Ghoramara

Ghoramara: ঘোড়ামারার ভাঙনে ঘর-হারা পরিবারগুলিকে পুনর্বাসন দিল জেলা প্রশাসন

প্রতিটি পরিবারের জন্য বরাদ্দ থাকবে ২০ শতক (ডেসিমল) করে জায়গা। আবাসন ও ভূমি রাজস্ব দফতরের সহযোগিতায় সেখানে তৈরি হবে বাড়ি।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
সাগর শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১৭:৫৯
ঘোড়ামারার গৃহহীন পরিবারগুলিতে দেওয়া হচ্ছে পাট্টা।

ঘোড়ামারার গৃহহীন পরিবারগুলিতে দেওয়া হচ্ছে পাট্টা। নিজস্ব চিত্র।

একের পর এক প্রাকৃতিক বিপর্যয় এবং লাগাতার ভাঙনের জেরে ক্রমশ ছোট হয়ে আসছে সাগরের ঘোড়ামারা দ্বীপ। মুড়িগঙ্গার করাল গ্রাসে ভিটেমাটি হারিয়েছেন বহু মানুষ। ইতিমধ্যেই নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গিয়েছে এই দ্বীপের বেশ কয়েকটি গ্রাম। তার উপর সাম্প্রতিক সময়ে বুলবুল আমপান, ইয়াস এবং একের পর এক কোটালের জলস্ফীতির জেরে গোটা দ্বীপই বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছিল। এই পরিস্থিতিতে ঘোড়ামারার বাস্তুহারা ৩০টি পরিবারের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করল রাজ্য সরকার। শনিবার সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক পি উলগানাথনের উপস্থিতিতে তাঁদের হাতে পাট্টা তুলে দেওয়া হয়। উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলাশাসক নীতিশ ঢালী এবং কাকদ্বীপের মহকুমাশাসক অরণ্য বন্দ্যোপাধ্যায়।

গত কয়েক বছর ধরে ঘোড়ামারা দ্বীপের খাসিমারা, হাটখোলা এবং চুনপুরি এলাকায় নতুন করে ভাঙন শুরু হয়। ইতিমধ্যেই তলিয়ে গিয়েছে এই এলাকাগুলির বিস্তীর্ণ অংশ। ঘরবাড়ি হারিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা রাস্তার ধারেই ত্রিপলের নিচে কোনওমতে রাত কাটাতেন। তবে ইয়াসের মত প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সময় ঘোড়ামারা থেকে সরিয়ে আনা হয় সাগরদ্বীপের বামনখালির সাইক্লোন সেন্টারে। এ বার মাথার তলায় ছাদ পেতে চলেছেন সেই ভূমিহীন গ্রামবাসীরা।

ঘোড়ামারার ওই ৩০টি পরিবারকে পুনর্বাসন দেওয়া হবে সাগরদ্বীপের ধসপাড়া-সুমতিনগর-২ গ্রামপঞ্চায়েতের হারাধনপুর ও কমলপুর লাগোয়া চেমাগুড়ি নদীর চরে। প্রতিটি পরিবারের জন্য বরাদ্দ থাকবে ২০ শতক (ডেসিমল) করে জায়গা। আবাসন ও ভূমি-রাজস্ব দফতরের সহযোগিতায় সেখানে তৈরি হবে বাড়ি।

Advertisement

সাগরের বিধায়ক তথা মন্ত্রী বঙ্কিম জানান, স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে ১০০ দিনের কাজের মাধ্যমে প্রত্যেক বাড়ির পাশে একটি করে পুকুর কাটা হবে। সেই পুকুরে মাছ চাষ করে স্বনির্ভর হতে পারবেন তাঁরা। পাশাপাশি একটি করে খামারও থাকবে। সেখানে হাঁস, মুরগি, গবাদি পশু পালন করা যাবে। ৩০টি পরিবারের জন্য একটি কমিউনিটি হল তৈরি করা হবে। পাশাপাশি পুর্নবাসনের পর কর্মসংস্থানমূখী প্রকল্পের প্রশিক্ষণ দেওয়াও শুরু হবে। সব ঠিকঠাক থাকলে কয়েক মাসের মধ্যেই বাড়ি তৈরির কাজ শুরু হবে।

জেলাশাসক উলগানাথন বলেন, ‘‘ইয়াসের পর বহু মানুষ বাড়ি হারিয়েছেন। তাঁদের থাকার জায়গা নেই। তাঁদের হাতে পাট্টা তুলে দেওয়া হল।’’ জমির পাট্টা হাতে পাওয়ার পর ঘোড়ামারার খাসিমারা এলাকার বাসিন্দা লায়লা বিবি বলেন, ‘‘ঘরবাড়ি, জমি-জায়গা সবটাই গিলে খেয়েছে নদী। এত দিন অসহায় হয়ে দিন কাটাচ্ছিলাম। এ বার মাথা গোঁজার ঠাঁই পাব। পাট্টা দেওয়ার জন্য সরকারকে ধন্যবাদ।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement