বিধায়কের শ্যালকদের বাড়িতে বিদ্যুৎ নেওয়া হচ্ছে হুকিং করে। —নিজস্ব চিত্র।
বিদ্যুৎ চুরি আটকাতে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ক্রমাগত অভিযান ও সচেতনতা প্রচার চালানো হয়। সাধারণ মানুষকে সতর্ক করার পাশাপাশি আইনি পদক্ষেপও করা হয়। তারই মাঝে দেখা গেল ‘সর্ষের মধ্যেই ভূত’। খোদ বিধায়কের শ্বশুরবাড়িতেই বিদ্যুৎ নেওয়া হচ্ছে হুকিং করে! শুধু তাই নয়, তাঁর শ্যালকের দোতলা বাড়িতেও একই ভাবে নেওয়া হয়েছে বিদ্যুৎ। পূর্ব বর্ধমান জেলার খণ্ডঘোষ বিধানসভার বিধায়ক নবীনচন্দ্র বাগের শ্বশুড়বাড়ির বিরুদ্ধে এমন অভিযোগে শোরগোল পড়েছে।
খণ্ডঘোষের তাঁতিপাড়ায় বিধায়কের শ্বশুর-শাশুড়ি ও দুই শ্যালকের বাড়ি। অভিযোগ, সামনের রাস্তার একটি ইলেকট্রিক স্তম্ভ থেকেই হুকিং করা হয়েছে দুই বাড়িতে। বেআইনি ভাবে হুকিং করে বিদ্যুৎ নেওয়ার অভিযোগ স্বীকার করে নিয়েছেন সকলেই। বিধায়কের শাশুড়ি সুমিত্রা রায়ের সাফাই, ‘‘প্রায় ১০ হাজার টাকা ইলেকট্রিক বিল এসেছিল। সেই টাকা দেওয়ার মতো সাধ্য নেই। ছেলেরাও সে রকম কোনও কাজ করে না। তাই মাত্র দু’দিনের জন্য হুকিং করা হয়েছে। তাড়াতাড়ি খুলে দেব। ভুল হয়ে গিয়েছে।’’ বিধায়কের শ্যালক অভিজিৎ বলেন, ‘‘মিটার খারাপ হয়ে যাওয়ায় আর কারেন্ট নেওয়া হয়নি। তাই এই ভাবে চলছে।’’ উল্লেখ্য, বিধায়কের শ্বশুর-শাশুড়ি থাকেন মাটির বাড়িতে। পাশেই দুই শ্যালক থাকেন দোতলা পাকা বাড়িতে।
ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই সুর চড়িয়েছে বিজেপি। এই প্রসঙ্গে পদ্মশিবিরের স্থানীয় নেতা শান্তরূপ দে কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘তৃণমূল মানেই দুর্নীতি। যে দলে চোর ও জোচ্চোর ভর্তি সেখানে এর থেকে বেশি আর কী আশা করা যেতে পারে। বিধায়কের পরিবার পরিজনেরাই যদি সরকারি বিদ্যুৎ চুরি করেন তা হলে কাউকে তো আর কিছু বলারই নেই। আমরা এর বিহিত চাইছি। একই সঙ্গে বিদ্যুৎ দফতরের কাছে দাবি জানাচ্ছি এই ঘটনা খতিয়ে দেখে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার।’’ পাশাপাশি তিনি এও বলেন, ‘‘বিদ্যুৎ মাশুল বাড়ার ফলে সাধারণ মানুষ সমস্যায় পড়ছেন।’’ এই বিষয়ে বিধায়কেরর সঙ্গে যোগাযোগ করা চেষ্টা হলে তাঁকে পাওয়া যায়নি। তৃণমূলের ব্লক সভাপতি অপার্থিব ইসলাম বলেন, ‘‘বিষয়টি জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে।’’ জেলাশাসক আয়েষা রানি বলেন, ‘‘বিদ্যুৎ দফতরকে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিতে বলব।’’