Attack on Police

কোর্টেই বন্দুক পান আসামি, পরে ছক কষে পুলিশকে গুলি! গোয়ালপোখরকাণ্ডে দাবি উত্তরবঙ্গ পুলিশের

কিন্তু আদালতে পুলিশি ঘেরাটোপের মধ্যেই কী ভাবে বন্দুকের হাতবদল হল? অন্য এক জন সাজ্জাদের হাতে বন্দুক ধরিয়ে দিলেন, আর তা কেন কারও নজরে এল না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২৫ ১৫:০৪

—প্রতীকী চিত্র।

বন্দুক কেড়ে পুলিশের উপর গুলি চালানো হয়নি। ওই আগ্নেয়াস্ত্র পুলিশের ছিল না। আসামি বন্দুক পেয়েছিলেন আদালত চত্বর থেকে। অন্য এক ব্যক্তি তাঁকে ওই বন্দুক দিয়েছিলেন। উত্তর দিনাজপুরের গোয়ালপোখরে পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় এমনটাই দাবি করল উত্তরবঙ্গ পুলিশ।

Advertisement

বুধবার বিকেলে গোয়ালপোখর থানার ইকরচালা কালীবাড়ির অদূরে, ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর ঘটনাটি ঘটেছিল। খুনের মামলায় বিচারাধীন বন্দি সাজ্জাদ আলম নামে এক ব্যক্তিকে আদালত থেকে জেলে নিয়ে যাচ্ছিল পুলিশ। সেই সময় প্রস্রাব করার কথা বলে প্রিজ়ন ভ্যান থেকে নেমে পাহারায় থাকা দুই পুলিশকর্মীর উপর হামলা চালান সাজ্জাদ। পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে সেখান থেকে পালিয়েও গিয়েছিলেন তিনি। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হয়েছিল, সাজ্জাদ হয়তো পুলিশের বন্দুক কেড়ে নিয়ে তাঁদের উপর হামলা চালিয়েছেন। কিন্তু বৃহস্পতিবার আইজি উত্তরবঙ্গ রাজেশকুমার যাদব জানান, আসামিকে বন্দুক দিয়েছিলেন আব্দুল হোসেন নামে এক ব্যক্তি।

কিন্তু আদালতে পুলিশি ঘেরাটোপের মধ্যেই কী ভাবে বন্দুকের হাতবদল হল? অন্য এক জন সাজ্জাদের হাতে বন্দুক ধরিয়ে দিলেন, আর তা কেন কারও নজরে এল না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আইজি উত্তরবঙ্গ জানিয়েছেন, বিষয়টি তাঁরা তদন্ত করে দেখছেন। তিনি বলেন, ‘‘যে অস্ত্র দিয়ে দুই পুলিশকর্মীর উপর হামলা চালানো হয়েছে, তা কোনও পুলিশকর্মীর আগ্নেয়াস্ত্র নয়। তবে সব দিক গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।’’

গুলিবিদ্ধ দুই পুলিশকর্মীকে হাসপাতালে নিয়ে আসার সময়।

গুলিবিদ্ধ দুই পুলিশকর্মীকে হাসপাতালে নিয়ে আসার সময়। —নিজস্ব চিত্র।

পুলিশ সূত্রে খবর, বুধবার গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব-ইনস্পেক্টর নীলকান্ত সরকার এবং কনস্টেবল দেবেন বৈশ্য। নীলকান্তের ডান বগলের কিছুটা নীচে এবং দেবেনের পেটের ডান দিকে উপরে এবং বাঁ দিকে পেটের কাছে গুলি লেগেছে। তাঁরা বর্তমানে মাটিগাড়ার একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন। তাঁদের স্বাস্থ্যের খবর নিতে বৃহস্পতিবার সেখানে গিয়েছেন রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার, এডিজি জাভেদ শামিম এবং আইজি উত্তরবঙ্গ।

তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, পুলিশের উপর হামলার পর একটি মোটরবাইকের পিছনে বসে পালিয়েছিলেন সাজ্জাদ। বুধবার সন্ধ্যায় ইসলামপুর ও গোয়ালপোখরের বিভিন্ন এলাকার বাংলা-বিহার সীমানা ‘সিল’ করা হয়েছিল। চলেছে নাকা-তল্লাশি। পুলিশের একাংশের সন্দেহ, সাজ্জাদ ঘটনাস্থলের অদূরে থাকা রেললাইন পেরিয়ে বিহারে গিয়েছেন। বিহার পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তাঁর খোঁজ মেলেনি বলেই খবর পুলিশ সূত্রে। তবে একটি সিসিটিভি ফুটেজ পুলিশের হাতে এসেছে। তাতে সাজ্জাদকে রাস্তা দিয়ে ছুটে যেতে দেখা গিয়েছে। আপাতত সেই ফুটেজের সূত্র ধরেই তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে খবর। প্রকাশ্যে আসা সেই ফুটেজের সত্যতা আনন্দবাজার অনলাইন যাচাই করেনি।

Advertisement
আরও পড়ুন