কর্মীদের মাঝে অনুব্রত মণ্ডল। — ফাইল চিত্র।
গরু পাচার মামলায় জামিনে মুক্ত হওয়ার পরে দু’মাস কেটে গেলেও এখনও মঙ্গলকোট, কেতুগ্রাম ও আউশগ্রামে আসেননি বীরভূম জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। বীরভূমের বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত এই তিন বিধানসভা কেন্দ্রে সেই বাম জমানা থেকেই দলীয় সংগঠনের রাশ ছিল অনুব্রতের হাতে। তিনি এখনও না আসায় কার্যত হতাশ ওই তিন বিধানসভা কেন্দ্রে তাঁর অনুগামীরা। তবে দলেরই একটি সূত্রের খবর, মঙ্গলকোটের যোগাদ্যা ও কেতুগ্রামে অট্টহাসে পুজো দিতে আসতে পারেন অনুব্রত। এই খবরে তাঁর ঘনিষ্ঠেরা বেশ চাঙ্গা। তবে কবে অনুব্রত আসবেন, তা জানা যায়নি। দলের কোনও জেলা নেতা এ নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলতে রাজি হননি।
জামিনে মুক্তি পেয়ে ঘরে ফিরে অনুব্রত জানিয়েছিলেন, পুজোর পরে ব্লকে ব্লকে যাবেন তিনি। নিজের জেলার বেশ কিছু ব্লকে তৃণমূলের বিজয়া সম্মেলনে দেখা গিয়েছে অনুব্রতকে। কিন্তু, বাম জমানা থেকে পূর্ব বর্ধমানে তাঁর ‘গড়’ বলে পরিচিত মঙ্গলকোট, কেতুগ্রাম বা আউশগ্রামে এখনও পা রাখেননি তিনি। অনুব্রত গ্রেফতার হতেই দলের রাজ্য নেতৃত্ব ওই তিন বিধানসভা এলাকার সাংগঠনিক দায়িত্ব দিয়েছিল পূর্ব বর্ধমান জেলা কমিটিকে। পরে কেতুগ্রামের দায়িত্ব দেওয়া হয় বীরভূম জেলা সভাধিপতি কাজল শেখকে। তিনি আবার দলে অনুব্রত-বিরোধী বলে পরিচিত। তৃণমূলের একটি সূত্রের দাবি, এই তিন বিধানসভা এলাকায় দল পরিচালনা সংক্রান্ত বিষয়ে রাজ্য নেতৃত্ব নতুন কোনও নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত অনুব্রত সংগঠনের কাজে হস্তক্ষেপ করবেন না বলেই মনে হচ্ছে। সেই কারণেই তিনি এখনও মঙ্গলকোট, কেতুগ্রাম বা আউশগ্রামে আসেননি। তবে তাঁর দীর্ঘ অনুপস্থিতির কারণে ওই তিন এলাকায় তাঁর অনুগামীরা যে দলে কোণঠাসা, সে খবর তাঁর কাছে গিয়েছে। তাই অনুগামীদের চাঙ্গা করতে অনুব্রত যোগাদ্যা ও অট্টহাসে আসতে পারেন তিনি। তাঁর কাছে এই মর্মে আর্জি জানানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, দলীয় সংগঠনে নিজের রাশ ধরে রাখতে কেতুগ্রাম ১ এবং ২ ব্লকে বিজয়া সম্মেলন করেছেন কাজল শেখ। সেই কর্মসূচিতে ভিড় টানতে তাঁর দাদা তথা কেতুগ্রামের বিধায়ক শেখ সাহানেওয়াজ চেষ্টার কসুর করেননি। যদিও অনুব্রত অনুগামী বলে পরিচিত তৃণমূল নেতা-কর্মীদের সেই অনুষ্ঠানে দেখা যায়নি। তৃণমূলের অন্দরমহলের খবর, অনুব্রতের অনুগামীরা চাইছেন, কেতুগ্রামে অট্টহাসে মেয়েকে নিয়ে পুজো দিতে আসুন অনুব্রত। এক তৃণমূল নেতা বলেন, ‘‘কর্মীদের এই আবেদনে অনুব্রত সাড়া দিয়েছেন। তিনি এলে মঙ্গলকোট ও কেতুগ্রামে দলের পুরনো ও কোণঠাসা কর্মীরা চাঙ্গা হয়ে উঠবেন।’’
অনুব্রত জামিন পাওয়ার পরে দাঁইহাটে তৃণমূল কর্মীদের একাংশ দলীয় কার্যালয়ে খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন। যোগাদ্যা মন্দিরে অনুব্রতের মঙ্গল কামনায় পুজো দিয়ে প্রসাদ বিলি করেছিলেন স্থানীয় বিধায়ক তথা পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান অপূর্ব চৌধুরী। তিনি অনুব্রতের ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত। বিধায়কের ঘনিষ্ঠ বৃত্তে থাকা এক তৃণমূল নেতা বলেন, ‘‘অনুব্রত কেতুগ্রাম ও মঙ্গলকোটে আসবেন।’’
কেতুগ্রাম ১ ব্লকের এক তৃণমূল নেতা বলেন, “শুনেছি দাদা যোগাদ্যা ও অট্টহাস মন্দিরে পুজো দিতে আসবেন। দাদা এলে বহু পুরনো তৃণমূল কর্মী ফের সক্রিয় হবেন।’’