গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
শনিবার সকালে হঠাৎই ‘কালীঘাটের কাকু’ ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রকে জেরা করতে প্রেসিডেন্সি জেলে হাজির হলেন সিবিআইয়ের গোয়েন্দারা। তিন দিন আগেই ‘কাকু’র কণ্ঠস্বরের নমুনা সংক্রান্ত রিপোর্ট জমা পড়েছে হাই কোর্টে। সেই রিপোর্ট জমা দিয়ে ইডি এ-ও জানিয়েছে যে, এ ব্যাপারে তাঁদের সন্দেহ মিলে গিয়েছে। যদিও ‘কাকু’কে জেরা করতে সিবিআই গোয়েন্দাদের প্রেসিডেন্সিতে আগমন সেই কারণে নয়।
সম্প্রতিই পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত এক এজেন্ট সন্তু গঙ্গোপাধ্যায়কে নিজাম প্যালেসে ডেকে পাঠিয়ে দীর্ঘ ক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল সিবিআই। সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছিল, এই সন্তু শুধু পার্থ-ঘনিষ্ঠই নয়, তাঁর পরিচিতের তালিকায় রয়েছেন ‘কালীঘাটের কাকু’ থেকে শুরু করে নিয়োগ মামলায় জড়িত অনেকেই। এমনকি, নিয়োগ দুর্নীতির ২৬ কোটি টাকাও পৌঁছেছিল সন্তুর হাতে। বৃহস্পতিবার সেই সূত্রে সন্তুকে জেরা করে সিবিআই। তার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই সিবিআইয়ের একটি দল গেল প্রেসিডেন্সিতেও। সিবিআই সূত্রে খবর, সেখানে ‘কাকু’-সহ মোট তিন জনকে জেরা করবেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা।
কিসের জন্য এই জেরা? সিবিআইয়ের ওই সূত্রে জানা গিয়েছে, সন্তুকে জেরা করে সিবিআইয়ের হাতে কিছু নতুন তথ্য পৌঁছেছে। সেই সমস্ত তথ্য সম্পর্কে আরও বিশদে জানতেই প্রেসিডেন্সি জেলে এসেছেন সিবিআই গোয়েন্দারা। যেখানে প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতিতে যুক্ত অনেকেই বন্দি রয়েছেন।
সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘কালীঘাটের কাকু’ ছাড়াও প্রেসিডেন্সিতে জেরা করা হবে নিয়োগ মামলায় গ্রেফতার হুগলির ব্যবসায়ী অয়ন শীল এবং হুগলির বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এই তিন জনকেই জিজ্ঞাসাবাদের আলিপুর আদালতে আবেদন করেছিল সিবিআই। সেই আবেদন মঞ্জুর হয়েছে। তার পরেই শনিবার দুপুর পৌনে ১২টা নাগাদ প্রেসিডেন্সি জেলে পৌঁছে যান সিবিআইয়ের দল।
প্রসঙ্গত, সন্তুর বাড়ি পার্থের এলাকা বেহালাতেই। ইডি জেনেছিল, এই সন্তুকে ২৬ কোটি টাকা দিয়েছিলেন অয়ন। অয়ন নিজেই সে কথা জানিয়েছিলেন জেরায়। একই সঙ্গে তাঁর দাবি ছিল, প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেফতার কুন্তল ঘোষের কথাতেই ওই টাকা সন্তুকে দিয়েছিলেন তিনি। সিবিআই এখন খতিয়ে দেখতে চাইছে, সন্তুর থেকে পাওয়া তথ্যের প্রেক্ষিতে অয়ন এবং ‘কাকু’র কী বলার আছে। তাঁদের নতুন করে জেরা করে নিয়োগ মামলার আরও গভীরে পৌঁছনো যায় কি না।