মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অর্থনীতিবিদ অশোক লাহিড়ী। ফাইল চিত্র।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরামর্শ চাইলে গোপনীয়তা বজায় রেখে তাঁকে তা দেবেন বলে জানালেন বালুরঘাটের বিজেপি বিধায়ক তথা অর্থনীতিবিদ অশোক লাহিড়ী। তিনি মঙ্গলবার বিজেপির হেস্টিংস কার্যালয়ে বসে বলেন, ‘‘আমি বিধানসভায় গঠনাত্মক বিরোধিতা করতে চাই। তবে আগেও বলছি, এখনও বলছি, আমার কর্মজীবনের বেশিরভাগটা কেটেছে আর্থিক উপদেষ্টা হিসাবে। মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী আমার কাছে কোনও পরামর্শ চাইলে আমি কঠোর গোপনীয়তা বজায় রেখে তাঁকে তা দেব। পশ্চিমবঙ্গের জনগণের উন্নয়ন ঘটে, এমন পরামর্শই দেব। তবে তা দেব বিজেপি বিধায়ক হিসাবে।’’
কিন্তু বিরোধী দলের বিধায়ক হিসাবে তাঁর কাজ সরকারের খামতি, ত্রুটি ইত্যাদি জনসমক্ষে তুলে ধরা। তা হলে তিনি কী ভাবে মুখ্যমন্ত্রীকে গোপন পরামর্শ দেবেন? অশোকের জবাব, ‘‘দু’টি দেশের মধ্যে যখন আলোচনা হয়, তখনও সব কিছু বাইরে বলা যায় না। জনসমক্ষে যা ঘটেছে, সংবাদপত্রে যা বেরোচ্ছে, বিধায়ক হিসাবে তা নিশ্চয়ই বলব। কিন্তু সরকার যদি আমাকে এমন কোনও তথ্য দেয়, যেটা গোপন এবং তা প্রকাশ না করার অনুরোধ করে, তা হলে সেটা প্রকাশ্যে আনা আমার পেশাদারিত্বের পরিচয় হবে না।’’
অশোকের এই অবস্থানকে সমর্থন করেছে বিজেপিও। রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘অশোক লাহিড়ী ভুল কিছু বলেননি। দেশে অনেক বিষয়ই থাকে, যা প্রধানমন্ত্রী এবং বিরোধী নেতার মধ্যে গোপন থাকে। দুর্ভাগ্য হল, সেই সংস্কৃতি থেকে কয়েক বছর হল আমরা বেরিয়ে এসেছি। অশোকবাবুর বক্তব্য নেহরু-বাজপেয়ী জমানার সংস্কৃতির স্পর্শ দিল। আর অশোকবাবু বুঝিয়ে দিলেন, বিরোধীদের বাড়ির সামনে মরা কুকুর ফেলে আসার সংস্কৃতি থেকে তিনি অনেক উপরে।’’
অশোকের বক্তব্যে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, ‘‘যে কোনও ইতিবাচক পরামর্শের জন্য স্বাগত। তবে এর পাশাপাশি উনি কেন্দ্রের কাছ থেকে রাজ্যের প্রাপ্য বকেয়া আদায়ের জন্যও দিল্লিতে দরবার করুন।’’
অশোক তৃণমূলে যোগ দিতে পারেন বলে রাজনৈতিক মহলে জল্পনা ছড়িয়েছিল। সেই জল্পনা উড়িয়ে অশোক এ দিন বলেন, ‘‘মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী বা তৃণমূলের কেউ আমাকে দল বদলের জন্য বলেননি। আমিও কোনও আবেদন পেশ করিনি। আমি পাঁচ বছর বিজেপি বিধায়ক হিসাবেই থাকব।’’
অন্য দিকে, এ দিনই রাজ্য বিজেপির সাংস্কৃতিক সেলের আহ্বায়কের পদ ছেড়েছেন অভিনেতা সুমন বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘আমার ব্যস্ততার জন্য আমি ওই গুরুদায়িত্ব পালনে সময় দিতে পারছি না।’’ প্রসঙ্গত, তাঁকে ভবানীপুরে উপনির্বাচনের প্রচারেও দেখা যায়নি।