অভিনেতা হিরণ চট্টোপাধ্যায়
বুধবার গিয়েছিলেন যশ দাশগুপ্ত। বৃহস্পতিবার চললেন হিরণ চট্টোপাধ্যায়। তবে যশের রাজনীতিতে এই হাতেখড়ি। আর হিরণের রাজনীতির অভিজ্ঞতা আছে গত বেশ কয়েকবছরের। বস্তুত, টলিউডের এই অভিনেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূল যুব কংগ্রেসের পদাধিকারীও ছিলেন বটে। সেদিক দিয়ে দেখতে গেলে যশের চেযে যশ খানিকটা কম হলেও রাজনীতির ভারে হিরণ খানিকটা এগিয়েই। বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার আগে আনন্দবাজার ডিজিটালকে হিরণ বলেছেন, ‘‘আমার একটাই লক্ষ্য। বাংলা থেকে যে ভাবে হোক, অলক্ষ্ণীকে দূর করতে হবে। অলক্ষ্মী দূর না করলে আমাদের এই পশ্চিমবাংলায় লক্ষ্মী কখনও আসবে না। আর লক্ষ্মী না এলে বাংলায় কোনও আর্থ-সামাজিক বা বা পরিকাঠামো উন্নয়ন হবে না। শুধুমাত্র ভোটের আগে মানুষকে পাঁচ টাকায় ডিম-ভাত খাইয়ে আর বোকা বানানো যাবে না।’’
গত কয়েকদিন ধরেই টলিউডের বিভিন্ন ক্ষেত্রের শিল্পী এবং কলাকুশলীদের মধ্যে বিজেপি-তে যোগদানের হিড়িক পড়েছে। তবে তাঁরা কেউই সে ভাবে ‘স্টার’ বা ‘সুপারস্টার’ নন। তবু তাঁদের ঘিরে একটা কৌতূহল তৈরি হয়েছে বৈকি। আআমজনতা তাকিয়ে আছে, এর পর আরও কারা বিজেপি-তে যোগ দেন। বুধবার যেমন যশ দাশগুপ্ত ছাড়াও পরিচিতদের মধ্যে পাপিয়া অধিকারী এবং সৌমিলি বিশ্বাস বিজেপি-তে যোগ দিয়েছেন। তাঁদের সঙ্গেই যোগ দিয়েছেন আরও বেশ কয়েকজন কলাকুশলী। প্রথমে শোনা গিয়েছিল, হিরণও বুধবারেই বিজেপি-তে যোগ দেবেন। কিন্তু শেষপর্যন্ত তিনি তা করেননি। সম্ভবত যশের সঙ্গে মঞ্চ এবং আলো ভাগ করতে চান না বলে। তা ছাড়া, রাজনীতির বৃত্তে গত বেশ কয়েক বছর ধরে থাকায় অমিতের সভায় যোগদানের আলাদা মাহাত্ম্য সম্পর্কেও হিরণ সম্যক ওয়াকিবহাল।
প্রসঙ্গত, হিরণের সঙ্গে গত বেশ কিছুদিন ধরেই যোগাযোগ রেখে চলেছিল বিজেপি। কারণ, হিরণ যুব তৃণমূলে ‘বিক্ষুব্ধ’ ছিলেন। তাঁর সঙ্গে তাঁর সংগঠনের নেতা অভিষেক যে সেভাবে যোগাযোগ রাখেন না, তা ঘনিষ্ঠমহলে বারবারই বলেছেন টলিউডের এই অভিনেতা। তাঁর এক ঘনিষ্ঠের দাবি, ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটেও হিরণ তৃণমূলের বিভিন্ন প্রার্থীর হয়ে প্রচার করেছেন। নিজের গাড়ি নিয়ে। নিজের খরচে। কিন্তু জিতে যাওয়ার পর দলের শীর্ষনেতৃত্ব তো দূরস্থান, সংশ্লিষ্ট প্রার্থীরাও হিরণকে একবার যোগাযোগ করে ধন্যবাদ জানানি। এতে ভিতরে ভিতরে ক্ষোভ জমেছিল অভিনেতার। ঘনিষ্ঠমহলে হিরণ বলেওছেন, সাম্প্রতিক অতীতে তো নয়ই, তাঁর সঙ্গে অভিষেকের দীরপ্ঘদিন ধরে কোনও যোগাযোগই নেই! তিনি নাকি দলীয় নেতৃত্বকে দীর্ঘদিন আগে টেক্সট করে সে কথা জানিয়েওছিলেন। কিন্তু তারও কোনও জবাব আসেনি। এর মধ্যেই হিরণের সঙ্গে যোগাযোগ করতে শুরু করে বিজেপি। ঠিক যেভাবে টলিউডের বিভিন্ন ‘ক্ষুন্ন এবং বিক্ষুব্ধ’ শিল্পী ও কলাকুশলীর সঙ্গে তারা যোগাযোগ স্থাপন করেতে শুরু করেছিল। সে ভাবেই হিরণের সঙ্গে যোগাযোগ করে তারা। বহু আলাপ-আলোচনার পর হিরণও রাজি হয়ে যান। শেষপর্যন্ত বৃহস্পতিবার অমিতের সভায় তাঁর যোগদান স্থির হয়েছে।