ঝাড়গ্রামে উদ্ধার হওয়া বস্তুটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বোমাই, জানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।
ঝাড়গ্রামে উদ্ধার হওয়া দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার বোমা সফল ভাবে নিষ্ক্রিয় করা গিয়েছে। শুক্রবার নিজের এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে এ কথা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
গত শনিবার ঝাড়গ্রামের গোপীবল্লভপুর থানার ভুলনপুর গ্রামে মাটি খুঁড়তে গিয়ে বেলনাকৃতির একটি বস্তু উদ্ধার হয়েছিল। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন প্রশাসনিক আধিকারিকেরা। ঘিরে ফেলা হয়েছিল ওই এলাকা। খবর পেয়ে আসে বম্ব স্কোয়াডও। প্রায় এক দশক আগেও এই ভুলনপুরেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ের একটি বোমা পাওয়া গিয়েছিল। তা থেকেই প্রশাসনিক আধিকারিক ও স্থানীয় বাসিন্দারা অনুমান করেছিলেন, সদ্য উদ্ধার হওয়া বস্তুটিও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বোমা বা বোমার শেল হতে পারে। এর পর শুক্রবার মুখমন্ত্রীই জানালেন, উদ্ধার হওয়া বোমাটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার ছিল। তবে উদ্ধার হওয়ার সময় সেটি সক্রিয় ছিল না। রাজ্য প্রশাসন ও বায়ুসেনা যৌথ ভাবে বোমাটি নিষ্ক্রিয় করেছে। তার আগে গ্রামবাসীদের নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
Yesterday it came to our notice that an undetonated bomb of World War II was found in an open field in village Bhulanpur, Gopiballavpur in Jhargram district.
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) July 5, 2024
State government machinery including police and also airforce immediately swung into action. Public from nearby area… pic.twitter.com/Cva66ydlMQ
প্রশাসনিক সূত্রে খবর, বোমাটি নিষ্ক্রিয় করার সময় জমিতে দু’ফুট গর্ত তৈরি হয়েছিল। গোপীবল্লভপুরের এসডিপিও পারভেজ সরফরাজ বলেন, ‘‘বস্তুটি উদ্ধারের পর থেকেই ঘিরে রাখা হয়েছিল ছিল। প্রোটোকল মেনে দূরত্ব বজায় রেখে নদীর ধারে একটি জমিতে নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে। তার নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে গিয়েছে বায়ুসেনা।’’ প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে নেতাজি সুভাষ ডকে রুটিনমাফিক খননকার্য চালানোর সময় উদ্ধার হয়েছিল এক হাজার পাউন্ড ওজনের একটি বোমা। যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সময়কালের বলে মনে করা হয়েছিল। কারণ, হুগলি নদীর পূর্ব পারে অবস্থিত এই নেতাজি সুভাষ ডকটি ব্যবহৃত হয়েছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়। আমেরিকার নৌসেনা সে সময় এই ডকটি ব্যবহার করেছিল।
ঘটনাচক্রে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এক বার ঝাড়গ্রামে এসেছিলেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু। ১৯৪০ সালের ১২ মে সকালে মেদিনীপুর থেকে ধেড়ুয়া হয়ে মোটরগাড়িতে নাড়াজোলের কুমার দেবেন্দ্রলাল খানের সঙ্গে ঝাড়গ্রামে এসেছিলেন তিনি। ওই সময়ের আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায়, সে দিন ঝাড়গ্রামে ব্যবসায়ী নলিনবিহারী মল্লিকের বাড়িতে আতিথ্য গ্রহণ করে একটি টালির বাড়িতে বিশ্রাম নেন সুভাষচন্দ্র। বাড়িটি এখন শহরের বাছুরডোবা পেট্রল পাম্পের অফিস। দুপুরে বার-লাইব্রেরিতে আইনজীবীদের সঙ্গেও দেখা করেন তিনি। পুরনো সেই বার ভবনটি সংস্কার হয়ে এখন ‘প্লিডার্স বার অ্যাসোসিয়েশন, ঝাড়গ্রাম’-এর ভবন। ওই দিন বিকেলে ঝাড়গ্রাম শহরের লালগড় মাঠে জনসভাও করেছিলেন সুভাষচন্দ্র। তবে সেই মাঠের অবশ্য এখন অস্তিত্ব নেই। এলাকাটি দুর্গা ময়দান নামে পরিচিত। ঝাড়গ্রামে সভা সেরে সুভাষচন্দ্র সে দিনই ট্রেনে কলকাতায় ফিরে গিয়েছিলেন বলে শোনা যায়।