শুভাপ্রসন্নের পরিবর্তে রাজ্যের হেরিটেজ কমিশনের চেয়ারম্যান হলেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
রাজ্য হেরিটেজ কমিশনের চেয়ারম্যান করা হল আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে। অতি সম্প্রতি নবান্ন ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আলাপন নতুন পদে তাঁর দায়িত্বভার বুঝে নিয়েছেন। প্রসঙ্গত, ২০১১ সালে রাজ্যে ‘পরিবর্তন’-এর সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে এতদিন ওই দায়িত্বে ছিলেন শিল্পী শুভাপ্রসন্ন।
রাজ্যে মূলত ইতিহাসের সংরক্ষণের জন্য দু’টি সংস্থা রয়েছে। একটি রাজ্য হেরিটেজ কমিশন। অন্যটি ‘সেন্টার ফর আর্কিওলজিক্যাল স্টাডিজ় অ্যান্ড ট্রেনিং’ (কাস্ট)। হেরিটেজ কমিশনের দায়িত্বে আসার আগে আলাপন ‘কাস্ট’-এর চেয়ারম্যান পদে ছিলেন। সেই পদে নিয়ে আসা হয়েছে ইতিহাসবিদ এবং প্রাক্তন সাংসদ সুগত বসুকে। ঘটনাচক্রে, সুগত আগে হেরিটেজ কমিশনের সদস্য ছিলেন।
রাজ্যে রাজনৈতিক পালাবদলের আগে থেকেই শিল্পী শুভাপ্রসন্ন ‘পরিবর্তন’-এর পক্ষে ছিলেন। বস্তুত, ২০০৭ সালে সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সময় থেকেই তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আন্দোলনের পাশে ছিলেন। ২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগেও এই প্রবীণ শিল্পী রাজনৈতিক ভাবে ‘সক্রিয়’ ছিলেন। সেই সময়ে তাঁর বাড়িতে বিভিন্ন বৈঠকেও করেছেন তৎকালীন বিরোধীনেত্রী মমতা। ২০০৯ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত নাগাড়ে রাজ্যে ‘পরিবর্তন’-এর পক্ষে সওয়াল করে গিয়েছেন শুভাপ্রসন্ন। রাজ্যে পট পরিবর্তনের পর স্বাভাবিক ভাবেই তিনি শাসক শিবিরের ‘ঘনিষ্ঠ এবং আস্থাভাজন’ বিশিষ্টজনেদের তালিকায় ছিলেন। বিভিন্ন সরকারি কর্মসূচিতেও তাঁকে দেখা গিয়েছে।
শুভাপ্রসন্নের সেই অবস্থানের কোনও বদল অবশ্য হয়নি। রাজ্য হেরিটেজ কমিশনের চেয়ারম্যান হিসাবেও তাঁর কাজ নিয়ে কারও ‘অনুযোগ’ ছিল বলে প্রকাশ্যে শোনা যায়নি। নবান্নের একাংশের বক্তব্য, শুভাপ্রসন্নের পরিবর্তে আলাপনকে কমিশনের চেয়ারম্যান করার পিছনে এমন কারণও থাকতে পারে যে, আলাপন বয়সে শুভাপ্রসন্নের তুলনায় অপেক্ষাকৃত তরুণ। তা ছাড়া, তিনি রাজ্যের মুখ্যসচিব পদে দক্ষতার সঙ্গে কাজ করেছেন। সরকারি পদ থেকে অবসর নেওয়ার পরেও তাঁর প্রশাসনিক দক্ষতার কারণে আলাপনকে মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা করা হয়েছে। আপাতত সেই তিনি পদেই বৃত। তার সঙ্গেই এ বার রাজ্য হেরিটেজ কমিশনের চেয়ারম্যানও করা হল তাঁকে।