কলকাতা হাই কোর্ট ফাইল চিত্র।
কলকাতা হাই কোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দলের অপসারণ চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে চিঠি দিলেন রাজ্য বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অশোক দেব। শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি এমভি রামানাকে চিঠি দিয়েছেন তিনি। ৬ পাতার চিঠিতে একাধিক মামলায় হাইকোর্টের নির্দেশ ও পর্যবেক্ষণ নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। অশোক দেবের অভিযোগ, নারদ, নন্দীগ্রাম মামলার মতো রাজ্য সরকারের মামলাগুলিতে হাই কোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির ভূমিকা সন্তোষজনক নয়।
চিঠিতে বলা হয়েছে, নারদ মামলায় গ্রেফতার হওয়ার ফিরহাদ হাকিম-সহ অন্যদের অন্তর্বর্তিকালীন জামিনের নির্দেশ দিয়েছিল বিশেষ সিবিআই আদালত। যদিও কলকাতা হাই কোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ সেই জামিন খারিজের নির্দেশ দেন। এই মামলায় তাঁর ভূমিকা মোটেই সঠিক নয় বলে অভিযোগ তোলা হয়েছে। চিঠিতে প্রশ্ন তোলা হয়েছে হাই কোর্টে সিবিআই-র আবেদনের পদ্ধতি নিয়েও।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, নারদ মামলায় হাই কোর্টে পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও আইন মন্ত্রী মলয় ঘটকের হলফনামা দিতে চান, তবে তাঁদের হলফনামা গ্রহণ করা হয়নি। পরে তাঁরা এই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। পরে হলফনামা জমা নিতে কলকাতা হাই কোর্টকে নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট।
এছাড়াও বার কাউন্সিলের দেওয়া চিঠিতে নন্দীগ্রাম-মামলা বিচারপতি কৌশিক চন্দের এজলাসে পাঠানোর বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়েছে। অশোক দেব লিখেছেন, মুখ্যমন্ত্রীর দায়ের করা নন্দীগ্রাম মামলা বিচারপতি কৌশিক চন্দের এজলাসে শুনানির জন্য উঠলে এজলাস পরিবর্তনের আবেদন জানানো হয়। যদিও হাই কোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বিন্দল তা অগ্রাহ্য করেছেন। চিঠিতে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতিকে লেখা বিচারপতি অরিন্দম সিংহের লেখা একটি চিঠিরও উল্লেখ করেছেন রাজ্য বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান। যাতে বিচারপতি সিংহ নারদ মামলায় হাই কোর্টের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
এদিকে, অশোক দেবের এই চিঠি বিচার-ব্যবস্থার পক্ষে ক্ষতিকারক বলে মন্তব্য করলেন আইনজীবী ও কংগ্রেস নেতা অরুণাভ ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘এটা ব্যক্তিগত চিঠি, বার কাউন্সিলের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই।’’ আইনজীবী ও বাম নেতা বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘বার কাউন্সিলের এই ধরনের আপত্তিকর চিঠি লেখার কোনও অধিকার নেই। চিঠির লেখককে অবশ্যই কোনও চিঠি লেখার আগে তাঁর আইনসম্মত অধিকার সম্পর্কে জানতে হবে। যদি তিনি কোনও দুর্নীতিগ্রস্ত সরকারের এজেন্ট হিসাবে কাজ করতে চান, তবে পদ ছাড়ার পরে তা করতেই পারেন। এই চিঠির লেখকের বিরুদ্ধে প্রধান বিচারপতির স্বত:প্রণোদি অবমাননার মামলা করা উচিত।’’