Justice Abhijit Gangopadhyay

‘ঢাকিসমেত বিসর্জন দেব’! টেটের এই মামলাতেই পাঁচ মাস আগে মন্তব্য করেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়

নিয়োগ না পাওয়া অপ্রশিক্ষিত ১৪০ জনের মামলা শুনতে বসেছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। আদালতে সওয়াল করা হয় কম নম্বর পেয়েও অনেক অপ্রশিক্ষিত প্রার্থী চাকরির সুপারিশপত্র পেয়েছেন।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ মে ২০২৩ ১৯:২২
২০১৬ সালের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ার প্যানেল বাতিলের হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।

২০১৬ সালের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ার প্যানেল বাতিলের হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

হুঁশিয়ারিটা দিয়েছিলেন মাস পাঁচেক আগেই। শুক্রবারের রায়ে তারই প্রতিফলন। প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে অস্বচ্ছতার অভিযোগ সংক্রান্ত মামলার শুনানি গত ৬ ডিসেম্বর বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের মন্তব্য ছিল, ‘‘ঢাকিসমেত বিসর্জন দিয়ে দেব।’’ আর ১২ মে, শুক্রবার সেই টেট মামলাতেই ৩৬ হাজার অপ্রশিক্ষিত শিক্ষকের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।

নিয়োগ না পেয়ে অপ্রশিক্ষিত ১৪০ জনের মামলা শুনতে বসেছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। সেখানে মামলাকারীদের তরফে আদালতে সওয়াল করা হয় কম নম্বর পেয়েও অনেক অপ্রশিক্ষিত প্রার্থী চাকরির সুপারিশপত্র পেয়েছেন। আদালতের নির্দেশে যে নম্বর বিভাজনের তালিকা প্রকাশিত হয়েছে, সেখান থেকেই তা স্পষ্ট। এর পরই ২০১৬ সালের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ার পুরো প্যানেল বাতিলের হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। এমনকি প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতি সভাপতিকে নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন তিনি। কটাক্ষের সুরে বলেছিলেন, ‘‘মানিক ভট্টাচার্য পর্যন্ত পৌঁছনোর ক্ষমতা নেই বলে কি চাকরি পাননি মামলাকারীরা?’’ শুক্রবার বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় সত্যিই তা করলেন। ২০১৬ সালের প্যানেল প্রকাশ করার সময় যে ৩৬ হাজার জন অপ্রশিক্ষিত ছিলেন, তাদের সকলেরই চাকরি বাতিল হল তাঁর নির্দেশে।

Advertisement

শুক্রবার কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতির রায়, চাকরি বাতিল হলেও আগামী ৪ মাস তাঁরা স্কুলে যেতে পারবেন ওই শিক্ষকেরা। বেতন পাবেন প্যারা টিচার হিসাবে। পাশাপাশি রাজ্যকে আগামী ৩ মাসের মধ্যে নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করে শেষ করতে হবে। বিচারপতি আরও জানান, যাঁদের চাকরি বাতিল হয়েছে, তাঁরা ইতিমধ্যে প্রশিক্ষণ নিয়ে থাকলে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় তাঁরাও অংশ নিতে পারবেন।

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে প্রাথমিক টেট পরীক্ষা নেয় পর্ষদ। ওই চাকরিপ্রার্থীদের ইন্টারভিউ এবং অ্যাপটিটিউড টেস্ট হয় ২০১৬ সালে। ওই বছরই প্যানেল প্রকাশিত হয়। তাতে মোট ৪২ হাজার ৫০০ জনের চাকরি হয়। কিন্তু প্রশিক্ষণপ্রাপ্তরা চাকরিতে অগ্রাধিকার পাবেন বলা হলেও দেখা যায় চাকরিপ্রাপকদের মধ্যে মাত্র সাড়ে ৬ হাজার ছিলেন ডিএলএড প্রশিক্ষিত। পর্ষদ ওই অপ্রশিক্ষিত চাকরিপ্রার্থীদের চাকরি পাওয়ার ২ বছরের মধ্যে প্রশিক্ষণ নেওয়ার নির্দেশ দেয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement