Kalyani JNM Hospital

ফেস্টের নামে জেএনএমে পড়ুয়াদের থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা তোলা হয়! অভিযোগ অভীক-অনুগতদের বিরুদ্ধে

জেএনএম সূত্রের খবর, শুক্রবার পর্যন্ত প্রায় ১৯ লক্ষ টাকার সন্ধান মিলেছে। তার মধ্যে প্রায় ৯ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা দ্বিতীয় বর্ষের কয়েক জন ছাত্র কলেজ কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দিয়েছেন বলে সূত্রের খবর।

Advertisement
সুস্মিত হালদার
কল্যাণী শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৮:২৭

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

শুধু একটা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের (ফেস্ট) নামেই কল্যাণী জেএনএমে সাধারণ পড়ুয়াদের থেকে লক্ষ-লক্ষ টাকা তুলেছিলেন তৃণমূলের চিকিৎসক নেতা অভীক দে-র অনুহত হুমকি-চক্রের পান্ডারা। যদিও আর জি করে ছাত্রীর ধর্ষণ-খুন এবং তার পরবর্তী পরিস্থিতির জেরে সেই অনুষ্ঠান শেষমেশ আর হয়নি।

Advertisement

জেএনএম সূত্রের খবর, শুক্রবার পর্যন্ত প্রায় ১৯ লক্ষ টাকার সন্ধান মিলেছে। তার মধ্যে প্রায় ৯ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা দ্বিতীয় বর্ষের কয়েক জন ছাত্র কলেজ কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দিয়েছেন বলে সূত্রের খবর। সেই টাকা কল্যাণী থানার হেফাজতে রাখা হয়েছে। উদ্ধার হওয়া টাকা সাধারণ পড়ুয়াদের ফিরিয়ে দেওয়া হতে পারে বলে কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে।

নদিয়ার এই মেডিক্যাল কলেজে বেশ কয়েক বছর ধরেই হুমকি-প্রথা ও তোলাবাজি চালিয়ে আসার অভিযোগ ছিল তৃণমূল নিয়ন্ত্রিত ‘স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার কমিটি’ ও কিছু প্রাক্তন ছাত্রের বিরুদ্ধে। তাঁদের বিরুদ্ধে মুখ খোলার সাহস সাধারণ পড়ুয়ারা তো নয়ই, অধ্যাপকদেরও ছিল না। কিন্তু আর জি করের ঘটনার পরে পরিস্থিতি পাল্টে যায়। হুমকি-চক্রের পান্ডা শেখ মহম্মদ অখিল, আলিম বিশ্বাস, বিচিত্রকান্তি বালাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেন সাধারণ পড়ুয়ারা। কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে কয়েকশো অভিযোগ জমা পড়ে। তার ভিত্তিতে ৪০ জনকে ছ’মাসের জন্য কলেজ ও হস্টেল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তার মধ্যে ওই পান্ডারাও রয়েছেন।

অ্যান্টি র‌্যাগিং কমিটির সামনে তাঁর অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্র। তাঁর অভইযোগ, “মাঝরাতে ঘুম থেকে তুলে ওরা আমায় মেরেছিল। আমার অপরাধ, ফেস্টের জন্য ২৩০০ টাকা চাওয়া হলেও আমি এক হাজারের বেশি দিতে পারিনি। ছোটবেলায় আমার বাবা-মা মারা গিয়েছেন। ঠাকুমা অনেক কষ্ট করে পড়াচ্ছেন।”

এ রকম ভূরি ভূরি অভিযোগ পাওয়ার পরে অ্যান্টি র‌্যাগিং কমিটির তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়, পড়ুয়াদের কাছ থেকে আদায় করা টাকা ফিরিয়ে দিতে হবে। জেএনএম সূত্রের দাবি, হুমকি-চক্রের পান্ডাদের অনুগত কিছু ‘জুনিয়র’ ছাত্র এখনও হস্টেলে রয়েছেন। দিন তিনেক আগে তাঁদের মধ্যে দ্বিতীয় বর্ষের পাঁচ-ছয় জন প্রায় ৯ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেন। বাকি টাকা কোথায় গেল? তার কোনও স্পষ্ট উত্তর অবশ্য এখনও মেলেনি। যদিও ওই ছাত্রদের দাবি, টাকার একটা অংশ শিল্পীদের অগ্রিম হিসেবে দেওয়া হয়েছে।

‘স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার কমিটি’র সভাপতি পদ থেকে সদ্য অপসারিত বিচিত্রকান্তি বালাকে একাধিক বার ফোন করা হলেও তিনি তা ধরেননি। তাঁদের ‘কাছের লোক’ বলে যিনি পরিচিত ছিলেন, সেই অপসারিত অধ্যক্ষ অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়ের দাবি, “এ বছর যে ফেস্ট হবে, সেটাই আমার জানা ছিল না। এ ভাবে যে টাকা তোলা হয়েছে, তা-ও কোনও ছাত্রছাত্রী আমাকে জানাননি।” বর্তমান অধ্যক্ষ মণিদীপ পাল এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

আরও পড়ুন
Advertisement