কার্নিভালের ফিতে কাটছেন অনুব্রত মণ্ডল। —নিজস্ব চিত্র।
সদ্যই তিহাড় থেকে জামিনে ছাড়া পেয়ে জেলায় ফিরেছেন তিনি। বর্তমানে কোনও প্রশাসনিক পদে নেই। খাতায়কলমে বীরভূমে শাসক তৃণমূলের জেলা সভাপতি নন! তা সত্ত্বেও রাজ্য সরকার অনুষ্ঠিত দুর্গাপুজোর কার্নিভালের উদ্বোধন হল সেই অনুব্রত মণ্ডলের হাত ধরে। ঘটনাচক্রে, সেখানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ। যা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। রাজ্যের এক মন্ত্রী সেখানে হাজির থাকা সত্ত্বেও কেন কোনও প্রশাসনিক পদে না-থাকা অনুব্রত সরকারি অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন বিরোধীরা। তৃণমূলও এর পাল্টা জবাব দিয়েছে।
রাজ্য সরকারের ঘোষণা মোতাবেক বোলপুরেও শুরু হয়েছে কার্নিভাল। সোমবার তার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ‘স্বমহিমায়’ দেখা গেল অনুব্রতকে। তিনিই গোটা অনুষ্ঠানের মধ্যমণি হয়ে রইলেন। সেই পরিচিত ভঙ্গিতেই কার্নিভালের ফিতে কাটলেন কেষ্ট। অনুষ্ঠানমঞ্চের মূল চেয়ারেও তাঁকেই দেখা গেল। অনুব্রতের একপাশে ছিলেন মেয়ে সুকন্যা মণ্ডল। আর অন্য পাশে ছিল মন্ত্রী চন্দ্রনাথ। মঞ্চে উঠে তিনিই প্রথম বক্তৃতা করতে শুরু করেন। সকলকে সঙ্গে নিয়ে চলার বার্তা দেন। অনুব্রত বলেন, ‘‘কার্নিভালে অংশ নেওয়া সমস্ত পুজো কমিটিকে অনেক অভিনন্দন। আপনাদের কাছে একটাই অনুরোধ, সবাইকে নিয়ে চলব। সবাইকে ভালবাসব, সবাইকে নিয়ে থাকব। দুই-দুই করব না। কোনও হিংসার ঘটনা ঘটাব না।’’
এ বিষয়ে বিজেপির জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা বলেন, ‘‘এক জন জেল ফেরত আসামি কার্নিভালের ফিতে কাটছে। এতে আর কী বলার থাকতে পারে? প্রশাসন কী ভাবে এই কাজ করল, সেটাই বুঝতে পারছি না। আর এতে অনুব্রত মণ্ডল কতটা প্রভাবশালী, সেটাও বোঝা যাচ্ছে।’’ পাল্টা তৃণমূল মুখপাত্র অরূপ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘রাজনৈতিক হিংসা চরিতার্থ করতে অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। উদ্দেশ্য ছিল পঞ্চায়েত এবং লোকসভা ভোটে বীরভূমে ভাল ফল করা। তার কোনওটাই পারেনি বিজেপি। আর সুপ্রিম কোর্টও অনুব্রত মণ্ডলকে জামিন দিয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে যে তথ্যপ্রমাণ নেই, সেটা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। আনুষ্ঠানিক ভাবে হয়তো ঘোষণা হয়নি। কিন্তু অনুব্রত মণ্ডল যে জায়গায় ছিলেন, সেখানেই রয়েছেন।’’