আতঙ্কে ইতি, অবশেষে বাঘ ফিরল জঙ্গলে

নদীর ধারে চাষের জমিতে বাঘের পায়ের ছাপ দেখে ও গর্জন শুনে বেশ কয়েকদিন আতঙ্কে ছিলেন এলাকার বাসিন্দারা। অনেকে বাড়ি থেকে ভয়ে বেরোতে পারেননি।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
পাথরপ্রতিমা শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৯:১৭
বাঘকে জঙ্গলে ফেরালেন বন দফতরের এই কর্মীরা।

বাঘকে জঙ্গলে ফেরালেন বন দফতরের এই কর্মীরা। ছবি: সমরেশ মণ্ডল ।

টানা চার দিন লুকোচুরি! আতঙ্কে ঘুমহীন রাত! এ সবের পরে মঙ্গলবার দুপুরে নিজের ডেরায় ফিরে গেল পাথরপ্রতিমার উপেন্দ্রনগরে লোকালয়ে চলে আসা বাঘটি। বন দফতর জানিয়েছে, বাঘ নিজেই ধনচি জঙ্গলে ফিরে গিয়েছে। আতঙ্কে বড়দিন মাটি হলেও নতুন বছরের আগে স্বস্তি ফিরেছে এলাকায়।

Advertisement

জেলা বন আধিকারিক মিলন মণ্ডল বলেন, ‘‘৫০ জনের একটি দল দু’ভাগে ভাগ হয়ে যখন বাঘ খোঁজার কাজ করছিল, ঠিক তখনই একটি দলের সামনে বাঘটি পড়ে যায়। তখন ওই দলের সদস্যেরা বাঘটিকে জঙ্গলে ফিরিয়ে দেন। লোকালয়ে এখন আর আতঙ্কের কোনও কারণ নেই।’’

নদীর ধারে চাষের জমিতে বাঘের পায়ের ছাপ দেখে ও গর্জন শুনে বেশ কয়েকদিন আতঙ্কে ছিলেন এলাকার বাসিন্দারা। অনেকে বাড়ি থেকে ভয়ে বেরোতে পারেননি। বাঘটিকে ধরার জন্য বন দফতর খাঁচা পাতলেও ধরা দেয়নি রয়্যাল বেঙ্গল। উপেন্দ্রনগর গ্রাম লাগোয়া জঙ্গলে ঘনঘন গর্জন শুনে আর ঠাকুরাইন নদীর ধারে, চাষের খেতে বাঘের পায়ের ছাপ দেখে ঘুম উড়েছিল এলাকার বাসিন্দাদের।

সোমবার বিকেলে গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে চলা ঠাকুরাইন নদী লাগোয়া জঙ্গলে দু’টি খাঁচা পেতেছিল বন দফতর। দক্ষিণ ২৪ পরগনার এডিএফও-র নেতৃত্বে এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছিল অভিজ্ঞ বনকর্মীদের। প্রায় ১৮ কিলোমিটার নাইলনের জাল দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে গ্রাম লাগোয়া জঙ্গল। কিন্তু দক্ষিণরায় ফাঁদে পা দেয়নি। মঙ্গলবার সকালে খবর পাওয়া যায় শ্রীধনগর এলাকায় নতুন করে পায়ের ছাপ পাওয়া গিয়েছে। তখন ফের আতঙ্ক ছড়ালেও দুপুরে বাঘ ফিরে যাওয়ার খবর পেয়ে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে।

তবে আপাতত চিন্তা কমলেও গত একমাস ধরে শ্রীধরনগর পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দাদের তাড়া করে বেড়াচ্ছে বাঘের আতঙ্ক। চাষবাস, নদীতে মাছ, কাঁকড়া ধরাও বন্ধ করে দিয়েছেন তাঁরা। টায়ার, মশাল জ্বালিয়ে চলছে রাত পাহারা। স্থানীয় বাসিন্দা মানস গিরি বলেন, ‘‘দুর্গাপুজোর পরেও বাঘের পায়ের ছাপ পাওয়া গিয়েছিল। আমরা কেউ বাঘ চোখে দেখিনি। দেখলে তো বেঁচে থাকতাম না। বন দফতর অনেক চেষ্টার পর বাঘকে জঙ্গলে ফেরাতে পেরেছে। আশা করি এ বার স্বস্তিতে থাকতে পারব।’’

আরও পড়ুন
Advertisement