—প্রতীকী ছবি।
ছটপুজোর জন্য ঘাট তৈরি থেকে সংস্কার, নিরাপত্তার ব্যবস্থা থেকে ট্যাবলো পরিচালনা— চূড়ান্ত প্রস্তুতি চল জেলা প্রশাসন ও পুরসভার। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শিল্পাঞ্চল জুড়ে শুরু হয়ে যাবে ছট উৎসব।
আসানসোল শিল্পাঞ্চলে সবচেয়ে বড় ছটের ঘাট বলে পরিচিত বার্নপুরে দামোদরের তীরে ভূতনাথ ঘাট। মঙ্গলবার সকালে সেই ঘাটের নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখেন পুলিশ কমিশনার সুনীলকুমার চৌধুরী-সহ কমিশনারেটের কর্তারা। পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘‘এই ঘাটটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রচুর মানুষের সমাগম হয়। তাই বিশেষ কিছু নিরাপত্তার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।’’ পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতি বছর এই ঘাটে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ আসেন। এ বার ড্রোন ক্যামেরার মাধ্যমে নজরদারির ব্যবস্থা হয়েছে। একাধিক ওয়াচ টাওয়ার থেকেও লোকজনের গতিবিধি নজরে রাখা হবে। থাকছে একাধিক পুলিশি সহায়তা কেন্দ্র। পুলিশকে সাহায্য করতে কয়েকশো স্বেচ্ছাসেবক থাকবেন। পুলিশ কমিশনার জানান, জেলা বিপর্যয় মোকাবিলা দলের সদস্যেরা স্পিড বোট ও লাইফ জ্যাকেট নিয়ে নদীতে নজরদারি চালানবেন। দামোদরের ঘাটটি দুর্ঘটনাপ্রবণ। এখানে চোরাবালি ও ঘূর্ণিস্রোত রয়েছে বলে বাসিন্দারা জানান। বিপজ্জনক জায়গাগুলি চিহ্নিত করে সতর্কীকরণ বোর্ড দেওয়া হয়েছে।
ছট উৎসব উপলক্ষে এ বার ব্রতীদের উৎসাহ দিতে পাঁচটি ট্যাবলো চালু করেছে আসানসোল পুরসভা। মঙ্গলবার সেগুলির যাত্রা শুরু করেন মেয়র বিধান উপাধ্যায়। তিনি জানান, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে এই কাজ করা হয়েছে। পুরসভার ১০৬টি ওয়ার্ডকে বিভিন্ন জ়োনে ভাগ করে ট্যাবলোগুলি ঘুরবে। মঙ্গলবার কুলটির নিয়ামতপুরে একটি নবনির্মিত ছট ঘাটের উদ্বোধন করা হয়। মেয়র জানান, এই ঘাট তৈরির জন্য প্রায় ১২ লক্ষ টাকা খরচ করা হয়েছে। ৯ লক্ষ টাকা খরচ করে পুকুরের সংস্কার ও ৩ লক্ষ টাকা খরচে আশপাশে আলো লাগানো হয়েছে। রেলের আসানসোল ডিভিশনের তরফে বিভিন্ন এলাকায় ছটঘাটের সংস্কার ও পুনর্নির্মাণ করা হয়েছে বলে জনসংযোগ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে ও শুক্রবার সকালে ছটব্রতীদের ঘাটে যাতায়াতের পথে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণের জন্য ট্র্যাফিক পুলিশকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান পুলিশ কমিশনার।
দুর্গাপুর পুরসভার তরফে ছট কমিটিগুলির হাতে মঙ্গলবার প্রাথমিক চিকিৎসার বাক্স দেওয়া হয়। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, শহরের মোট ৪৩টি ওয়ার্ডের ৭২টি ঘাটে ছট পালিত হবে। সব ঘাটের জন্য একটি করে বাক্স দেওয়া হয়েছে, যাতে কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে সঙ্গে সঙ্গে প্রাথমিক চিকিৎসা করা সম্ভব হয়। ছিলেন পুর-প্রশাসক অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায়, কমিশনার আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।
মঙ্গলবার পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের লাউদোহা, ঝাঁঝড়া-সহ নানা জায়গায় ছটের ঘাট পরিদর্শন করেন। পাণ্ডবেশ্বর ব্লকের বিভিন্ন ঘাটও পরিদর্শন করেন তিনি। বিধায়ক জানান, অধিকাংশ ঘাট পাকা করে দেওয়া হয়েছে। প্রতি বছরের মতো ১০ হাজার ছটব্রতীর হাতে পুজোর সামগ্রীর ডালা তুলে দেওয়া হবে।