান।
সড়কপথে যানবাহনের চাপ দিন দিন বাড়ছে। বাস ও অন্য যানবাহনের সঙ্গে শিল্পতালুকের ভারী ট্রাক, লরি যাতায়াত করে। স্থানীয়দের দাবি, মাঝে মাঝেই দুর্ঘটনা ঘটে। এতে যানজট হয়। তখন যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায়। বিশেষ করে বড়জোড়া মোড়ে প্রায়ই যানজট হয়। আবার দুই জেলার বাস মালিকদের দ্বন্দ্বের জেরে টানা বাস বন্ধের ঘটনাও ঘটে। ফলে দুর্ভোগে পড়তে হয়। রেল যোগাযোগ গড়ে উঠলে শুধু বাসের উপরে নির্ভর করতে হবে না। দুর্গাপুর থেকে কলকাতা যাওয়ার একটি বিকল্প রেলপথও খুলে যাবে। পুরুলিয়ার সঙ্গেও দুর্গাপুরের বিকল্প যোগাযোগ তৈরি হবে।
সাংসদ জানিয়েছেন, ২০২৪ সালের জুলাইয়ে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের সঙ্গে দেখা করে এই রুটে রেল যোগাযোগ গড়ে তোলার দাবি জানিয়েছিলেন। তাঁর দাবি, সম্প্রতি রেলমন্ত্রী তাঁকে চিঠি দিয়ে এই রুটে সমীক্ষার কাজ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন। যদিও, রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, কোনও রুটে সমীক্ষা করা মানে রেলপথ গড়ে উঠবে এমন নয়। সমীক্ষা রিপোর্ট পাওয়ার পরে তা খতিয়ে দেখে যদি সেই রুট লাভজনক বলে রেলবোর্ডের মনে হয়, তবেই পরবর্তী পদক্ষেপ করা হয়।