(বাঁ দিকে) অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমস্ত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে নেওয়া হয়েছে বলে প্রকাশ্যে জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার শিলিগুড়িতে বিভিন্ন উন্নয়ন বোর্ড এবং সম্প্রদায়ের সভায় এই কথা জানিয়েছেন মমতা। তবে মুখ্যমন্ত্রী বলেননি, কে বা কারা অভিষেকের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে। তবে বক্তৃতার আগে-পরে শুনে অনেকে মনে করছেন, এই প্রসঙ্গে মমতা কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার পদক্ষেপের কথাই বলতে চেয়েছেন। তবে তৃণমূলের সর্বময় নেত্রী স্পষ্ট করে দিয়েছেন, সমগ্র বিষয়ের নেপথ্যে রয়েছে বিজেপির ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’।
শিলিগুড়িতে মঙ্গলবার মমতা বলেন, ‘‘আমাদের উপর বিজেপির খুব রাগ। কারণ আমরা ভয় পাই না।’’ তার পরেই মমতা বলেন, ‘‘আপনারা জানেন না... অভিষেক একটা ইয়ং ছেলে। কিছু তো একটা করতে হবে। বিয়ে করেছে। দুটো বাচ্চা আছে। না হলে খাওয়াবে কী? ঘরে বসে থাকলে তো খাবার পাবে না। ওর একটা বিজ়নেস (ব্যবসা) ছিল। সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে নিয়েছে।’’ মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘‘আমি আগে কখনও এই কথা বলিনি। কারণ, আমরা লড়াই করছি। আমাদের যা আছে তোমরা নিয়ে নাও। কিন্তু গণতন্ত্রকে ধ্বংস কোরো না।’’
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় নাম জড়িয়েছে অভিষেকের সংস্থা ‘লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডস’-এর। সেই সূত্রেই সংস্থার কর্মী সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে ‘কালীঘাটের কাকু’-কে গ্রেফতার করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। তাঁর কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ নিয়েও ঘটনার ঘনঘটা চলেছিল। ওই সংস্থার ‘ডিরেক্টর’ পদে আগে ছিলেন অভিষেক। ২০১৪ সালে তিনি প্রথম লোকসভা ভোটে প্রার্থী হয়েছিলেন ডায়মন্ড হারবার থেকে। সেই সময়ে সংস্থার ‘ডিরেক্টর’ পদ থেকে ইস্তফা দেন অভিষেক। বর্তমানে ‘লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডস’-এর ডিরেক্টর পদে রয়েছেন অভিষেকের বাবা, মা এবং স্ত্রী। অভিষেক ডিরেক্টর পদ ছাড়লেও সংস্থার ‘সিইও’ পদে এখনও রয়েছেন।
নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত সূত্রে অভিষেকের পাশাপাশিই তাঁর বাবা, মা এবং স্ত্রীকেও নোটিস পাঠিয়েছিল ইডি। অভিষেক এবং তাঁর স্ত্রী রুজিরা নারুলা বন্দ্যোপাধ্যায় পৃথক দিনে সশরীরে হাজিরা দিয়েছিলেন। তবে অভিষেকের বাবা-মা আইনজীবী মারফত নথি পাঠিয়েছিলেন সিজিও কমপ্লেক্সে। এর আগে মমতা বলেছিলেন, ‘‘অভিষেকের জন্মের আগের নথি চাওয়া হচ্ছে।’’ ফেব্রুয়ারি মাসে আনন্দবাজার অনলাইনকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে অভিষেক জানিয়েছিলেন, ‘লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডস’ এখনও কাজ করে। ওই সংস্থার একটি পানীয় জল তৈরির কারখানা রয়েছে। তা ছাড়া শেয়ার ট্রেডিং করা হয়। সেই কাজ অভিষেক নিজে দেখেন বলেই জানিয়েছিলেন।