Rupanjana Mitra

দেবলীনা, ইসলাম ধর্মের মানুষকে বিয়ে করলেও নাম-পদবি বদলাইনি: রূপাঞ্জনা মিত্র

বিতণ্ডাকে আবার একধাপ টেনে নিয়ে গেলেন রূপাঞ্জনা। দেবলীনার অভিযোগের উত্তর ফিরিয়ে দিলেন তিনি।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০২১ ১৮:৫৮
রুপাঞ্জনা মিত্র এবং দেবলীনা দত্ত।

রুপাঞ্জনা মিত্র এবং দেবলীনা দত্ত।

আঁচ বাড়ছে টলিউডে। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চড়ছে দেবলীনা দত্ত-রূপাঞ্জনা মিত্রের তরজার পারদ।

আনন্দবাজার ডিজিটালে দেবলীনা এবং সায়নী ঘোষের সমর্থনে প্রথম মুখ খুললেও রূপাঞ্জনা জানিয়েছিলেন অষ্টমীর দিন তিনি গোমাংস রান্না করার কথা ভাববেন না। রূপাঞ্জনার লেখার সূত্রে আনন্দবাজার ডিজিটালেই পাল্টা কয়েকটি প্রশ্ন করেছিলেন দেবলীনা। তার সঙ্গেই বিজেপি-র সদস্য রূপাঞ্জনাকে ‘ভীতু’ তকমা দিয়েছিলেন তিনি। দেবলীনা লিখেছিলেন, ইসলাম ধর্মের একজনকে বিয়ে করে নিজের নাম পরিবর্তন করে ফেলা রূপাঞ্জনা ধর্মনিরপেক্ষদের মানুষ না মনে করলে তাঁকে ‘ভীতু’ বলা ছাড়া আর কোনও উপায় থাকবে না তাঁর।

সেই বিতণ্ডাকে আবার একধাপ টেনে নিয়ে গেলেন রূপাঞ্জনা। দেবলীনার অভিযোগের উত্তর ফিরিয়ে দিলেন তিনি। শুক্রবার মধ্যরাত্রে ফেসবুকে একটি দীর্ঘ পোস্ট লেখেন অভিনেত্রী। যে জায়গাগুলি বোঝাতে ‘ফাঁক’ রয়ে গিয়েছিল, কার্যত সেগুলোই আরও স্পষ্ট করে বুঝিয়ে। যেখানে রূপাঞ্জনা লিখেছেন, ধর্মনিরপেক্ষ বা ‘সেক্যুলার’দের নিয়ে পোস্টটি তিনি মূলত অভিনেত্রী সায়নী ঘোষের শিবলিঙ্গে গর্ভনিরোধক পরিয়ে ছবি দিয়ে নিজের ধর্মকে ছোট করার বিরুদ্ধে করেছিলেন। পাশাপাশি, দেবলীনার ‘ভুল’ শুধরে দিয়ে জানিয়েছেন, তিনি কখনওই নিজের নাম-পদবি পরিবর্তন করেননি এবং সব ধর্মের প্রতি তাঁর সমান শ্রদ্ধা।

Advertisement

দেবলীনার দাবি ছিল, নিকট অতীতে রূপাঞ্জনা একটি সমাজমাধ্যমে ধর্ষণের হুমকিকে তোয়াক্কা না করার উপদেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু রূপাঞ্জনাকে কেউ এমন ধরনের হুমকি দিলে বা তাঁর মা’কে টেনে কথা বললে তিনিও কি ভয় পেতেন না?

উত্তরে রূপাঞ্জনা লিখেছেন, দেবলীনা বা সায়নীর মতো অগুন্তি হুমকি পেয়েছেন তিনিও। চুপ করে না থেকে তার প্রতিবাদও করেছেন। পাশাপাশিই অভিযোগের সুরে লিখেছেন, একাধিক ‘সহকর্মী-বন্ধু’ সমাজমাধ্যমে কুকথা লিখেছেন তাঁকে নিয়ে। এ সব সহ্য করতে করতেই এখন তিনি ‘ইমিউন্‌ড’। অর্থাৎ, এ সব আর তাঁকে প্রভাবিত করে না। কোনও ব্যক্তিগত আক্রমণই আর নতুন করে দাগ কাটে না তাঁর মনে।

ওই একই পোস্টে ধর্মতলার প্রতিবাদ সভায় না যাওয়ার কারণও জানিয়েছেন রূপাঞ্জনা। বলেছেন, কোনও ‘দল’-এর আয়োজিত সভায় অন্যায়ের বিরুদ্ধে গলা তুলতে নারাজ তিনি। লিখেছেন, যে নেতা বা নেতারা শিল্পীদের অপমান করেছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে তিনি কথা বলেছেন। আবারও বলতেন, যদি আর্টিস্ট ফোরামের মতো কোনও ‘অরাজনৈতিক’ মঞ্চে গিয়ে দাঁড়ানোর আহ্বান পেতেন। রূপাঞ্জনার বক্তব্য, প্রতিবাদ সভায় ‘জয় বাংলা’ স্লোগানই নাকি স্পষ্ট করে দিয়েছে বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি এখন ‘একজনের হাতের পুতুল।’ তাই সেখানে নিজেকে সামিল করতে কুণ্ঠাবোধ হয়েছিল তাঁর।

সব রাজনৈতিক-ধর্মীয় মতপার্থক্যের ঊর্ধ্বে পারস্পরিক বোঝাপড়ার অভাবকেই এই বিতণ্ডার মূল কারণ হিসেবে দেখিয়েছেন রূপাঞ্জনা। তাঁর কথায়, তিনি ‘ভীতু কি সাহসী’ সেটা সকলের জানা। তবু নিজের নামের পাশে দেবলীনার তকমা দেওয়া ‘ভীতু’ শব্দটি সরিয়ে ইন্ডাস্ট্রির শিল্পীদের সময়মতো পারিশ্রমিক পাওয়ানোর লড়াইয়ে নিজের ভূমিকার কথা আবার মনে করিয়ে দিয়েছেন। পরিশেষে দেবলীনাকে শুভকামনা জানিয়ে এই ‘কাদা ছোড়াছুড়ি’র প্রতিযোগিতায় ইতি টেনেছেন রূপাঞ্জনা। দেবলীনার স্বামী তথাগত মুখোপাধ্যায়কেও অভিনন্দন জানিয়েছেন অভিনেত্রী স্ত্রী-র পাশে থাকার জন্য।

আরও পড়ুন
Advertisement