আসানসোল জেলা হাসপাতালে নিরাপত্তায় রয়েছে পুলিশ। ছবি: পাপন চৌধুরী।
আসানসোল জেলা হাসপাতালের নিরাপত্তা মজবুত করার দাবি দীর্ঘ দিনের। আর জি কর-কাণ্ডের পরে সেই দাবি আরও জোরাল হয়। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশের অভিযোগ, নিরাপত্তা বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি মিললেও তা পূরণ হয়নি এখনও।
নতুন ও পুরনো ভবনে মোট ১২টি ওয়ার্ডের মধ্যে ছ’টি মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত। ৭৫০ শয্যার এই হাসপাতালের দুই ভবনে ২৯ জন বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষী রয়েছেন। রয়েছে ৬৮টি সিসি ক্যামেরা। হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পে থাকেন চার জন পুলিশকর্মী। এই নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যাপ্ত নয় বলে মনে করেন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। তাঁদের অভিযোগ, বিরাট পরিসরের এই হাসপাতালে পর্যাপ্ত আলো নেই। হাসপাতালের পিছনের দিকে পাঁচিলের একাংশ ভাঙা। সেই অংশ দিয়ে বহিরাগতরা অবাধে যাতায়াত করে। অন্ধকার নামতেই পাঁচিল ঘেরা এলাকায় পুকুর পাড়ে অসামাজিক কার্যকলাপ চলে বলেও অভিযোগ। হাসপাতালে যত্রতত্র বহিরাগতরা যানবাহন দাঁড় করিয়ে রাখেন।
চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশ জানান, হাসপাতালে প্রবেশ ও প্রস্থানের পথে ২৪ ঘণ্টা স্থায়ী পুলিশকর্মী মোতায়েনের দাবি তাঁরা একাধিক বার সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে জানিয়েছিলেন। কিন্তু প্রতিকার মেলেনি। পুলিশ ক্যাম্পে পর্যাপ্ত পুলিশকর্মী মোতায়েনের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও তা পূরণ হয়নি। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) শেখ মহম্মদ ইউনুস জানান, নিরাপত্তা নিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে একাধিক বার বৈঠক হয়েছে। আরও ২৪ জন নিরাপত্তারক্ষী, ১৩০টি সিসি ক্যামেরা এবং পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করার প্রস্তাব স্বাস্থ্যভবনে পাঠানো হয়েছে। এখনও অনুমোদন মেলেনি। পুলিশ ক্যাম্পে এক জন আধিকারিক-সহ ন’জন পুলিশকর্মী নিয়োগ করার কথা বলা হয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে। এখনও ক্যাম্পে চার জন পুলিশকর্মীই রয়েছেন। আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এক আধিকারিক জানান, শীর্ষ আদালতের নির্দেশ মেনে হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা মজবুত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
জেলায় ন’টি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সেগুলির মধ্যে কেলেজোড়া, পিঠাইকেয়ারি, রানিগঞ্জ ও পানাগড়ে প্রতি শিফ্টে এক জন করে সিভিক ভলান্টিয়ার ছিলেন। পুলিশ জানায়, শীর্ষ আদালতের নির্দেশ মেনে তাঁদের হাসপাতাল থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ডিসি (সেন্ট্রাল) ধ্রুব দাস জানান, হাসপাতাল থেকে সিভিক ভলান্টিয়ার তুলে নেওয়া হয়েছে। তবে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সামনে তাঁদের যানবাহন নিয়ন্ত্রণে রাখা যেতেই পারে।